ওয়াংখেড়েতে দ্বিতীয় টেস্ট হারের পরে ভারতে আবার তর্কের ঝড় উঠে গিয়েছে। ভারতের হার ভারতীয় সমর্থকদের হতাশ করলেও এটা কিন্তু সিরিজটাকে বাঁচিয়ে রাখল। ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো এখানকার পরিবেশে খেলাটাকে আস্তে আস্তে রপ্ত করেছে। উপমহাদেশের পিচে টেস্ট ম্যাচে ভারতকে হারিয়েওছে।
ওয়াংখেড়ের হারের পরে সমালোচনা আরও বেড়ে যাওয়ার একটা কারণ, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় আটটা বিশ্রী হার, অস্ট্রেলিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠতে না পারা এবং ইংল্যান্ডে একটাও ওয়ান ডে জিততে না পারা। এর সঙ্গে রয়েছে এশিয়া কাপ আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যর্থতাও।
প্রথম টেস্ট শুরুর অনেক দিন আগেই ভারত পৌঁছে গিয়েছিল কুকরা। মোতেরায় প্রথম ইনিংসের পর থেকে ওদের একদম অন্য রকম লাগছে। ভারতে এর আগেও ভাল খেলেছে ইংল্যান্ড। ২০০৬-এর তিন টেস্টের সিরিজটা ১-১ ড্র করেছিল। ২০০৯-এর চেন্নাইয়ে সহবাগ-সচিনের দুর্দান্ত ইনিংসের ধাক্কায় যে টেস্টটা ওরা হেরেছিল, সেটা কিন্তু ইংল্যান্ডের জেতারই কথা। তাই চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্সে আমি অবাক হইনি। ভারতে সিরিজ জিততে গেলে সফরকারী দলগুলোর হাতে স্পিনার থাকা খুব জরুরি। যে মুহূর্তে সোয়ান আর পানেসরকে নিয়ে ইংল্যান্ড এল, তখনই জানতাম এই সিরিজে খুব কঠিন লড়াই হবে।
প্রথম টেস্টে পানেসরকে না খেলিয়ে ভুল করেছিল ইংল্যান্ড। আর দেখুন, দ্বিতীয় টেস্টে কী অবদানটাই রাখল পানেসর! ভারতীয় স্পিনারদের চেয়ে ইংরেজ স্পিনারদের বলের গতি অনেক বেশি ছিল। ইংল্যান্ডের সিমার সহায়ক পিচে বল করে করে সোয়ান আর পানেসর শিখে গিয়েছে, বেশি কারিকুরি না করে টাইট বল করে গেলেই সাফল্য আসে।
টেস্ট ম্যাচে তিন স্পিনার সামলানোটা যে কত কঠিন, সেটাও বুঝে গেল ভারত। এতে কী হয়, কোনও একজন স্পিনারকে খুব বেশি বল করানো যায় না। মুম্বই টেস্টে যেটা হরভজনের হল। স্পিনারদের কাছে যেটা খুব জরুরি, সেই লম্বা স্পেলই পেল না হরভজন। ভারতের বোলিং আক্রমণে ঠিকঠাক ভারসাম্য আনাটাও খুব জরুরি। আমদাবাদের জয়ে উমেশ যাদবের বড় অবদান ছিল। আর ভারতীয় পেস বিভাগের এখন যা অবস্থা, তাতে দিন্দার মতো পেসারদের বেশি দায়িত্ব দেওয়া দরকার। জাহিরকে যোগ্য সঙ্গত দেওয়ার মতো পেসার তো খুঁজে বের করতে হবে ভারতকে।
মুম্বইয়ে হারের পরেও আমার মনে হয়, এখনই আশঙ্কা করার মতো অবস্থা আসেনি। তৃতীয় টেস্টের দল অপরিবর্তিত রেখে জাতীয় নির্বাচকেরা দেখিয়েছেন, তাঁদের সিদ্ধান্ত যথেষ্ট পরিণত। আমি সব সময় বিশ্বাস করি, যে দলটা নিজেদের কঠিন চাপের মুখে ফেলেছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার কাজটাও তারাই করুক।
বয়কট-হ্যামন্ডের রেকর্ড ছোঁয়ার জন্য কুককে তো প্রশংসা করতেই হবে। এত কম বয়সে ওদের সেঞ্চুরির সংখ্যায় পৌঁছে কুক বুঝিয়ে দিয়েছে ওর ক্ষমতা কতটা। কেপির ইনিংসটার গুরুত্ব আবার শুধু সংখ্যায় আটকে নেই। অক্রিকেটীয় কারণে যদি তুমি দলের বাইরে চলে যাও, তা হলে দলে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে নিজের কর্তৃত্ব দেখানোটা খুব জরুরি। তাতে প্রত্যাবর্তনের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। |