নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
ভাড়া নিয়ে গোলমালের জেরে এমনিতেই রবিবার থেকে হুগলি জেলা জুড়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বাস মালিকেরা। এ দিকে, বলুন্ডি গ্রামে এক বাসকর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে গত চার দিন ধরে আরামবাগ-মলয়পুর রুটের (৩০ নম্বর) বাস বন্ধ। লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল নামে ওই বাসকর্মীর (হেল্পার) চিকিৎসা চলছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। এ দিকে, বাস বন্ধের জেরে গত কয়েক দিন ধরেই দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের।
মারধরের ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার। অভিযুক্ত যুবক আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার আত্মীয়। ৩০ নম্বর রুটের বাস কর্মচারী সংগঠনের সম্পাদক তাজেল আলির অভিযোগ, ঘটনার রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। উল্টে তাঁদের উপরেই পুলিশ ও রাজনৈতিক মহল থেকে ‘চাপ’ আসছে। বিধায়ককে জানানো হয়েছিল পুরো বিষয়। তিনিও গুরুত্ব দিতে চাননি বলে দাবি তাজেলের। অভিযোগ আছে আরও। বাসকর্মীদের দাবি, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই বাসের কন্ডাক্টর সুকুমার মালিক। স্থানীয় তৃণমূল কার্যালয়ে ঘটনাটি জানাতে গেলে তাঁকে থাপ্পড় খেতে হয়েছে।
কৃষ্ণচন্দ্রবাবু বলেন, “মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ওঁদের বাস বন্ধ করতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা সে কথা শোনেননি। কোনও আলোচনাতেও বসছেন না।” বিধায়কের আরও বক্তব্য, “অভিযুক্তেরা আমার প্রতিবেশীই হোক বা আত্মীয় পুলিশকে আইনসঙ্গত ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। কিন্তু আগে বাসটা চলুক।” পুলিশের দাবি, ঘটনার কথা জানাতে কেউ থানায় আসেননি। মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছিল। লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার রাত ৮টা নাগাদ আরামবাগ থেকে মলয়পুর যাচ্ছিল বাসটি। বলুন্ডি গ্রামে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে কয়েক জন যুবক জটলা করছিল। টুকাই রায় নামে ভালিয়া গ্রামের এক নিত্যযাত্রী যুবকদের পথ ছাড়তে বলেন। টুকাইবাবুর অভিযোগ, তাঁকে গালিগালাজ করে ওই যুবকেরা। বাসে উঠে ‘সিপিএমের দালাল’ বলে সম্বোধন করে মারধরও করা হয়। প্রতিবাদ করে প্রহৃত হন লক্ষ্মীকান্ত। তিনি বলেন, “আমাকে মারতে মারতে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়।” |