আরামবাগ পুর এলাকা
বকেয়া প্রায় ২ কোটি টাকা, কাটা হল বহু জায়গার বিদ্যুৎ সংযোগ
বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটানো নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই আরামবাগ পুরসভা এবং বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির মধ্যে চাপানউতোর ছিলই। মঙ্গলবার সকাল সকালে পুরসভার অন্তর্গত কিছু প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
বণ্টন কোম্পানির আরামবাগ শাখার দাবি, বিল বাবদ বকেয়া প্রায় ২ কোটি টাকা। অন্য দিকে, পুরসভার বক্তব্য, অন্যায় ভাবে ‘ভুতুড়ে’ বিল পাঠানো হচ্ছে। পরিষেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও বিল নেওয়া হচ্ছে বাণিজ্যিক হারে।
বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আরামবাগ ডিভিশনের ম্যানেজার চন্দন মণ্ডল বলেন, “বকেয়া প্রায় ২ কোটি টাকা বকেয়া বিলের কিছু কিছু করে শোধ করতে বলা হয়েছিল পুরসভা কর্তৃপক্ষকে। তা না করায় সংযোগ কাটা হয়েছে। পানীয় জলের সংযোগ ছাড়া অন্য ক্ষেত্রগুলিতেও সেই প্রক্রিয়া চলছে।” অন্য দিকে, পুরপ্রধান গোপাল কচ বলেন, “অন্যায় ভাবে মিথ্যা এবং ভুতুড়ে বিল পাঠিয়ে অসভ্যতা করছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। বার বার জানানো সত্ত্বেও পরিষেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলিতে বাণিজ্যিক হারে বিল পাঠাচ্ছে। এরপরেও ২০০১ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় মোট ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে।”
সংযোগ কাটছেন বিদ্যুৎ কর্মীরা। মঙ্গলবার মোহন দাসের তোলা ছবি।
নাগরিকদের অসুবিধায় ফেলতেই বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি পুরসভার বিরুদ্ধে ‘অন্যায় যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে বলে মন্তব্য করেন পুরপ্রধান তথা সিপিএম নেতা গোপালবাবু।
এ দিন বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা হয়েছে রবীন্দ্রভবন, বিবেকানন্দ পার্ক, কালীপুর পার্ক, নজরুল মার্কেট, সব্জি মার্কেট এবং মহকুমা হাসপাতালের শৌচাগারে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড ও বৃন্দাবনপুর স্পোটর্স কমপ্লেক্সের সংযোগ আপাতত কাটা হয়নি বলে বণ্টন কোম্পানি সূত্রের খবর। সেখানে গিয়েও ফিরে আসেন কোম্পানির কর্মীরা।
পুরপ্রধানের দাবি, সরকারি ভবনগুলির ট্যাক্স বাবদ পুরসভা ৫৪ লক্ষ টাকা পায়। এমনকী বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির ডিভিশনাল অফিসও পুরসভার সুপার মার্কেটের ঘরে ভাড়া নিয়ে চলছে। দীর্ঘ দিন যার ভাড়া বাড়ায় না বণ্টন কোম্পানি। গোপালবাবুর কথায়, “তা সত্ত্বেও নাগরিক পরিষেবার কথা ভেবে আমরা ওঁদের উচ্ছেদ করার চেষ্টাই করিনি।”
বণ্টন কোম্পানির আরামবাগ শাখা সূত্রের খবর, পুরসভা দফায় দফায় ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা বিল মিটিয়ে ছিল ঠিকই, কিন্তু তার পরেও ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বকেয়া আছে।
পুরপ্রধানের তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে বণ্টন কোম্পানির আরামবাগ শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শেখর দে এ দিন বলেন, “কোনও অন্যায় বিল হয়নি। রবীন্দ্রভবন, স্পোর্টস কমপ্লেক্স কিংবা বোট ক্ল্যাব সব ক্ষেত্রেই টাকা নেয় পুরসভা। রবীন্দ্রভবনে সভা করলে আমরাও ভাড়া দিই। স্পোর্টস কমপ্লেক্স কিংবা জিমে গেলেও টাকা সাগে।”
এ দিকে, পুরসভা ও বণ্টন কোম্পানির এই চাপানউতোরের মাঝে পড়ে নাগরিকদের দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে।
সব্জি মার্কেটের ব্যবসায়ী গুণধর দাস, বনমালী ধারা, স্বপন অধিকারীদের বক্তব্য, “অন্ধকারে ব্যবসা কী করে চলবে? সন্ধে থেকে তো মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে হবে। এই আশঙ্কা গত ছ’মাস ধরেই ছিল। পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।”
রবীন্দ্রভবন ভাড়া করে ক’দিন ধরে সরকারি কাজ চলছে। এ বিষয়ে আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় এ দিন জানান, বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে অস্থায়ী ভাবে সংযোগ দিতে বলা হয়েছে। সব পক্ষকে নিয়ে বসা হবে। বাসিন্দাদের ভোগান্তি কমবে কী ভাবে, সেটাই এখন প্রশ্ন।

বকেয়া কোথায় কত
রবীন্দ্রভবন: ৪ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা।
কালীপুর পার্ক: ৭৯ হাজার টাকা।
বিবেকানন্দ পার্ক: ৩৯ হাজার টাকা।
নজরুল মার্কেট: ৩৮ হাজার টাকা।
হাসপাতালের শৌচাগার: ৪৬ হাজার টাকা।
আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড: ১১ লক্ষ ৮৪ হাজার।
বৃন্দাবনপুর স্পোর্টস কমপ্লেক্স: ১ লক্ষ ১৮ হাজার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.