ঘটনার দুই দিন পরেও মালদহের চাঁচলে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। গত শুক্রবার গভীর রাতে চাঁচল হাসপাতাল থেকে আবদুল আহাদ (১৯) নামে ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গলায় শ্বাস রোধ করে খুন করার দাগ ছাড়াও তার শরীরে নখের আঁচড়ের দাগও ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, চাঁচলের পাঞ্চালিপাড়া মাস্টার কলোনিতে এক পাতানো মামার বাড়িতে থেকে সে পড়াশুনা করত। তার বাড়ি কালিয়াচকের গয়েশবাড়ি এলাকায়। শুক্রবার রাতে দেহ উদ্ধারের পরে শনিবার নিহতের পরিবারের তরফে পাতানো মামা, মামি ও মামার শ্যালকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে কেন এই খুনের ঘটনা তা এখনও পরিষ্কারর নয়। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। কেন তাকে খুন করা হল, খুনের পিছনে কী কারন রয়েছে সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছর ধরে সে গোবিন্দপাড়া হাইস্কুলে পড়ত। পরিবারিক সম্পর্কের জেরে পাতানো মামা ফাইজুল হক এবং মামি বুলি বিবির কাছেই আহাদ থাকত। গত শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ আহাদকে হাসপাতালে রেখে মামী ও তার ভাই রাজু পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। তার পরে আহাদের বাবাকে টেলিফোন করে প্রথমে জানানো হয় যে আহাদ তড়িদাহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়ে চাঁচল হাসপাতালে আসতে বলা হয়। কালিয়াচক থেকে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এসে অভিযুক্তদের না দেখে তাঁদের সন্দেহ বাড়ে।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্ত ফাইজুল, তার শ্যালক রাজু এবং আহাদের বাবা মুক্তাদুর রহমান এক বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার কাজ করতেন। সেই সূত্রের তাঁদের মধ্যে পরিচিতি ছিল। ফাইজুলের বিরাট বাড়ি ছাড়াও বেশ কিছু গাড়িও রয়েছে। তবে তাঁরা এলাকায় লোকজনের সঙ্গে মিশতেন না বলে অভিযোগ। দুটি পরিবারের মধ্যে টাকাপয়সা সংক্রান্ত কোনও গোলমাল, নাকি এর পিছনে ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতা ছিল না পুলিশ খতিয়ে দেখছে। নিহতের বাবা মুক্তাদুর রহমান বলেন, “ছেলেকে খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই তড়িদাহত হওয়ার গল্প ফাঁদা হয়। পুলিশ সত্য খুঁজে বার করুক।” অভিযুক্তদের তরফে ফাইজুলের মা ফুলবানু বিবি বলেছেন, “ছেলে বৌমা কোথায় গিয়েছে বলতে পারব না।” |