সিটি অটো চালকদের কাছ থেকে টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (সমতল) সভাপতির অনুগামীদের সঙ্গে আইএনটিইউসি’র জেলা সভাপতি গোষ্ঠীর বিরোধ চরমে উঠেছে বাগডোগরায়। রবিবার জেলা সভাপতির গোষ্ঠীর পক্ষ থেকেই বাগডোগরা থানায় অপর গোষ্ঠীর নামে এফআইআর করা হয়। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের অনুগামী হিসেবে পরিচিত ড্রাইভার্স অ্যান্ড হেল্পার্স অটো ইউনিয়নের সভাপতি অতনু সেনের দাবি, কোনওরকম অনুমতি না নিয়ে ইউনিয়নের নামে রসিদ ছাপিয়ে অটো চালকদের কাছ থেকে টাকা তুলছেন সংগঠনের কয়েকজন কর্মী। পক্ষান্তরে, আইএনটিউসির দার্জিলিং জেলা সভাপতি অলোক চক্রবর্তীর গোষ্ঠীর নেতা তথা ওই সংগঠনের সম্পাদক অমল রায়ের দাবি, অতনুবাবুরা তিন লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে তাঁর কোনও হিসেব দিতে পারছেন না। তাই তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। আইএনটিইউসি নেতা অলোকবাবু বলেন, “সংগঠনের সদস্য চালক ও খালাসিদের সাহায্য করার জন্যই তাঁদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হয়। তাঁর পূর্ণ হিসেব রাখা হয়। কিন্তু ৩ লক্ষ টাকার হিসেব দিতে পারেননি অতনুবাবু। সে জন্য তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অমলবাবু সংগঠনের নির্দেশেই চাঁদা তুলছেন। তাঁদের নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর অনুগামী হিসেবে পরিচিত বাগডোগরা অঞ্চল কংগ্রেস সভাপতি অমিতাভ সরকার বলেন, “অলোকবাবু চাঁদা তোলা ছাড়া কোনও কাজ করেন না। তিনি চাঁদা থেকে কমিশন নেন। সে জন্য খারাপ লোকদের তিনি দায়িত্ব দিতে চাইছেন। সংগঠনটা আমাদের করতে হয়। অতনুবাবু সংগঠনের সভাপতি। তাঁকে না জানিয়ে রসিদ ছাপিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে। তার কোনও হিসেব নেই। এটা কোনওভাবেই মানা যায় না। তাই এফআইআর করা হয়েছে।” সংগঠন সূত্রের খবর, গত প্রায় দেড় বছর ধরে বাগডোগরার ড্রাইভার্স অ্যান্ড হেল্পার্স সিটি অটো ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন অতনু সেন। অমলবাবুদের অভিযোগ, তাঁর সময়ে তোলা তিন লক্ষ টাকার মধ্যে ১৯ হাজার টাকার খরচের হিসেব দেখানো হয়েছে। আর ব্যাঙ্কে রয়েছে ৩২ হাজার টাকা। বাকি টাকার কোনও হিসেব নেই। গত ৫ নভেম্বর বিষয়টি নিয়ে জেলা দফতরে মিটিং করে ওই সংগঠনের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন আইএনটিইউসি জেলা সভাপতি। সেখানে অমলবাবুকে সম্পাদক করা হয়। পুরনো সম্পাদক মহম্মদ সেকেন্দরকে সহ সভাপতি ঘোষণা করা হয়। অতনুবাবুকে অবশ্য সভাপতির পদেই রাখা হয়। অতনুবাবু অবশ্য তিন লক্ষ টাকা তোলার কথা অস্বীকার করেননি। তিনি জানান, চাঁদা তোলা সহ ইউনিয়নের কাজ করার জন্য তিন জন কর্মী রয়েছেন। তাঁদের দৈনিক হাজিরা হিসেবে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। চালকদের দুর্ঘটনা সহ নানা সমস্যায় ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “পুরো টাকার হিসেব রয়েছে আমার কাছে। সব আইএনটিউইসি জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি। অসুস্থ এক অটো চালককে শনিবার পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের জেলা সভাপতি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নিজের কিছু লোককে দিয়ে চাঁদা তোলানোর চেষ্টা করছেন। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করাতেই আমার বিরুদ্ধে নানা কথা বলছেন।” শিলিগুড়ির কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তা বলেন, “ওই ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |