পাখির দখলে দুনিয়া
অ্যাংগ্রি বার্ডস
আদতে নিখাদ একটা গেম। বলা যেতেই পারে ‘টুনটুনি আর বিড়ালের গল্প’-র এক আন্তর্জাতিক সংস্করণ। পাখির বাসা আক্রমণ করেছে একদল শূকর। সেই আক্রমণ পরাস্ত করে পাখির দলকে বাঁচাতে হবে নিজেদের বাসা।
এক কথায় এই হল গেমটার মোদ্দা কথা। সোজা-সাপ্টা, সহজ-সরল। আর তাতেই বুঁদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, বুকার জয়ী সাহিত্যিক সলমন রুশদি থেকে সাত বছরের বনি।

আমি তো এমনি এমনি খেলি
ডিসেম্বর ২০০৯। রোভিও এন্টারটেনমেন্ট বাজারে আনে ‘অ্যাংগ্রি বার্ডস’ নামের এক আই ফোন অ্যাপ্লিকেশন। কয়েক দিনেই খুব জনপ্রিয় হয় সেটা। তাই বেশি দিন শুধুমাত্র ট্যাঁশদের মোবাইলগত হয়ে থাকতে হয়নি ‘অ্যাংগ্রি বার্ডস’কে। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল থেকে কম্পিউটার, সব জায়গায় স্থান করে নিয়েছে অ্যাংগ্রি বার্ডস।
বাস্তবেই সে এসে পড়েছে আম জনতার মাঝে। আর জনপ্রিয়তা? এ বার সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে নীলাঞ্জন সেন। শুধুমাত্র অ্যাংগ্রি বার্ডসের জন্য মোবাইল পাল্টে ফেলেছে সে। কিনেছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন। “অ্যান্ড্রয়েড মার্কেটে তো ফ্রি ওটা! এখন প্রতিদিন একটা করে নতুন গেম পাই,” সাফ জবাব।

গেম বই তো নয়
শুধু গেম হয়ে থাকলে তো কথা ছিল না। কিন্তু অ্যাংগ্রি বার্ডস শুধু মোবাইলে আটকে থাকার বস্তু নয়। এখন তার বিচরণ সর্বত্র। জ্যাকেট, টি-শার্ট থেকে শুরু করে বই-খাতা, কোথায় নেই অ্যাংগ্রি বার্ডস। বনির যেমন বইয়ের মলাটেও চাই অ্যাংগ্রি বার্ডসের স্টিকার!
“মানতেই হবে বস, অ্যাংগ্রি বার্ডস নিজেই একটা ব্র্যান্ড। আমি তো প্রতি মাসে একটা করে অ্যাংগ্রি বার্ডস টি-শার্ট কিনি। এটাই এখন হিপ।” জানালো কলেজ পড়ুয়া মনীষা। “আমার ছেলের তো ব্রেকফাস্টের ডিমেও অ্যাংগ্রি বার্ডসের ছাপ থাকলে ভাল।” শমিত চট্টোপাধ্যায় মজা করে বললেও এটাই বাস্তব।

এই দেখ পেনসিল, নোটবুক...
বনি, দেবারতি আর অনিমেষ। বয়েসের দিক থেকে মিল নেই একটুকুও। কিন্তু একটা জায়গায় অদ্ভুত মিল ওদের। প্রত্যেকেই অ্যাংগ্রি বার্ডস জ্বরে রীতিমত কাহিল। এত দিন পর্যন্ত অ্যাংগ্রি বার্ডসের চাহিদা পেনসিল, নোটবুক পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল বনির। কিন্তু এখন বিছানার চাদর, বালিশেও তার চাই অ্যাংগ্রি বার্ডস। সেই খোঁজে তার বাবা-মায়ের এখন নাভিশ্বাস ওঠার অপেক্ষা।

অ্যাংগ্রি বার্ডিজম
অ্যাংগ্রি বার্ডস নিয়ে পাগলামির কিন্তু এখানেই শেষ নয়। নটিংহ্যামশায়ারে যেমন তৈরি হয়েছে আস্ত এক পার্ক, শুধু অ্যাংগ্রি বার্ডসকে থিম করে।
কেন অ্যাতো মাতামাতি অ্যাংগ্রি বার্ডস নিয়ে? উত্তরটা বাতলালেন মনোস্তত্ত্ববিদ জয়রঞ্জন রাম, “রক্তপাত ছাড়াই মনের রাগ বের করে দেওয়ার এর থেকে ভাল কিছু আর হয় নাকি! খেয়াল করলে দেখবেন মেয়েদের মধ্যেও কিন্তু তাই খুব জনপ্রিয় অ্যাংগ্রি বার্ডস। আসলে গেম ডেভেলপাররা এই কগনিটিভ প্রসেসটা ধরেই কিন্তু গেম বানায়। আর সেই ভাল লাগা থেকেই ছড়িয়ে যায় পপুলার কালচারে।”
তাই ঝাঁপিয়ে পড়ুন অ্যাংগ্রি বার্ডসের দুনিয়ায়।


সব চরিত্র অ্যাংগ্রি বার্ডসের
রেড: বিশেষ কোনও ক্ষমতা না থাকলেও শূকরদের জব্দ করতে এরাই প্রথম হাতিয়ার।

দ্য ব্লুজ: একবার ছুঁলেই তিনটে হয়ে যায় এরা। কাঁচের দেওয়াল ভাঙতে এদের জুড়ি নেই।

চাক: হলুদ রঙের এই পাখিদের গতি খুব বেশি। ফলে কাঠের দুর্গ ভাঙতে হলে এরাই প্রধান ভরসা।

বম্ব: নাম থেকেই স্পষ্ট, কালো রঙের এই পাখিগুলো আঘাত লাগলে ফেটে যায়। সব থেকে কাজ দেবে পাথরের দেওয়াল ভাঙতে।

মাটিল্ডা: সাদা রঙের এই পাখিদের বিশেষত্ব, একবার ছুঁলে এরা বোমের মতো ডিম পাড়ে।

অ্যাল: সবুজ রঙের এই পাখিরা বুমেরাঙের মতো ফেরত আসতে পারে। কাঠ হোক কী কাঁচ, এদের চাই।

বাবলস্: এদের রং কমলা। ছুঁলেই আয়তনে বেড়ে যায়। ফলে কঠিন জায়গাতেও সহজেই ঢুকে পড়তে পারে এরা।

মাইটি ঈগল: সব থেকে শক্তিশালী অ্যাংগ্রি বার্ড। সার্ডিনস মাটি ছুঁলেই বেরিয়ে পড়বে মাইটি ঈগল। শুরু হবে ভূমিকম্প। আর তাতে মারা পড়বে শত্রু শিবির।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.