|
|
|
|
বিক্ষোভ রামপুরহাটে |
মিড-ডে মিল ঘিরে অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
কুকুরে মুখ দেওয়া মিড-ডে মিল খাওয়ানোর অভিযোগ উঠল রামপুরহাটের একটি প্রাথমিক স্কুলের বিরুদ্ধে। তার জেরে শুক্রবার দখলবাটির ওই প্রাথমিক স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবক ও এলাকাবাসীর একাংশ। ঘটনা সম্পর্কে আবার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও অন্যান্য শিক্ষিকাদের দাবি পরস্পরবিরোধী। ঘটনার কথা জানতে পেরে রামপুরহাটের মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায়ের প্রতিক্রিয়া, “এমনটা হয়ে থাকলে তা একেবারেই অভিপ্রেত নয়। ওই খাবারে কুকুরে মুখ দিলে তা ফেলে দেওয়াই উচিত ছিল।” অন্য দিকে, রামপুরহাট দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কিশোরকুমার মণ্ডল বলেন, “ঠিক কী ঘটেছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রোজদিনের মতো গত বুধবারও দখলবাটির ওই প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিলের রান্না হয়েছিল। রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য দুর্গা দাসী জানান, টিফিনের একটু আগে স্কুলের রান্নাঘর লাগোয়া বারান্দায় একটি ঝুড়িতে ভাত রাখা ছিল। তিনি বলেন, “খাবার দেওয়ার সময় হয়েছে কিনা জানতে কিছু ক্ষণের জন্য দিদিমণিদের জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিলাম। ফিরতেই কয়েকজন পড়ুয়া আমাকে জানায় ঝুড়িতে রাখা ভাতে কুকুরে মুখ দিয়েছে।” তাঁর দাবি, সে কথা জানাতেই প্রধান শিক্ষিকা তাঁকে কুকুরে খাওয়া অংশটি ফেলে দিয়ে বাকি ভাত বিলি করে দিতে বলেন। চতুর্থ শ্রেণি ও প্রথম শ্রেণির কয়েকজন পড়ুয়ার অভিযোগ, “একটা কুকুর বারান্দায় উঠে ভাতে মুখ দিয়েছিল। সে কথা দিদিমণিদের জানালেও ওই ভাত বিলি করা হয়।”
ঘটনায় ক্ষুব্ধ ওই প্রাথমিক স্কুলের গ্রাম শিক্ষা কমিটির সদস্য মহম্মদ খোদারাখা, মোসারফ হোসেনরাও। তাঁদের পাশাপাশি অভিভাবকদের কয়েকজন নুর মহম্মদ আলি, নুরি বিবিদের অভিযোগ, “ছেলেরা বাড়ি ফিরতেই ঘটনার কথা জানায়। বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটি ছিল। তাই এ দিন দিদিমণিরা স্কুলে আসতেই আমরা তাঁদের জবাবদিহি চাই।”
বিক্ষোভের মুখে পড়ে প্রধান শিক্ষিকা ফজলে বেগম ভবিষ্যতে এমন ভুল হবে না বলে স্বীকার করেছেন। যদিও তাঁর দাবি, “আমি ভাত ফেলেও দিতে বলিনি, বিলি করতেও বলিনি।”
ফজলে বেগমের দাবি উড়িয়ে দিয়ে দুর্গাদেবীর বক্তব্যকেই কার্যত মেনে নিয়েছেন স্কুলেরই অন্য শিক্ষিকা লুৎফা বেগম। তিনি বলেন, “আমরা কেউই কুকুরকে খাবারে মুখ দিতে দেখিনি। পড়ুয়াদের থেকে ঘটনার কথা জানার পরও হেড দিদিমণি আমাকে খাবার বিলি করে দিতে বলেন। তাই ওই খাবার বিলি করা হয়েছিল।”
এ দিন স্কুলে পৌঁছে দেখা গেল, স্কুলের কর্মী ও শিক্ষিকাদের অসতর্কে যেকোনও দিন এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। কারণ, প্রাচীর না থাকার জন্য ওই স্কুল চত্ত্বরে কুকুর-ছাগল বা অন্যান্য প্রাণীরা অবাধে ঘুরে বেড়ায়। ফলে তাদের পক্ষে খাবারে মুখ দেওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
এই অবস্থায় ওই স্কুলে প্রাচীর তৈরির বিষয়ে কিশোরবাবুর বক্তব্য, “সর্বশিক্ষা মিশন থেকে বর্তমানে প্রাচীর তৈরির টাকা দেওয়া হয় না।” যদিও রামপুরহাট ১ ব্লকের বিডিও আবদুল মান্নানের আশ্বাস, “স্কুলের অরক্ষিত অংশে প্রাচীর তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|