চায়ের বিরতিতে ক্যাচ প্র্যাক্টিস দেওয়ার সময় ডব্লিউ ভি রামনের একটা শটের ধাক্কায় সাজঘরের সামনে ‘বেঙ্গল টিম’ লেখা বোর্ডটা মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। সাজঘর থেকে দৃশ্যটা দেখেছিলেন মনোজ তিওয়ারি? দিনের শেষে দেখা গেল বাংলাকে টেনে তুললেন সেই অধিনায়কই।
শেষ দিকে যখন ঘন ঘন আলোর বিচারে ব্যস্ত আম্পায়াররা, তখনই রুস কালেরিয়ার বল ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের ১৭ নম্বর সেঞ্চুরিটা সেরে ফেললেন মনোজ। এই এক সেঞ্চুরিতেই ফের মাথা উঁচু বাংলার। যদিও বাংলা গুজরাতের চেয়ে ৪০ রান দূরে, তবে তিন পয়েন্ট সুরক্ষিত। এ বার ছ’পয়েন্টের ভাবনায় অসুবিধা কী? “সরাসরি জয়ের কথা তো এ বার আমরা ভাবতেই পারি”, ইডেন থেকে ঘরমুখো হওয়ার পথে রবিবার সন্ধ্যায় বললেন দিনের নায়ক। তাঁর ইচ্ছা সোমবার যথাসম্ভব দ্রুত পাহাড়প্রমাণ ব্যবধান গড়ে নিয়ে ইনিংস ছেড়ে দেওয়া। কিন্তু সেই পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছনোর পর পার্থিবদের ইনিংসের নটেশাক মুরিয়ে দিতে পারবেন তো বাংলার বোলাররা? ইডেন পিচের চরিত্রে যা অনিশ্চয়তা, তাতে এই পিচই না ‘বেওয়াফা’ হয়ে উঠে দিন্দা, সামি, সৌরভদের ধোঁকা দেয়। |
এটাও মনে রাখা দরকার যে, আগের দুই ম্যাচে গুজরাতিরা তিন ইনিংসে বারোশো’র বেশি রান করেছেন। যে পিচকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির আবদারে ‘টার্নার’ বানানোর হুকুম দিয়েছে বোর্ড, এ কিন্তু সেই পিচ।
রবিবার গুজরাতকে ২৬০ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর বাংলার ‘পরীক্ষামূলক’ ওপেনিং জুটি পার্থসারথি ভট্টাচার্য ও শ্রীবৎস গোস্বামী যখন ১৯ রানের মধ্যেই সাজঘরে ফিরে এসেছেন, তখনই মনোজ ও শুভময় হাল ধরলেন। শুরুর ধাক্কাটা তাঁদের ১০১ রানের পার্টনারশিপ সামলে দেওয়ার পর মনোজ-ঋদ্ধিরা বোর্ডে যে ৭৮ রান জুড়লেন, তাতে দুশোর গোড়ায় বাংলা। একবার মনোজের ব্যাটের কানা ছোঁওয়া বল দুই স্লিপের মধ্যে দিয়ে উড়ে গেল, আর একবার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা রান আউটের জোরালো আবেদন টিভি আম্পায়ারের ভূমিকায় থাকা ম্যাচ রেফারি ফিরোজ ঘায়াস নাকচ করে দেন। এই দুই ফাঁড়া কাটিয়ে মনোজের ১০২ রানের ইনিংস ঝরঝরে। বললেন, “বেশ চাপ ছিল। তার মধ্যে এমন একটা সেঞ্চুরি করতে পারা অবশ্যই তৃপ্তির।” মনোজের এই সেঞ্চুরি ইডেনে এক জাতীয় নির্বাচক বসে দেখলেও হয়তো পরের বৈঠকে তাঁর নাম তাঁদের খাতায় উঠবে না। কিন্তু বাংলাকে তো টেনে তুললেন। এটাই সান্ত্বনা।
|