সচিন-নির্বাচকে কথা হল শেষ পর্যন্ত
চিন তেন্ডুলকরের তেইশ বছরের আন্তর্জাতিক জীবনে এই প্রথম তাঁর জাতীয় নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন পড়ল। যাঁরা তাঁর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখলেন। অবশ্য রাখলেওপরিস্থিতিটা যে সচিনের পক্ষে দারুণ সম্মানজনক হল তা নয়।
মঙ্গলবার মুম্বইয়ে সচিনের কথা হয় নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান সন্দীপ পাটিলের সঙ্গে। গত কয়েকদিন ধরেই ধুয়ো উঠছিল সচিন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলুন নির্বাচকদের সঙ্গে। সুনীল গাওস্কর প্রথমে কথাটা বলেন। তারপর তার সঙ্গে একই বক্তব্য জুড়ে দেন কপিল দেব। ভারতীয় ক্রিকেটের দুই মহানায়ক যে তেন্ডুলকর সম্পর্কে এমন একটা স্পর্শকাতর ইস্যুতে একমত হয়ে যাবেন, কেউ ভাবতেই পারেননি। সচিন ভক্তেরা এমন দিনও আশা করেননি যে তাঁদের ঈশ্বরের নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলার দরকার পড়বে।
ভারতীয় বোর্ড গতকালই বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, সচিনের ওপর তাদের পূর্ণ আস্থা আছে। এর পর বোঝাই গিয়েছিল নির্বাচকেরা স্বাধীন ভাবে কোনও বিরূপ সিদ্ধান্ত নেবেন না। তবু জনমতের এমন বিশাল চাপ ছিল যে দু’পক্ষে একটা যোগাযোগ অনিবার্য হয়ে পড়ে। সচিন নিজে থেকেই নির্বাচকদের বলেন, তাঁদের তাঁকে নিয়ে কোনও রূপরেখা থাকলে সেটা তিনি শুনতে প্রস্তুত। সন্দীপ পাটিলের নেতৃত্বাধীন কমিটি তখন তাঁকে বলে, জোর করে কোনও সিদ্ধান্ত তাঁরা সচিনের ঘাড়ে চাপাবেন না। সচিনের ওপর তাঁদের সম্পূর্ণ আস্থা আছে। গ্রেগ চ্যাপেলের আমলে প্রচুর অসহনীয় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন তেন্ডুলকর। কিন্তু এ রকম অবস্থা কখনও তৈরি হয়নি যেখানে তাঁকে নির্বাচকদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। অবশ্য সেটা ছিল ২০০৭। এটা ২০১২।

কপিলও চেয়েছিলেন, কথা বলুন সচিন
সুনীল গাওস্করের সঙ্গে একমত ছিলেন কপিলদেব, সচিনের সঙ্গে এ বার কথা বলা উচিত নির্বাচকদের। শুধু সচিন কেন, কপিল প্রশ্ন তুললেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে নিয়েও। তাঁর মতে, প্রথম এগারোয় ধোনির জায়গা হয় কি না, সেটাই প্রশ্ন, তার পর তো নেতৃত্ব।
৩৯ বছর বয়সি সচিন তেন্ডুলকর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজের পর চলতি ইংল্যান্ড সিরিজেও এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হওয়ায় ফের মুখ খুলছেন প্রাক্তনরা। এ দিন কপিলও বললেন, “হয় নির্বাচকরা সচিনের সঙ্গে বসুক, নয় তো সচিনই নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলুক। সমস্যাটা হল, সচিন এই ব্যাপারে কোনও কথা বলছে না, আর নির্বাচকরা এই প্রসঙ্গে একেবারে চুপচাপ। এর ফলে ভুল বোঝাবুঝিটা আরও বাড়ছে। বিশেষ করে যখনই সচিন খারাপ খেলছে, তখনই লোকে নানা রকম বলতে শুরু করছে। নির্বাচকরা এখনই ওর সঙ্গে কথা বলুক। না হলে ওর মতো এক জন মহানায়কের দিকে আঙুল ওঠাটা ঠিক নয়।” কপিল এ সব বলার সময় অবশ্য জানেননি নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান সন্দীপ পাতিলের সঙ্গে ‘অস্বস্তিকর’ আলোচনা সেরে ফেলেছেন সচিন। এরই মাঝে রাহুল দ্রাবিড় আবার বলেছেন, “সচিনকে এখন ভারতের সব চেয়ে বেশি দরকার। এই রকম একটা সময় সিনিয়রদেরই এগিয়ে আসতে হয়। আর ভরসা করার জন্য সচিনের থেকে আর বড় নাম কে আছে?”
মুম্বইয়ে সাড়ে তিন দিনে টেস্ট হারের পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ধোনিকে নিয়েও। কপিলের মতে, “শেষ ৮-১০টা টেস্টে ধোনির নিজের পারফরম্যান্সও অত্যন্ত খারাপ। সে দিক থেকে দেখলে তো দলে ওর জায়গা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। দল সাফল্য পেলে যেমন কৃতিত্বের অনেকটাই অধিনায়কের, তেমন ব্যর্থ হলেও তার ভাগীদার হতে হয় তাকে। এক্ষেত্রে ধোনির দোষ সত্যিই কম নয়।”


কী করা উচিত তেন্ডুলকরের
তিনি যদি বর্তমান নির্বাচক কমিটিতে থাকতেন, তা হলে সচিনকে কী বলতেন?
নিজেই লিখছেন প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক অশোক মলহোত্র

১. আমি সচিনকে বলতাম, আত্মবিশ্বাস থাকলে অবশ্যই খেলে যাও। কিন্তু নিজের ইমেজের কথাও মাথায় রেখো।
২. ফর্মে ফেরার জন্য সচিন যে রকম পরিশ্রম করছে, তা সত্যিই অভাবনীয়। হয়তো যে কোনও দিনই একটা সেঞ্চুরি করে দিতে পারে। কিন্তু ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
৩. এই উচ্চতায় ওঠার পথে যে দিনগুলো পেরিয়ে আসতে হয়েছে তাকে, সেই দিনগুলোর কথা এখন মাঝে মাঝে মনে করুক ও।
৪. শুধু নির্বাচক নয়, বোর্ডকর্তাদের সঙ্গেও নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ওর কথা বলা উচিত। তা হলে ওকে নিয়ে অনেক ভুল বোঝাবুঝি কেটে যাবে।
৫. সচিনের নিজেরই একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা তৈরি করা উচিত। এই সময়ের মধ্যে যদি ও ফর্ম এবং ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনতে না পারে, তা হলে বিদায়ের চরম সিদ্ধান্তই নেওয়া উচিত হবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.