এখন থেকে গ্রামেই দেখা মিলবে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের। আধিকারিকেরা যাবেন সরকারি পরিষেবার সুবিধা আপনার হাতে তুলে দিতে। মুর্শিদাবাদ জেলার ২৬টি ব্লকেই এই শিবির অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকের গিরিয়া থেকে এই শিবির শুরু হয়েছে। সীমান্ত লাগোয়া এই প্রান্তিক গ্রামে অনুষ্ঠিত শিবিরে বিডিও ছাড়াও হাজির ছিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক নেধারাম মণ্ডলও। বিডিও পার্থপ্রতিম সাধুখাঁ বলেন, “ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে গিরিয়াই পিছিয়ে। এখানে কয়েক হাজার ওবিসি ও তপসিলি জাতিভুক্ত মানুষের বাস। কিন্তু জাতিগত সংশাপত্র চেয়ে মাত্র ৫ জন আবেদন করেছেন। এ দিন তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সংশাপত্র। বাকিদের সংশাপত্রের জন্য আবেদনপত্র দেওয়া হয়েছে। তাঁদের জানানো হয়েছে আবেদনপত্র পূরণের পদ্ধতি। এলাকার মানুষ জানেনই না জাতিগত সংশাপত্রের গুরুত্ব। ডিসেম্বর মাসে আরও একটি শিবির হবে। সেই শিবিরে হাজির কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা। প্রত্যেক পরিবারকে বিনা অর্থে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করে দেওয়া হবে।”
ফরাক্কায় এই শিবির শুরু হয়েছে ২৩ নভেম্বর। মঙ্গলবার ওই ব্লকের বেওয়া-১ পঞ্চায়েতে শিবিরে ৪০ জনকে জাতিগত শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। লালগোলায় এই উদ্যোগ শুরু হয় ১৮ ডিসেম্বর থেকে। লালগোলার বিডিও প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “বিভিন্ন রকম সরকারি ভাতা, ঝণ, বৃত্তি, স্বাস্থ্য বিমা জাতীয় অনেক সরকারি পরিষেবা এখনও গ্রামবাসিদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই অবস্থার বদল চায় প্রশাসন। তাই শিবির করে সরকারি পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।” ফরাক্কার বিডিও সুব্রত চক্রবর্তীর কথায়, “প্রশাসন একটু নড়েচড়ে বসলে কাজ হয় বৈকি। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখি বেশ কিছু প্রতিবন্ধীদের সরঞ্জাম পড়ে রয়েছে। মঙ্গলবারই বেনিয়াগ্রাম পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দিয়েছি তা সারিয়ে গরিব প্রতিবন্ধীদের বিলি করতে। মঙ্গলবার বেওয়া-১ পঞ্চায়েতে ৪০ জনকে দেওয়া হয়েছে জাতিগত সংশাপত্র।” অতিরিক্ত জেলা শাসক নেধারাম মণ্ডল বলেন, “জেলার ২৬টি ব্লকেই শুরু হয়েছে এই উদ্যোগ। প্রশাসন চায় গ্রামবাসীরা অবহিত হোক তাঁদের প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে। বাধ্যর্ক ভাতা কত প্রাপ্য, বৃত্তির টাকা গ্রামে আসছে না কেন? উৎপন্ন ধান কোথাই বিক্রি করতে করা যাবে? এ সবই গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রশাসন জানাচ্ছে।”
প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ দিয়েও জেলা পরিষদের সিপিএমের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ও জেলা কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “সাধু উদ্যোগ। কিন্তু সবটাই আমলাতন্ত্র নির্ভর। নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের অস্বীকার করে এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।” জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আশিস তেওয়ারি বলেন, “প্রশাসন নড়েচড়ে বসলে মানুষের কিছু উপকার তো হবেই। তবে পঞ্চায়েতকে যুক্ত করলে ভাল হত।” |