হার নিয়ে ক্ষোভের আগুন বাংলা শিবিরে
ধ্যপ্রদেশের কাছে লজ্জার হারের পর বিতর্কের তীব্র আগুন বাংলা ক্রিকেটে!
নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। দীপ দাশগুপ্ত সাফ জানিয়ে দিলেন, বাংলা জার্সির গর্ব যারা বুঝতে পারবে না, সে সব ক্রিকেটারদের উচিত বাড়ি বসে থাকা!
কোচ ডব্লিউ ভি রামন এতটাই ক্ষুব্ধ যে, ঘনিষ্ঠমহলে বলে বসেছেন, “জুনিয়ররা কি দায়বদ্ধতা শব্দটা শোনেনি? এ ভাবে হেরেও কী ভাবে এত রিল্যাক্সড থাকতে পারে?”
লক্ষ্মীরতন শুক্লর মতো সিনিয়রকে ব্যাটিং অর্ডারে আট নম্বরে পাঠানো নিয়ে অসন্তোষের স্রোত। যা নিয়ে লক্ষ্মীর সঙ্গে কথা বলতে হল বাংলা ম্যানেজারকে। বলতে হল, “ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গিয়েছে। কিছু মনে করিস না।”
এবং সর্বোপরি লজ্জার হারে আবার আলোচনায় ফিরে আসছে সেই ‘ব্রাত্য’ সিনিয়রদের নাম। উঠে আসছেন অরিন্দম দাস। যাঁকে কি না প্রাথমিক দলেও স্থান দেয়নি সিএবি!
পুরো ঘটনাটা কী? মঙ্গলবার ইন্দৌরে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে বাংলাকে জিততে গেলে দ্বিতীয় ইনিংসে তুলতে হত ২৭৭। কিন্তু ঋদ্ধিমান সাহার বাংলা (মনোজ তিওয়ারি এই ম্যাচে খেলেননি) খতম মাত্র ৪৫.৫ ওভারে। ১৩৮ রানে শেষ ঋদ্ধিমান সাহা, অনুষ্টুপ মজুমদার, শুভময় দাসদের নিয়ে তৈরি বাংলার তারকাখচিত ব্যাটিং! আপাতত ৪ ম্যাচে ছ’পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ তালিকায় বাংলা পাঁচ নম্বরে। পরের ম্যাচগুলোতেও যদি এই জিনিস চলে, অবনমনের ভ্রূকুটি উড়িয়ে দেওয়া যাবে কি?
সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া অত্যন্ত বিরক্ত। এ দিন বাংলার বিপর্যয় নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে ডালমিয়া বলে দিলেন, “শুনলাম জঘন্য খেলেছে। কী যে করছে ওরা বুঝতে পারছি না।” বাংলার নির্বাচক প্রধান দীপ আবার ফুঁসছেন। “মধ্যপ্রদেশের কাছেও হারতে হবে? মাথায় আগুন জ্বলছে। পরিষ্কার বলছি, যারা বাংলা জার্সির গর্ব বোঝে না, তারা বাড়ি বসে থাকো। রঞ্জি ট্রফি তোমাদের জন্য নয়।”
যারা বাংলা জার্সির গর্ব বোঝে না, তারা বাড়ি বসে থাকো। রঞ্জি ট্রফি তোমাদের জন্য নয়।
বিপর্যয়ের পরিণামে যদি আগ্নেয়গিরির এমন উৎসমুখ খোলে, তা হলে টিমে পরিবর্তন স্বাভাবিক। মুম্বই ম্যাচের আগে সেটা হচ্ছেও। সবচেয়ে বেশি কথা হচ্ছে বাংলার ওপেনিং জুটির ব্যর্থতা নিয়ে। নির্বাচকদের মনে হচ্ছে, মাঠে বাংলা নামছেই ০-২ হয়ে। মিডল অর্ডারে চাপ তো পড়বেই। গত বছর পর্যন্ত যিনি বাংলার নিয়মিত ওপেনার ছিলেন, সেই অরিন্দম দাসকে এ বার বাদ দিয়েছে সিএবি। কিন্তু মঙ্গলবারই স্থানীয় ক্রিকেটে অরিন্দম সেঞ্চুরি করে বসায় নতুন প্রশ্ন, এ বার কেন ভাবা হবে না তাঁকে? এক নির্বাচক তো বলেও দিলেন, “জুনিয়ররা ৩০ পেরিয়েছে কেউ? অরিন্দম যখন রান পাচ্ছে কেন ভাবব না ওকে?”
ও দিকে, ইন্দৌরেও ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাংলা ড্রেসিংরুমে। অভাবনীয় হারের পর ড্রেসিংরুমে বাংলা কোচ তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন জুনিয়রদের। ফোনে ধরা হলে রামন বললেন, “আজ আমি কথা বলার অবস্থায় নেই।” কিন্তু পরে টিম ম্যানেজারের সঙ্গে পর্যালোচনায় বসে বলেছেন, এত জঘন্য মানসিকতা যে তাঁর টিম দেখাতে পারে, ভাবতে পারেননি। ভাল খেলার ন্যূনতম চেষ্টাও থাকবে না? তবে রামনের স্ট্র্যাটেজিও তো রোষের মুখে। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন যিনি, সেই লক্ষ্মী কোন যুক্তিতে যাবেন আট নম্বরে? বাংলা ম্যানেজার সমীর দাশগুপ্ত ফোনে বলছিলেন, “ভুল হয়েছে। পরের ম্যাচ থেকে লক্ষ্মীকে উপরে পাঠাব।”
পরের ম্যাচ মানে, মুম্বই। তাদেরই মহল্লায়। কিন্তু তার আগে টিমের মনোভাবের যা অবস্থা, তাতে সিএবি কর্তাদের রাতের ঘুম উড়তে পারে। এক সিনিয়র ক্রিকেটার তো রাতে বলেই দিলেন, “যা দেখছি, এর পর পুরোপুরি প্রফেশনাল ক্রিকেটার হয়ে যাব। এই বাংলার হয়ে খেলে আর লাভ কী?”

সংক্ষিপ্ত স্কোর
মধ্যপ্রদেশ
৩৪২ ও ২৩৩।
বাংলা ২৯৯ ও ১৩৮ (ঋদ্ধি ২৯, পার্থসারথি ১৯, অনুষ্টুপ ১০, শুভময় ৯, লক্ষ্মী ২, পাণ্ডে ৫-৫৮)




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.