|
|
|
|
পূজারা ভাবভঙ্গি না বদলালে ... |
আজকাল কিছু লিখতেও বেশ ভয় লাগে। বিশেষ করে ২০০৯-এ দক্ষিণ আফ্রিকায় আইপিএল-এর পর থেকে। আমার ‘ফেক আইপিএল প্লেয়ার’ ব্লগটা নিয়ে তখন কী কাণ্ডটাই না হয়েছিল! তবু লিখতে রাজি হলাম, তার একটাই কারণ, আমার ‘আনন্দবাজার’ প্রীতি। বেঙ্গালুরুতে আমার বাড়িতে বসে লিখছি, তখন মুম্বই টেস্টে ভারত কোমায় চলে গিয়েছে।
অশ্বিনের কী হবে?
অ্যাংগ্রি ইয়ং ম্যান বিরাট কোহলি যদি ক্রিকেটের অমিতাভ বচ্চন হন, আর আর্ট হাউস সিনেমার নাসিরুদ্দিন শাহ-র মতো টেস্ট ক্রিকেটের শিরোমণি হন পূজারা, তা হলে ভারতীয় ক্রিকেটের আর এক উঠতি তারকা রবিচন্দ্রন অশ্বিন করছেনটা কী?
মনে আছে নব্বইয়ের দশকে যে বার প্রথম সুনীল শেঠিকে দেখেছিলাম, আমার টিভিটা শর্ট-সার্কিট হয়ে দাউদাউ করে পুড়ে গিয়েছিল। নিজের মুখ ক্যামেরায় দেখানোটাকে পেশা বানানোর কোনও অধিকারই যে সুনীল শেঠির ছিল না, সেটা আমার টিভিটাও জানত।
ভাগ্য ভাল, ‘অ্যাথলিট’ অশ্বিনের জারিজুরি দেখানোর পরেও উন্নত প্রযুক্তির সৌজন্যে আমার টিভিটার কিছু হয়নি। কিন্তু টিভিতে যত বারই অশ্বিনকে দৌড়তে দেখা যায়, রহস্যময় ভাবে তত বারই আমার লাইট বাল্বটার তার কেটে যায়।
অশ্বিন যে ভাবে বল তাড়া করে, তার চেয়ে ঢের অভিজাত ভঙ্গিতে আমি শাড়ি-পরা মাসিমাদের বাসের পেছনে ছুটতে দেখেছি। অশ্বিনের লাবণ্যের এমনই মহিমা যে, ওর সামনে সুনীল শেঠির ‘হায় হুকু হায় হুকু’ নাচটাকেও মাইকেল জ্যাকসনের ‘থ্রিলার’ মনে হয়। হালফিলে ওর নতুন ‘মিস্ট্রি’ বল নিয়ে কথা বলেছে অশ্বিন। ও যে কী ভাবে বল ধরতে পারে, সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় ‘মিস্ট্রি’। বিজ্ঞানীরা নিশ্চয়ই এটা নিয়ে ভাবছেন।
পূজারার সমস্যা
চেতেশ্বর পূজারার একটা সমস্যা আছে। খুব বড় সমস্যা। আর সেটা নিয়ে ওকে খাটতেই হবে। যদি ও ভারতের আগামী অন্তর্বাস সেলসম্যান কাম কোলা বিক্রেতা কাম সেলফোন হকার হতে চায়।
এই সিরিজের তিনটে মাস্টারক্লাস ইনিংসে পূজারা মাত্র কয়েকটা স্মৃতি দিয়েছে আমাদের। দুর্দান্ত কভার ড্রাইভ, স্কোয়ার কাট, ফ্লিক আর স্ট্রেট ড্রাইভ। হাত মুঠো করে ছোড়া নেই, কোনও গালাগালি নেই, মুখোমুখি কোনও বিশ্রী বোঝাপড়া নেই। আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কাতর্কি নেই, বিপক্ষের সঙ্গে কথার লড়াই নেই, বদলা বা প্রতিহিংসার কোনও উল্লেখই নেই।
ছেলেটার সমস্যাটা কী? ও কি জানে না যে, ও যে গেঞ্জিটা পরে সেটা কেউ কিনবে নাযদি সেটা অন্য পরিবারের মহিলাদের গালাগালি দেওয়ার আত্মবিশ্বাস ক্রেতাকে না দেয়? আর সেঞ্চুরি করার পরে হ্যান্ডশেক করার মানেটা কী? ঝিরঝিরে ছবিওলা ক্রিকেট ক্ল্যাসিক ভিডিও-র কাকুরা ও রকম করত। পূজারা যদি নিজের ভাবভঙ্গি না বদলায়, তা হলে বৃদ্ধাশ্রম আর ভায়াগ্রা ছাড়া এনডোর্স করার মতো কিছুই ওর হাতে থাকবে না।
মুছে যাওয়া তারা
নতুন তারকারা যদি বলিউডের সমান্তরাল গ্রহে নিজেদের ‘অল্টার ইগো’ খুঁজে নিতে পারে, তা হলে মুছে যেতে বসা তারকারাই বা পিছিয়ে থাকবে কেন?
