পাট বিক্রির টাকায় জমছে বাজার
মহরমের প্রস্তুতি শুরু
কুলুঙ্গির ভেতরে টাকা কটা সযত্নে গুছিয়ে রেখেছিলেন সোলেমানের মা। সোলেমানের বাবা কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ঈদে বাড়ি এসেছিলেন। সারা বছরের আয়ের টাকা তুলে দিয়েছেন স্ত্রীর হাতে। সংসারের সব খরচ সামলে তার থেকেই কিছু টাকা তিনি কুলুঙ্গির ভেতরে সরিয়ে রেখেছিলেন মহরমের খরচের জন্য। শুধু সোলেমানের মা নয়, নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিম মহল্লাগুলি মহরমের আনন্দে মেতে ওঠার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।
এখন উৎসব মরশুম চলছে। ওই উৎসবের সারণী বেয়েই দোরগোড়ায় মহরম। অন্য বছরের মতোই এ বারও মহরম উৎসবের জোয়ারে গা ভাসাবেন নদিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
এবার বর্ষা এসেছে। দেরিতে। আবার উৎসবও এসেছে দেরিতে। কৃষকদের হাতে এখন পাট বেচার টাকা। সেই টাকা তারা অনায়াসে খরচ করতে পারছেন মহরমের বাজারে। চাপড়ার লক্ষ্মীডাঙার বাসিন্দা সহিদুল্লা মণ্ডল যেমন বলেন, “এবার পাট বিক্রির টাকা গ্রামাঞ্চলের মানুষের হাতে রয়েছে, তা দিয়েই কেনাকেটার বাজার জমেছে।” কৃষ্ণনগরের করিম খানের ব্যাখ্যা আবার একটু অন্য। তিনি বলেন, “এই জেলার বহু মানুষ এখন রাজ্যের বাইরে চলে যান কাজ করতে। তাঁদের বেশির ভাগই ঈদের সময়ে বাড়ি ফেরেন। কিছু দিন পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে আবার তাঁরা ফিরে গিয়েছেন কাজের জায়গায়। অনেকে মহরমের পরে ফিরবেন।” তাঁর কথায়, “তাঁরা কিন্তু আয়ের টাকা গচ্ছিত করে সংসার খরচের জন্য রেখে যান। ফলে এখন অধিকাংশ পরিবারের হাতে সেই অর্থ রয়েছে। সেই অর্থের কিছুটা অংশ তাঁরা মহরমের উৎসবেও খরচ করবেন।”
নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে মহরম উপলক্ষে মেলা বসে। আর এলাকার মানুষের অংশগ্রহণে সেই সব মেলাগুলি জমজমাট হয়ে ওঠে। বিশাল মেলা বসে ধুবুলিয়ার সোনডাঙায়। পাঁচ দিন ধরে সেই মেলা চলে। কৃষ্ণনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের ফজলুর রহমান বিশ্বাস বলেন, “আমাদের এলাকার বহু মানুষ কেরলে যান কাজ করতে। তাদের অনেকেই কিন্তু মহরমের সময়ে বাড়ি ফিরে আসেন। ফলে তাঁরা বাড়ি ফিরে আসায় সেই সমস্ত পরিবারে খুশির মহল তৈরি হয়। এর পাশাপাশি মহরম উপলক্ষে গোটা এলাকাও উৎসবে সামিল হয়।”
খুশির ব্যবসায়ী মহলেও। নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সহ সম্পাদক অক্ষয় ভট্টাচার্য বলেন, “মহরমে শহর এলাকায় তেমন কোনও প্রভাব না পড়লেও গ্রামাঞ্চলের দিকে ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব পড়ে। কারণ বহু এলাকায় মেলা বসে। এ ছাড়া এই সময়ে মানুষ উৎসবের মেজাজে থাকায় তারা প্রাণ খুলে কেনাকাটা করেন। জেলার অর্থনীতিতে তার প্রভাবও পড়ে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.