লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি পুরোদস্তুর শুরু করে দিল রাজ্য কংগ্রেস। দলের অবস্থা খতিয়ে দেখতে ও সম্ভাব্য প্রার্থীর সন্ধানে ইতিমধ্যেই রাজ্যে চার পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছেন এআইসিসি-র নির্বাচন সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান রাহুল গাঁধী। দিল্লির পাঠানো জয়ন্ত বড়ুয়া, দেবাশিস পট্টনায়ক, ওপি জিন্দল এবং অজয় খেড়া কাজও শুরু করে দিয়েছেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই তাঁরা রাজ্যের ৪২টি কেন্দ্রে দলের সাংগঠনিক অবস্থা, রাজ্যে কংগ্রেস-বিরোধী দলগুলির হাল এবং সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা রাহুলের কাছে পেশ করতে পারেন।
কংগ্রেসের একটি সূত্রের বক্তব্য, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে দলীয় সংগঠনের দুর্বলতা নিয়ে পযর্বেক্ষকদের দু-তিন জনের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের একাংশের ঘরোয়া আলোচনা হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট থাকায় সাংগঠনিক স্তরে দলের ক্ষতি হয়েছে। তা ছাড়া গত লোকসভা ভোটে কলকাতার ধারে-কাছে কোথাও দলের প্রার্থী না-থাকায় কংগ্রেস কর্মীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। লোকসভা ভোটের দু’বছরের মধ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে রাজ্যে ক্ষমতায় চলে আসায় সংগঠনের বিশেষ উন্নতি হয়নি। কারণ, দল সরকারে থাকায় বহু ক্ষেত্রে আন্দোলনে নামার ব্যাপারে নেতৃত্ব দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। তা ছাড়া বহু কর্মীর মধ্যে তৈরি হওয়া ‘গয়ংগচ্ছ মানসিকতা’ও ক্ষতি করেছে। দক্ষিণবঙ্গের চেয়ে উত্তরবঙ্গে কংগ্রেসের অবস্থা কিছুটা ভাল বলে পর্যবেক্ষকেরা প্রাথমিক ভাবে দলীয় নেতৃত্বকে জানান। এর মধ্যেই রাজ্যে জোট ভেঙে বেরিয়ে আসা ও হলদিয়া, তেহট্টের ঘটনা নিয়ে দল পথে নামায় পরিস্থিতি বদলাচ্ছে বলে মনে করছেন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ রাজ্য নেতৃত্ব। তা ছাড়া কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার চেষ্টায় তৃণমূল যে ভাবে সিপিএম-বিজেপি’র দ্বারস্থ হয়েছে, তা-ও কংগ্রেস কর্মীদের এককাট্টা হতে সাহায্য করেছে, মত নেতাদের।
সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই নিয়ে লোকসভা কেন্দ্রভিত্তিক দলীয়, জেলা ও প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন পর্যবেক্ষকরা। তাঁরা কেন্দ্রওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছেন। এক পর্যবেক্ষকের কথায়, “আগামী লোকসভা ভোটে ৪২টি আসনেই কংগ্রেসকে প্রার্থী দিতে হবে এবং ত্রিমুখী লড়াইয়ের মোকাবিলা করতে হবে বলে প্রার্থী বাছাইয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।” এই অবস্থায় কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে ও কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে জেলা-সফর শুরু করবেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রদেশ নেতা মানস ভুঁইয়া। আগামী ৮ ডিসেম্বর জঙ্গলমহল সফরে যাবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। তার পরেই জেলা-সফর শুরু হবে মানসের। |