প্রীতি জিন্টা, রানি মুখোপাধ্যায়, করিশ্মা কপূরের মতো অসংখ্য নায়িকা, যারা কিছুক্ষণের জন্য হলেও এক নম্বরের শিরোপা পেয়েছিল, তাদের মতোই একটা সময় গম্ভীর ছিল একজন উঠতি তারকা। আজ যে ভাবে এই নায়িকারা হারানো যৌবনের উজ্জ্বলতা খুঁজে বেড়াচ্ছে, মুম্বই টেস্টের আগে পর্যন্ত মনে হচ্ছিল ঠিক সে ভাবেই যেন বল খুঁজছে গম্ভীর।
এই নায়িকাদের কয়েক জনের মতো গম্ভীরও এক অভিজ্ঞ শল্যচিকিৎসকের হাতের উপর আস্থা রেখেছিল। কিন্তু মাথার চুল নতুন করে গজাতে পারলেও দ্রুত হারিয়ে যেতে থাকা রান খোঁজার টোটকা বের করতে পারছিলেন না গম্ভীরের ডাক্তার। মনে হচ্ছিল, ওই নায়িকাদের মতো খুব তাড়াতাড়ি গম্ভীরের হাতেও একটা জিনিসই পড়ে থাকবে। বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শাহরুখ খানের সঙ্গে হাজিরা। মুম্বই টেস্টে আপাতত রান পেয়ে যাওয়ায় ছবিটা হয়তো বা কিছুটা বদলাল।
তেন্ডুলকর ক্রিকেটের রজনীকান্ত হতে পারত। যার জন্য লোকে মন্দির তৈরি করে। কিন্তু ও কী বাছল? না, সন্ত হওয়ার সম্ভাব্য সুযোগের বিনিময়ে ওই একটা বাড়তি সেঞ্চুরি করা, ওই বাড়তি এক মিলিয়ন ডলার কামানো। তার মূল্য কি ও পেয়েছে? রজনীকান্ত কী বলবেন? যে মানুষটা এক বার বলেছিলেন, “সুপারস্টাররা দাঁতের মাজন বিক্রি করে না,” সেই মানুষটা হয়তো তেন্ডুলকরের সঙ্গে একমত হবেন না।
কোনও এক সময় রামগোপাল বর্মা ‘সত্য’, ‘কম্পানি’, ‘সরকার’ বানিয়েছিলেন। কোনও এক সময় এমএস ধোনি নিজেকে আর নিজের টিমকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিল। আজ দু’জনেই নিজেদের ঠাট্টার স্তরে নামিয়ে আনতে ব্যস্ত।
‘দর্শক এখনও আমার সিনেমার জন্য তৈরি নয়’ গোছের অজুহাতের আড়ালে আরজিভি-র মতো লুকোতে ব্যস্ত ধোনিও। ধোনির কথা বিশ্বাস করতে গেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের হারের কারণ দাঁড়ায় বৃষ্টির জন্য দশ মিনিট খেলা বন্ধ থাকা। আর পীযূষ চাওলা হয় বোলিং অলরাউন্ডার। হ্যাঁ, ঠিক, ঠিক। আর আমাকে দেখতে একদম ব্র্যাড পিটের মতো। ধন্যবাদ।
ইনসাইড স্কুপ
দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য আগের টেস্ট ম্যাচে পাক রপ্তানি ইমরান তাহির যা করেছে, তা দেখার পর পাকিস্তান একটা প্রস্তাব দিয়েছে। এবি ডে’ভিলিয়ার্সকে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য কামরান আকমলকে দক্ষিণ আফ্রিকা পাঠানোর প্রস্তাব।
প্রস্তাব নিয়ে গ্রেম স্মিথের মতামত ঠিক কী, ওর ঘর থেকে আসা মরিয়া যন্ত্রণার চিৎকারে ভাল করে বোঝা যায়নি। তবে ঠিক তার পরের দিনই শূন্য রানে আউট হয়ে যায় স্মিথ। যে টেস্ট ম্যাচে ও সেঞ্চুরি করেছে, সেই টেস্ট নাকি কখনও হারেনি স্মিথ। কিন্তু একশোরও বেশি টেস্টে স্মিথ যেটা করতে পারেনি, ওর হয়ে তাহির সেটা করে দেখিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া
সহারাশ্রী সুব্রত রায়-কে ‘ধন্যবাদ’ লেখা কার্ড পাঠিয়েছে মাইকেল ক্লার্ক। অধিনায়ক হিসেবে ব্যাট হাতে ওর রেকর্ড বাঁচানোর জন্য। “অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রান করাটা সহজ। পুণে ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক থাকার পাশাপাশি রান করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হত,” বক্তব্য ক্লার্কের। |
|
|
|
|
|