ভাগিরথীতে পুরসভার ফেরিঘাটে নৌকা পারাপারে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল জঙ্গিপুরে। শনিবার রাশি জৈন নামে এক ছাত্রী রঘুনাথগঞ্জ থেকে টিউশন থেকে ফেরার পথে ভুটভুটিতে করে বাড়ি ফিরছিল। কিন্তু মাঝনদীতে যাত্রীভারে ভুটভুটিটি এক দিকে হেলে পড়ে। জল ঢুকে যায় ভিতরে। এতেই ওই ভুটভুটিটি ডুবে গেলে রাশি জৈন নামের ওই ছাত্রী তলিয়ে যায়। রবিবারও তার কোনও খোঁজ মেলেনি। এই ঘটনায় ঘাট পারাপার নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে ছুটে যান জঙ্গিপুরের এসডিপিও ওয়াংদেন ভুটিয়া। তাঁর কাছে নৌকা চলাচলে নিরাপত্তার অভাবের কথা জানিয়ে বিক্ষোভ দেখান লোকজন। এসডিপিও আশ্বাস দেন, “ভবিষ্যতে এ রকম দুঘর্টনা এড়াতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জঙ্গিপুর ও রঘুনাথগঞ্জ এই দুই শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভাগিরথী। এই নদীর উপরে নৌকা পারাপারের জন্য রয়েছে সদর ঘাট ও গাড়ি ঘাট নামে দুটি ফেরি ঘাট। ঘাট দুটি জঙ্গিপুর পুরসভার নিয়ন্ত্রণে। প্রতি বছরই নিলামে ওই ঘাট দু’টিকে ইজারা দেওয়া হয়। এ বছর ১৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এক ব্যক্তি ইজারা নিয়েছেন। দুটি ফেরিঘাটে শ’খানেক নৌকা চলে। সদরঘাটে চলে দাঁড় ও হালের সাহায্যে দেশি নৌকা। কিন্তু গাড়ি ঘাটে চলে ইঞ্জিনচালিত ভুটভুটি। এই ভুটভুটি করে পারাপারে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। জঙ্গিপুর কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম রেজা বলেন, “দুটি শহরের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে সেতু থাকলেও, ছাত্র-ছাত্রী-সহ শহরবাসী নদীতেই পারাপার করেন। কারণ সেতু ব্যবহার করলে অনেকটা পথ ঘুরতে হয়। পুরসভার নিয়ম ২০ জনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না। কিন্তু সে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই নৌকাগুলি গড়ে ৩৫-৪০ জন করে যাত্রী বহন করে। এই অতিরিক্ত যাত্রী বহনের জন্যই দুর্ঘটনায় নদীতে তলিয়ে গেছে এক ছাত্রী।” কলেজের পূর্বতন সাধারণ সম্পাদক এসএফআই-য়ের দেবাশিস রায় বলেন, “দুর্ঘটনা এড়াতে দুটি ঘাটেই পুলিশি পাহারা থাকার কথা থাকলেও, অনেকদিন ধরেই তা নেই।”
স্থানীয় কাউন্সিলর কংগ্রেসের বিকাশ নন্দ বলেন, “গাড়ি ঘাটে চলা ভুটভুটিগুলির চালকেরা অল্পবয়সী। তাদের কোনও প্রশিক্ষণও নেই। ফলে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে। ঘাটের নিজস্ব নৌকা থাকলেও তা রাখা হয়নি। পুরপ্রধানকে সমস্ত কিছু জানানো সত্ত্বেও তিনি ইজারাদারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না।” জঙ্গিপুর পুরসভার পুরপ্রধান সিপিএমের মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “অতিরিক্ত যাত্রী বহনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ এসেছে। সুষ্ঠুভাবে পারাপারের ব্যাপারে পুরসভা ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু নজরদারির জন্য পাহারা বসানো পুরসভার কাজ নয়। এ ক্ষেত্রে পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হবে।” |