আর্মান্দো কোলাসোর দলের মতো কোনও ধারালো অস্ত্র নেই ‘তাঁর’ দলে। তবু ঘরের মাঠে ডেম্পোকে ৩-১ গোলে হারানোর মহা-কৃতিত্ব এই মরসুমে আই লিগের প্রথম তিনটে বড় অঘটনের তালিকায় সহজেই জায়গা করে নিতে পারে!
মোহনবাগানের সহকারী কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের দৌড়েও অসম্পূর্ণ ‘চ্যাপ্টার’ হয়ে থাকবে ‘তাঁর’ দল। চার ম্যাচে সালগাওকর, স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া কিংবা এয়ার ইন্ডিয়ার মতো বড় প্রাচীর সহজেই টপকে গেলেও, ‘তাঁর’ বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করেই থামতে হয়েছিল মৃদুলকে।
মোহনবাগানকে হারিয়ে যাঁদের কাঁধে চেপে যুবভারতী ছেড়েছিলেন প্রয়াগ কোচ সঞ্জয় সেন, সেই কর্মকর্তারাই ‘তাঁর’ দলের বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করার পরে চেতলার বাসিন্দাকে ছাঁটাইয়ের অন্ধগ্রহে ঠেলে ফেলার ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছিলেন।
ট্রেভর মর্গ্যান অবশ্য কোলাসো, মৃদুল কিংবা সঞ্জয়ের রাস্তায় হাঁটতে চাইছেন না। বরং শনিবাসরীয় বিকেলে ‘তাঁর’ অর্থাৎ সুব্রত ভট্টাচার্যের (পটলা) ওএনজিসি-কে হারানোর লক্ষ্যে সুভাষ ভৌমিককেই মডেল করছে ইস্টবেঙ্গল। চার্চিলের মতোই ৫-০ জয়ের সন্ধানে। |
ছোট দল চোরাবালির মতো হয়। কখন গর্তে পা ঢুকে যাবে, বলা খুব কঠিন। কিন্তু ওএনজিসি ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে লাল-হলুদ ফুটবলারদের আত্ম-সচেতনতাবোধ মর্গ্যানকে নিশ্চয়ই অনেকটা আশ্বস্ত করবে। অনুশীলনের পরে লাল-হলুদ গোলমেশিন এডে চিডি নিজের গাড়িতে বসে বলছিলেন, “ছোট দল বলে হালকা ভাবে নিচ্ছি না। আমরা জিততে চাই। ওরা যতই ডিফেন্সিভ ফুটবল খেলুক না কেন, আমরা তিন পয়েন্ট চাই।” একটু এগিয়েই দাঁড়িয়ে উগা ওপারার গাড়ি। চিডির মতো তিনিও বলে গেলেন, “ছোট দলগুলো নিয়েই বেশি ভয়। তবু যে করেই হোক তিন পয়েন্ট তুলতে হবে।”
বিকল্পশক্তি যে কোনও দলের সম্পদ। কিন্তু বিকল্পের ‘ওভারডোজ’ হয়ে গেলে অস্বস্তি বেড়ে যায়। মর্গ্যানের ক্ষেত্রেও ‘ওভারডোজ’-এর মাত্রা ক্রমশ কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এত দিন সমস্যা হচ্ছিল আঠারো জনের দল কী হবে, তা নিয়ে। চার্চিল ম্যাচের পরে সেই আশঙ্কার ধোঁয়া এখন ঢুকে পড়েছে লাল-হলুদের ‘এগারোবর্তী’ পরিবারেও। পরিস্থিতি যা, তাতে খোদ লাল-হলুদের হৃৎপিণ্ড মেহতাব হোসেনের জায়গা নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছিল। কেননা সুভাষ ভৌমিকের দলের বিরুদ্ধে ৩-০ জয়ে সুবোধ কুমারের চোখ-ধাঁধানো পারফরম্যান্স এখনও স্মৃতিতে লেপ্টে আছে ব্রিটিশ কোচের। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত প্রবল সংশয় ছিল, কাকে খেলানো হবে তা নিয়ে। শেষ পর্যন্ত তারুণ্যকে টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে গেল অভিজ্ঞতাই। চার্চিলের দলে তাই একটাই পরিবর্তন করছেন মর্গ্যান সুবোধের জায়গায় মেহতাব।
যুবভারতী থেকে তিন পয়েন্ট তোলার স্বপ্ন বুনছেন ওএনজিসি কোচও। সুব্রত বলছিলেন, “ডেম্পোকে হারানোর পরে আমার ছেলেরা মানসিক ভাবে উদ্বুদ্ধ। আমার বিশ্বাস, পয়েন্টস কিংবা পয়েন্ট নিয়েই ফিরব।” আই লিগ তালিকায় এক নম্বর থাকাকালীন ডেম্পোকে হারিয়েছিল ওএনজিসি। বর্তমানে শীর্ষে থাকা ইস্টবেঙ্গলকে শনিবার হারিয়ে ফের কোনও অঘটন ঘটাতে পারেন কি না সুব্রত, তা তো সময়ই বলবে। তবে ওএনজিসি-র জন্য সুখবর, দলে কোনও বড় চোট-আঘাত কিংবা কার্ড সমস্যা নেই।
|
শনিবারে আই লিগ
ইস্টবেঙ্গল : ওএনজিসি (যুবভারতী ২-০০) |