ঘরে-বাইরে ক্ষোভ সামাল দিতে অবশেষে বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ ভাঙার কাজে নামতে বাধ্য হল শিলিগুড়ি পুরসভা।
শুক্রবার শহরের তিনটি বাণিজ্যিক ভবনের বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি রেস্তোরাঁ এবং একটি শপিং কমপ্লেক্সের বেআইনি অংশ রয়েছে। শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন পুরসভার কর্মীরা। ব্যবসায়ীদের একটি অংশ অভিযোগ করেন, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট সহ নানা ওয়ার্ডে বেআইনি বিল্ডিং রয়েছে। ওই মার্কেটেই থাকা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ভবনের বেআইনি অংশ নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ কেন ব্যবস্থা নেননি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “তিনটি বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ ভাঙা হয়েছে। আরও বেশ ভাঙা হবে।” শিলিগুড়ির বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা জানান, পদ্ধতি মেনে বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ ভাঙার কাজ করছি। তিনি বলেন, “সবাইকে কয়েক দফায় চিঠি পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়। বেআইনি অংশ ভেঙে ফেলার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অনেকে আইন মানেননি। এ দিন ৩টি বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হয়েছে। ধারাবাহিক অভিযান চলবে। প্রতিটি বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে।” |
শিলিগুড়ির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে আদর্শ মহাবিদ্যালয় ভবন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চানাপট্টির একটি বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে শিলিগুড়ি হাসপাতালের উল্টো দিকে একটি ওষুধের দোকান, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি রেস্তোরাঁ সহ একাধিক ওয়ার্ডে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ ওঠেছে। কংগ্রেস-তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ অভিযোগ করেন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ১৯টি বেআইনি নির্মাণ তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় পুর-কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে লেনদেনে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধানকে ফোন করে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেন। এদিন পুরসভার অ্যাসিট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দীপক দত্ত কর্মীদের নিয়ে ভক্তিনগর থানার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে যান। সেখানে একটি বাণিজ্যিক ভবনে বেআইনি ভাবে নির্মিত রেস্তোরাঁ ভাঙা হয়। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সেবক রোড সংলগ্ন এলাকায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে বেআইনি ভাবে একটি ঘর তৈরি করা হয়েছিল। আরও কিছু নির্মাণ কাজ করা হচ্ছিল। এদিন সব ভেঙে দেওয়া হয়। শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে রেস্তোরাঁর একটি বেআইনি অংশ ভাঙতে গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। সেখানে শিলিগুড়ি থানার আইসি বিকাশকান্তি দে, এসিপি প্রদীপ পাল যান। ওই ভবনের মালিক অজয় অগ্রবালের অভিযোগ, পুরসভা কোনও কিছু না জানিয়েই ভাঙার কাজ শুরু করেন। ওই মালিকপক্ষের তরফে শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র, বিল্ডিং মেয়র পারিষদ, এলাকার কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পালের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়।
অজয়বাবু বলেন, “যখন তৈরি করেছি, তখন সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকের সম্মতি পেয়েই তৈরি করেছি। এখন অন্যায় ভাবে আমাদের ভবন ভাঙা হল।” এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে একাধিক বাণিজ্যিক ভবনে গ্যারেজের জায়গাগুলি বিক্রি করে দোকান তৈরি হয়েছে। পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না-থাকায় সেখানে নিত্য যানজট হচ্ছে। সব বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ না-ভাঙলে ব্যবসায়ীদের একাংশ আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন। |