বাড়ছে রেডার
চাপ কমাবে নয়া ব্যবস্থা, আশা বিমানবন্দরের
ক্যাথে-প্যাসিফিক সংস্থার হংকং থেকে লন্ডন উড়ান যাচ্ছিল ৪৫ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে। কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) থেকে বিমানের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন কন্ট্রোলার। একই সময়ে আরও ৪০টি বিমানের সঙ্গে কথোপকথন চালাতে হচ্ছিল তাঁকে। তাই ক্যাথের পাইলট চেষ্টা করেও কন্ট্রোলারের সঙ্গে কথা বলতে পারছিলেন না।
যোগাযোগ হতেই উত্তেজিত ভাবে বললেন, “বাইশ মিনিট পরে আপনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেলাম।” ওই উচ্চতায় বিমান চালানোর সময় পাইলটকে অনেকটাই নির্ভর করতে হয় এটিসি কন্ট্রোলারের উপরে। তাই টানা ২২ মিনিট কন্ট্রোলারের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকাটা তাঁর |পক্ষে উদ্বেগের।
কিন্তু কলকাতার এটিসি-তে এখন এমনই পরিস্থিতি। বড় মনিটরের পর্দায় চোখ রেখে বসে থাকেন কন্ট্রোলার। কানে হেডফোন। ঠোঁটের সামনে মাউথ-পিস। ক্রমাগত কথা বলে যান কোনও না কোনও পাইলটের সঙ্গে। কখনও সেই পর্দায় ফুটে ওঠে ৪০-৪৫টি বিন্দু। এক-একটি বিন্দু মানে এক-একটি বিমান। প্রতিটি বিমানের উচ্চতা ভিন্ন, রুট আলাদা। কলকাতার এয়ার ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার চন্দন সেনের কথায়, “কন্ট্রোলারের পক্ষে এক সঙ্গে ২০টি বিমান নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন।”
একসঙ্গে এত জন পাইলট কন্ট্রোলারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করায় তাঁর নির্দেশ কেটে কেটে যায়। ফলে, এক বিমানকে পাঠানো নির্দেশ ভুল করে পালন করতে যান অন্য বিমানের পাইলট। বেড়ে যায়বিপদের সম্ভাবনা।
পরিস্থিতিতে বদল আনতে গোটা দেশ জুড়েই এটিসি-তে চালু হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা। ইতিমধ্যেই সুফল পেতে শুরু করেছে দিল্লি-মুম্বই-চেন্নাই। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকে কলকাতাও নতুন ব্যবস্থার সুফল পাবে।
উড়ান কথা


কী কী সমস্যা
মাত্র দু’টি রেডার কন্ট্রোলার প্রতি ৪০-৪৫টি উড়ান
অতিরিক্ত চাপে ভুলের আশঙ্কা পাইলটদের সঙ্গে যোগাযোগ কম
এক পাইলটের বার্তা পাচ্ছেন অন্য জন দু’টি বিমান কাছে চলে এলেও সতর্ক বার্তা নেই


নয়া ব্যবস্থায় সুফল
কলকাতায় কমপক্ষে ৭টি রেডার কন্ট্রোলার প্রতি ২০টি উড়ান
চাপ কমায় ভুলের আশঙ্কা কম পাইলটের সঙ্গে বেশি কথা বলা যাবে
পাইলটকে পাঠানো বার্তা আরও পরিষ্কার দুই বিমান কাছাকাছি এলে সতর্কবার্তা
কী লাভ হবে এতে?
এখন কলকাতা এটিসি-র নিয়ন্ত্রণে থাকা আকাশসীমা হল উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে বারাণসী। এই এলাকার বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয় দু’টি মাত্র রেডারের সাহায্যে। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু হলে কলকাতার আকাশসীমা কিছুটা বাড়বে। কিন্তু ছ’টি রেডার চলে আসবে তার আওতায়। এখন কলকাতার আকাশকে তিন ভাগে ভাগ করে তিন জন কন্ট্রোলার নিয়ন্ত্রণ করেন বিমানের গতিপথ। নতুন ব্যবস্থায় সাতটি ভাগে ভাগ হবে কলকাতার আকাশ। সে ক্ষেত্রে এক জন কন্ট্রোলারের উপরে আর আগের মতো চাপ পড়বে না। পাইলটেরাও সহজেই এটিসি কন্ট্রোলারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।
আকাশে দু’টি বিমান কাছাকাছি চলে এলে বিমানের মধ্যে থাকা যান্ত্রিক ব্যবস্থাই পাইলটকে সতর্ক করে দেয়। কিন্তু এত দিন সেই সতর্কবার্তা কন্ট্রোলার পেতেন না। মনিটরের সামনে বসে তাৎক্ষণিক কর্মক্ষমতায় তিনি সতর্ক করতেন পাইলটদের। নতুন ব্যবস্থায়, আকাশে কাছাকাছি দুই বিমান চলে এলে সতর্কবার্তা পাবেন কন্ট্রোলারও। চন্দনবাবুর কথায়, “বিমান সংঘর্ষের সম্ভাবনা এতে অনেক কমে যাবে।” নতুন ব্যবস্থার এটাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক বলে মনে করা হচ্ছে।
আকাশে একই রুটে সামনে-পিছনে দুই বিমানের মাঝের দূরত্ব ১০০ নটিক্যাল মাইল রাখা হয়। কন্ট্রোলারের উপরে চাপ কমলে সেই দূরত্ব কমিয়ে ৫০ নটিক্যাল মাইলে নামিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে। সে ক্ষেত্রে একই আকাশ এলাকায় আরও বেশি বিমান চলাচল করতে পারবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.