চন্দননগরের আলো, কলকাতার ব্যান্ড, চোখ ধাঁধানো মণ্ডপ, সঙ্গে সময়োপযোগী থিমের হাত ধরে ক্রমে বদলে যাচ্ছে নবদ্বীপর রাস। |
এক দিনের উৎসব বেড়ে তিন দিনে পৌঁছেছে। কোনওরকমে একটা ঢাউশ প্রতিমা খাড়া করে দিতে পারলেই হল এমন ধারণা থেকে দ্রুত সরে আসছেন উদ্যোক্তারা। নবদ্বীপের উত্তরপ্রান্তে প্রাচীন মায়াপুরের ভারতমাতা বারোয়ারী যেমন নবদ্বীপের হারিয়ে যাওয়া হস্তশিল্প কাঁসা পিতলের বাদ্যযন্ত্র দিয়ে মণ্ডপ নির্মাণ করে তাক লাগিয়েছেন। থিমের রূপকার রাজু সূত্রধর বলেন, “সম্প্রীতির সুর থিম। তাই মণ্ডপ নির্মাণ হয়েছে কাঁসার তৈরি কয়েকশো খোল করতাল, বাঁশি আর একতারা দিয়ে।” |
নবদ্বীপ রয়েল ক্লাবের থিম ‘ধ্বংসের মাঝে সৃষ্টির উল্লাস’। গোটা মণ্ডপ তৈরি হয়েছে পাটের তৈরি নানা সাইজের কয়েক হাজার পুতুল দিয়ে। পুজোর উদ্য্যক্তাদের অন্যতম নিতাই বসাক বলেন, “আমাদের মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে স্থানীয় শিল্পীদের তৈরি পাটের পুতুল ৫ ইঞ্চি থেকে ৫ ফুটের মধ্যে যাদের উচ্চতা। সব মিলিয়ে বাজেট প্রায় চার লাখ টাকা।” কুটিরপাড়া ইয়ং ব্লাড ক্লাবের মণ্ডপ তৈরি করেছেন পঞ্চু দেবনাথ। তিনি বলেন, “৮ কুইন্টাল তোয়ালে দিয়ে তৈরি হয়েছে এই মণ্ডপ। আর তাতে সর্বধর্ম সমন্বয়ের থিম তুলে ধরা হয়েছে এই মণ্ডপে। এ ছাড়া সারদা সংঘ, নিশান ক্লাব, দ্যা নিউ ক্লাব, টাউন ক্লাবের মণ্ডপ আলোক সজ্জা, নজর কাড়ার মতো। স্টেশন রোডের বিবেকানন্দ কলোনির মহিলাবৃন্দ পরিচালিত নটরাজ বন্দনার আলোক সজ্জা এবং দক্ষিণ ভারতীয় মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ দর্শক টানবে। |
শুধু মণ্ডপ-থিম-আলোই নয়, নবদ্বীপের রাসের নতুন বৈশিষ্ট কলকাতার দুর্গাপুজোর ঢঙে উদ্বোধন। মঙ্গলবার প্রায় গোটা দিন ধরে বিভিন্ন মণ্ডপ ও প্রতিমা উদ্বোধনে ব্যস্ত থাকলেন মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা, স্বপন দেবনাথ, সুব্রত সাহা, অভিনত্রী বিধায়ক দেবশ্রী রায়, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের মতো পরিচিত মুখ। এই বছর থেকে নবদ্বীপ পুরসভা ‘রামসৃজন’ নামে পুরস্কার চালু করল। পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “প্রতিমা-মণ্ডপ শুধু নয়, নিয়ম-শৃঙ্খলা- সংযম-পরিবেশ সব মলিয়ে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রথম পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ১২ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ১০ হাজার টাকা।” |