সিএজি-র উপরে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠায় টুজি-অস্ত্রের ধার কমেছে। এই অবস্থায় সিবিআইয়ের নতুন নির্দেশক নিয়োগে কেন্দ্রের অতিসক্রিয়তাকেই আক্রমণের নয়া লক্ষ্য করতে চাইছে বিজেপি।
আজই রাজ্যসভায় পেশ হয়েছে লোকপাল বিল। তাতে প্রধানমন্ত্রীকে লোকপালের আওতায় আনা ছাড়াও সিবিআইয়ের নির্দেশক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে একাধিক সুপারিশ করা হয়েছে। অথচ গত কালই ঘোষণা হয়েছে সিবিআইয়ের নতুন নির্দেশকের নাম। এই নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে লোকসভা ও রাজ্যসভার দুই বিরোধী দলনেতা সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলি প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, “লোকপাল বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও দেশের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত একটি কমিটি সিবিআইয়ের নির্দেশক নিয়োগ করবে। ওই বিলটি যখন শীঘ্রই পাশ হতে চলেছে, সেখানে সরকার কেন তড়িঘড়ি নতুন নিয়মের অপেক্ষা না করে ওই নিয়োগ করল?”
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি তোলেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী জেটলিকে পাল্টা চিঠিতে লেখেন, “সিবিআইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদ ফাঁকা রাখা যায় না। তাই জনস্বার্থে আইন মোতাবেক ওই নিয়োগ হয়েছে। তা মুলতুবি রাখার প্রশ্ন ওঠে না।”
কংগ্রেসের তরফেও বলা হয়েছে, সিবিআইয়ের নির্দেশকের নিয়োগের পদ্ধতিটি শুধুমাত্র সুপারিশ করেছে সিলেক্ট কমিটি। ওই সুপারিশ মেনেই বিল পাশ হবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। প্রসঙ্গত, সিবিআইয়ের বর্তমান নির্দেশক এ পি সিংহ এ মাসের শেষেই অবসর নেবেন। গত কাল নতুন নির্দেশক পদে ১৯৭৪ ব্যাচের আইপিএস অফিসার রঞ্জিত সিংহকে মনোনীত করে সরকার।
বিজেপির এক নেতা বলেন, “ওই আমলার বিরুদ্ধে দলের ব্যক্তিগত ভাবে কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু সরকারের অহেতুক তৎপরতাই সন্দেহ সৃষ্টি করেছে।” তাঁদের অভিযোগ, কোনও নির্দেশক অবসর নেওয়ার এক সপ্তাহ আগে নতুন নির্দেশকের নাম ঘোষণার কোনও সাম্প্রতিক নজির নেই। শাসক দল ইচ্ছাকৃত ভাবে লোকপাল বিল পাশ হওয়ার অপেক্ষা না করেই নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে নিয়োগ করেছে। বিজেপির ব্যাখ্যা, নির্ধারিত সময়ে লোকসভা নির্বাচন হলেও কংগ্রেসের হাতে এখনও দেড় বছর রয়েছে। আর এই নতুন নির্দেশক তো পদেই থাকবেন আরও দু’বছর। এই প্রসঙ্গে জেটলি বলেন, “সংসদে যতই হট্টগোল হোক লোকপাল বিল পাশ করাতে আমরা বদ্ধপরিকর। সরকার আরও দিন দশেক অপেক্ষা করলে কী ক্ষতি হত?”
সরকারের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মেনেই এই মনোনয়ন হয়েছে। নিয়মমাফিক তিন জনের নাম চূড়ান্ত করেন মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার। তাঁদের মধ্যে রঞ্জিত সিংহই ছিলেন প্রবীণতম। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীর পাল্টা প্রশ্ন, “বিজেপি এত স্বচ্ছতার কথা বলছে বটে, কিন্তু তারা তাদের সময়ে সিবিআইয়ের নির্দেশক নিয়োগের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন বোধ করেনি।”
রাজনীতির কারবারিদের বক্তব্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজেপি বা অণ্ণা হজারের চেয়ে কংগ্রেসই যে বেশি সক্রিয়, সেই বার্তা দিতেই আজ তড়িঘড়ি পেশ হওয়া বিলটিতে প্রধানমন্ত্রীকে লোকপালের আওতায় এনেছে সরকার। এ ছাড়া, সিবিআইয়ের হাতে বিচার করার অধিকার এবং লোকপালের সুপারিশ করা অভিযোগের তদন্তে লোকপালের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান সত্যব্রত চতুর্বেদী। রাজ্যগুলিতে লোকায়ুক্ত গঠনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছে নতুন বিল। তবে সুপারিশে এ-ও বলা হয়েছে, কেন্দ্র লোকপাল আইন চালুর এক বছরের মধ্যে সব রাজ্যকে বিধানসভায় ওই আইন পাশ করে নিজস্ব লোকায়ুক্ত গঠন করতে হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.