তেহট্ট নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছেই। রবিবার মেদিনীপুরে সিপিএমের বর্ধিত সভায় এসেছিলেন বিমান বসু। সেখানে তিনি বলেন, “যদি ছবিটা না থাকত, পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা এ বারও অস্বীকার করে যেতেন মুখ্যমন্ত্রী।” তাঁর কথায়, “রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। মহিলাদের উপর নির্যাতনে রাজ্য প্রথম হয়েছে। মেডেল পেয়েছে।” রেলপ্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীও এই দিন বহরমপুরে বলেন, “তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। ফলে কোন উপদলের কথা শুনবে তা নিয়ে পুলিশ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। তার ফলেই পুলিশ একের পর এক ভুল করছে। আমার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ কোন উপদলের কথা শুনে পুলিশ চলবে তা আপনি জানিয়ে দিন।”
নদিয়ার মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তেহট্টে সিপিএমই পরিকল্পিত ভাবে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।” তেহট্টের ঘটনার তদন্তে নেমে সিআইডির গোয়েন্দারা কথা বলেছেন গুলি চালানোয় অভিযুক্ত এসডিপিওর সঙ্গে। শনিবার রাতের পরে রবিবার ফের তেহট্টের ঘটনাস্থলে যান সিআইডি’র স্পেশ্যাল সুপার চিরন্তন নাগের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল। গত বুধবার পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার সময় হাউলিয়া মোড়ে ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে তাঁরা এই দিন কথা বলেন। ঘুরে দেখেন তেহট্টের বিভিন্ন জায়গা। চিরন্তনবাবু বলেন, “আমরা এসডিপিও সহ সেদিন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি।”
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় সিআইডির কাছে এসডিপিও এবং ওই পুলিশকর্মীরা ঘটনার জন্য উত্তেজিত জনতাকেই দায়ী করেছেন। এমনকী, কী পরিস্থিতি সেদিন গুলি চালাতে হয়েছিল তারও ব্যাখ্যা দেন তেহট্টের অভিযুক্ত এসডিপিও। শনিবার রাতেই তেহট্ট থানা থেকে তদন্তের প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করেন সিআইডির গোয়েন্দারা। ভবানীভবন সূত্রে খবর, সিআইডির ডেপুটি সুপার (স্পেশাল) এই ঘটনার তদন্ত করবেন।
তেহট্ট অবশ্য অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। পিডব্লিউডি মোড় থেকে এক হাজার মিটার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে এখনও। মোড়ে মোড়ে পুলিশও রয়েছে। তবে রবিবার তেহট্টের সর্বত্রই দোকানপাট, বাজার খোলা ছিল। সে দিন পুলিশের গুলিতে আহত সুধাময় ঘোষের চিকিৎসা চলছে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে। ওই হাসপাতালের সুপার স্বপন সাঁতরা বলেন, “সুধাময়বাবু এখন অপেক্ষাকৃত ভাল রয়েছেন। তাঁর চিকিৎসার সমস্ত খরচই দিচ্ছে রাজ্য সরকার।” |