নির্বিঘ্নে শেষ হল বেলডাঙার কার্তিক লড়াই। শনিবার জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ বেলডাঙায় ভিড় করেন। শনিবার দুপুর থেকেই কার্তিক লড়াই দেখতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ছিল। শেষ পর্যন্ত কার্তিক লড়াইকে ঘিরে যে উদ্দীপনা তা জনজোয়ারে পরিণত হয়।
তার আগে শুক্রবার ছিল কার্তিক পুজো। ওই সন্ধ্যায় বেলডাঙা পুর-এলাকার ভিড়, গত কয়েক বছরের দুর্গাপুজোকেও হার মানায়। প্রতি বছরের মত এবারও কার্তিক লড়াইয়ের মূল আকর্ষণ ছিলবাথানগড়ের বুড়ো শিব। এর পাশাপাশি বাবু কার্তিক, হাতি কার্তিক, রাজ কার্তিক, ছোট ল্যাংটা কার্তিককে ঘিরেও দর্শক-সাধারণের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা ছিল। এ ছাড়াও ছিল ভৈরব, ষাঁড়ের উপরে শিব, নীল ভৈরব, ধ্যানস্থ শিব, চার হাতের সরস্বতী, শিবদুর্গা, নারায়ণ, রাম, শ্রীচৈতন্য, বাবা লোকনাথ, রামকৃষ্ণ, শ্রীরাম, মহামায়া, নটরাজ, বিশ্বরূপ, গণেশ, গণেশ জননী, বুড়ো শিব, নানা রূপের কৃষ্ণ।
শহরের প্রধান রাস্তাগুলির দু’দিকের নর্দমা কাঠের পাটাতন দিয়ে ঢেকে দেওয়া থেকে নর্দমায় ছড়ানো হয় ব্লিচিং ও চুন। প্রতিটি মোড়ে পানীয় জলের ব্যবস্থা, প্রধান চারটি মোড়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা এবং ওই মঞ্চ থেকে সমগ্র উৎসবের ধারাবিবরণী মাইকে প্রচার করাও হয়ে থাকে। এছাড়াও অস্থায়ী চিকিৎসা পরিষেবার বন্দোবস্ত ছিল। শোভাযাত্রার রাস্তায় ছিল বিকল্প আলো এবং জেনারেটর। প্রতিমা নিরঞ্জনের বিভিন্ন পুকুর লাগোয়া পাড় পর্যাপ্ত আলো দিয়ে সাজানো হয়। কার্তিক লড়াই আসলে দুপুর ২টো থেকে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত ১৫-১৮ ফুটের উচ্চতার প্রতিমার প্রধান মোড় দখলের লড়াই। ওই লড়াই প্রতিমার অভিনবত্বের। লড়াই বাদ্যযন্ত্রের। শোভাযাত্রা বড় করার লড়াই। বেলডাঙার পুরপ্রধান কংগ্রেসের অনুপমা সরকার বলেন, “এবার কার্তিক লড়াই শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে। জনসমাগম অন্য বারের তুলনায় বেশি হয়েছে বলেই অনুমান। আসলে কালীপুজো, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও কার্তিক লড়াই পিঠোপিঠি তাই দর্শনার্থী সংখ্যা বেশি ছিল বলেই মনে হয়েছে।” দর্শনার্থীদের পছন্দের তালিকায় অবশ্য বাথানগড়ের বুড়ো শিব, রক্ষমাতলার ষাঁড়ের উপরে শিব, শ্রীচৈতন্য, গুলপিতলার শিব, চার হাতের সরস্বতী, বড় কমলাকামিনী-সহ বেশ কয়েকটি ভৈরব ছাড়া বাবু কার্তিক, রাজ কার্তিক, হাতি কার্তিক, গণেশ রয়েছে। |