ভাঙা সেতুর উপর দিয়েই চলছে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত
সেতু তৈরি হয়েছে। তৈরি করেছে কে, তা নিয়ে সরকারি দফতরে নির্দিষ্ট তথ্য নেই। কিছু জানে না জেলা পরিষদ। সেতুর দু’পাশে আবার রেলিং নেই। এর ফলে সেতু থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কে সারাবে, তাই জানা যাচ্ছে না।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সেতুটির কাজ অসম্পূর্ণ রাখার জন্যই এই পরিস্থিতি। অবিলম্বে সেতুর দুই দিকে রেলিং দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। চিত্রটি দেখা যাবে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের পোলগুস্তিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌরীপুর গ্রামে।
সেতুটি কানা নদীর উপরে। এক সময়ে সেতুটি ছিল কাঠের। কিন্তু তা নষ্ট হয়ে যায়। গ্রামবাসীরা নতুন কংক্রিটের সেতু তৈরির জন্য বিভিন্ন মহলে আবেদন করেন। সেই দাবির ভিত্তিতেই প্রায় ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যের পাকা সেতুটি তৈরি করা হয়। সেচ দফতরের আমতা সাব ডিভিশনের এসডিও স্বপন দত্ত বলেন, “আমাদের দফতর থেকে এটা করা হয়নি। কারণ আমাদের তৈরি সব কংক্রিটের সেতুতেই রেলিং দেওয়া হয়েছে। মনে হয় এটা জেলা পরিষদের কাজ।” অন্য দিকে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আনন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।”
ছবি: সুব্রত জানা।
সেতুর দু’দিকে রেলিং না থাকায় এর উপর দিয়ে চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক দেখা দেয়। তাঁদের বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা চলাচল করতে হয় বলে গ্রামবাসীরা জানান। সেতুটি পোলগুস্তিয়া এবং গোবিন্দপুর এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে যুক্ত করেছে। দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অন্তত ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। সেতু পার হয়ে সিদ্ধেশ্বর থেকে বহু গ্রামবাসী বাস বা ট্রেকারে চেপে ধুলাগড়ি হয়ে কলকাতায় যাতায়াত করেন। সবজি নিয়ে ভ্যান রিকশা চলাচল করে। এ ছাড়াও অসংখ্য মোটরবাইক এবং সাইকেল চলাচল করে এই সেতুর উপর দিয়ে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুল্যান্সও সেতু পার হয়েই হাসপাতালে যায়।
গ্রামবাসীরা জানান, সেতুর উপর থেকে পড়ে গিয়ে অনেকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। রাত্রিবেলা অন্ধকারে সাইকেলে চেপে যাতায়াত করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই এলাকায় রয়েছে গোবিন্দপুর অনুরাগ বিদ্যামন্দির, রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ এবং গৌরীপুর রবীন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় নামে তিনটি স্কুল। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ ফরিদুল, মারুফ মল্লিক, শেখ সঈদুলেরা বললেন, “বিশেষ করে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা সাইকেল নিয়ে এই সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করার সময় অভিভাবকেরা বেশ চিন্তায় থাকেন। সেতুটি অসম্পূর্ণ রাখা হল কেন বুঝতে পারছি না।” স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সরিফুল ইসলাম বলেন, “আমরা জেলা পরিষদ ও সেচ দফতের কাছে অনেক বার জানিয়েছি কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।”
কানা নদী বর্তমানে কার্যত মজে গিয়েছে। বেশিরভাগ সময়ে জল থাকে না। বর্ষার সময়ে অবশ্য নদীর অবস্থা ভয়ংকর থাকে। সে সময়ে সেতু পার হতে গিয়ে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হয় গ্রামবাসীদের।
তাঁরা জানালেন, বর্ষায় অনেকেই সেতু এড়িয়ে অনেকটা ঘুরপথে যাতায়াত করেন। সাইকেলে চেপে সেতু পার হতে গিয়ে নীচে পড়ে জখম হয়েছেন গৌরীপুরের বাসিন্দা রবিন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, “জল ছিল না। ফলে মাটিতে পড়ে যাই। অনেক দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছিল। ভাগ্য ভাল, বর্ষাকালে দুর্ঘটনা ঘটেনি।” এই রকম দুর্ঘটনা আরও ঘটেছে বলে গ্রামবাসীরা জানালেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.