আয় বৃদ্ধিতে অক্ষম ভগ্ন স্বাস্থ্যের পার্কিং
গাড়ি বাড়ছে শহরে। কিন্তু রাতের পার্কিং থেকে আয় ক্রমশ কমছে কলকাতা পুরসভার। দিনের পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে আয় তো বাড়ছেই না, বরং চলতি আর্থিক বছরের প্রথম সাত মাসে তা অনেকটাই কমে গিয়েছে।
পুরসভার পার্কিং বিভাগের আধিকারিকদের বক্তব্য, বিভিন্ন রাস্তায় বেআইনি ভাবে গাড়ি পার্কিং করিয়ে টাকা নিচ্ছে স্থানীয় লোকজন। কিন্তু সেই টাকা পুরসভার হাতে আসছে না। বৈধ পার্কিংয়ের ক্ষেত্রেও ঘণ্টা প্রতি পুরসভার যে টাকা ধার্য করা রয়েছে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে তার থেকে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে আয় যেখানে আরও বাড়তে পারত, সেখানে তা থেকে যাচ্ছে একই হারে।
পুরসভা সূত্রে বলা হয়েছে, কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় দিনে এবং রাতে সমবায়গুলির হাতে পার্কিং স্লট ছাড়াও রয়েছে স্টিকার নিয়ে পার্কিংয়ের অনুমতি নেওয়ার ব্যবস্থা। কিন্তু ২০১০ সাল থেকে টাকা দিয়ে স্টিকার নেওয়ার হার কমতে শুরু করেছে বলে পুরসভার পার্কিং বিভাগ সূত্রের খবর। বার্ষিক এই আয়ের হার দিনে যত না কমেছে, রাতে এক ধাক্কায় কমে গিয়েছে কয়েক লক্ষ টাকায়। ২০০৬-’০৭ আর্থিক বছরে রাতে পার্কিং বাবদ পুরসভার আয় যেখানে ছিল ৪১ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা, ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে তা নেমে এসেছে ৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকায়। শুধু তা-ই নয়, বর্তমান আর্থিক বছরে শহরের আরও নতুন নতুন রাস্তায় পার্কিংয়ের স্লট বাড়ানো হলেও, পুরসভার পার্কিং বিভাগের সারা দিনের আয় যে হারে বাড়ার কথা, তা বাড়েনি বলেই পুরকর্তাদের একাংশের দাবি।
কিন্তু আয় কমলে পুরসভা ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? পুর-আধিকারিকদের কথায়, পরিকাঠামো না থাকার ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কী রকম অবস্থা এই পরিকাঠামোর? পুরকর্তারা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে পার্কিং বিভাগ চলছে মাত্র তিন জন ইনস্পেক্টর এবং এক জন সহকারী ম্যানেজার নিয়ে। আর ওই তিন জন ইনস্পেক্টরকে শহরের ১৪১টি ওয়ার্ডে দিনে ২৮১টি এবং রাতে ৬৩টি রাস্তার পার্কিং ব্যবস্থায় নজরদারি করতে হয়। মাত্র তিন জনের পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয় বলে পার্কিং বিভাগের আধিকারিকদের দাবি।
পুরসভা সূত্রের খবর, অনুমোদিত রাস্তাগুলিতে ক’টি করে গাড়ি পার্ক করা হবে, তা ঠিক করে দেওয়া হয় পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ থেকে। সেই পার্কিং ঠিক সংখ্যায় হচ্ছে কি না বা কোথাও বেআইনি পার্কিং হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব পুরসভার পার্কিং ইনস্পেক্টরদের। শহরের বিভিন্ন জায়গায় হাসপাতাল, নার্সিংহোম কিংবা হোটেলের সামনে পার্কিং স্লট চেয়ে পুরসভার পার্কিং বিভাগে রোজই বিশেষ আবেদনপত্র জমা পড়ে। জমা পড়ে বেআইনি পার্কিং নিয়ে এবং পার্কিং জোনে বেশি টাকা নেওয়ার মতো অভিযোগও। সে সব দায়িত্বই সামলাতে হয় পার্কিং ইনস্পেক্টরদের। ফলে বেআইনি পার্কিং হলেও তা সব সময়ে পুরসভার নজরে আসে না। সেই সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় লোকজন বেআইনি ভাবে পার্কিং থেকে টাকা তুলছে বলে অভিযোগ।
কিন্তু এই আয় কী ভাবে বাড়ানো সম্ভব? পুরসভার পার্কিং বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে পুরসভায় মোট ১৫টি বরো রয়েছে। প্রতি বরোয় এক জন করে পার্কিং ইনস্পেক্টর থাকলে এই কাজ ভাল করে করা সম্ভব বলে তাঁদের দাবি। পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্কিং) রাজীব দেব বলেন, “শহরের রাস্তায় অনুমোদিত পার্কিং ছাড়াও বেআইনি পার্কিংয়ের সংখ্যা বহু গুণ বেড়েছে। পুরো বিষয়টি মাত্র তিন জন ইনস্পেক্টর নিয়ে দেখভাল করা সম্ভবই নয়। আমরা খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে আলোচনায় বসব।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.