অনাস্থা প্রস্তাব
প্রয়োজনীয় সমর্থন পাবেন কি মমতা, সংশয়ে বাম-বিজেপি
০ জন সাংসদ কোথায় পাবেন মমতা? তৃণমূল কংগ্রেসের আনা অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে না দাঁড়িয়ে এখন এই প্রশ্নকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বাম নেতারা। একই প্রশ্ন তুলছেন বিজেপি নেতৃত্বও।
কেন্দ্রের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারকে বাঁচানোর দায়িত্ব তাঁরা নিতে চান না বলে স্পষ্ট জানালেন সিপিআই সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত। রবিবার কলকাতায় তিনি বলেন, “তৃণমূল বা যে দলই অনাস্থা আনুক, সরকারকে বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদের নেই।” অর্থাৎ তাঁরা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষেই ভোট দেবেন। কিন্তু পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গেলে যে ৫০ জন সাংসদের সমর্থন দরকার হয়, সেই সংখ্যা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জোগাড় করতে হবে!” গুরুদাসবাবুর মতোই প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুও। এ দিন মেদিনীপুরে দলের বর্ধিত সভায় এসেছিলেন বিমানবাবু। তৃণমূলের অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অনাস্থা আনছেন কোথায়? অনাস্থার মনোভাব প্রকাশ করেছেন। অনাস্থা আনতে গেলে ১৯ জনের সইয়ে হয় না। ৫০ জনের সই প্রয়োজন। আমরা মন ভোলানো কথা বলি না।”
অনাস্থা প্রস্তাবে সমর্থনের জন্য ইতিমধ্যেই মমতা বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করেছেন। এ দিন কলকাতায় বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুরলীমনোহর জোশী জানিয়েছেন, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য মমতা লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজকে ফোন করেছিলেন। তৃণমূল নেত্রীর প্রস্তাব নিয়ে এনডিএ-র বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি। তবে কত জন সাংসদকে মমতা জোগাড় করতে পারবেন, তা নিয়ে জোশীরও সংশয় আছে। তাঁর কথায়, “অনাস্থা প্রস্তাব আনলে তা এমন ভাবেই আনা উচিত, যাতে কেন্দ্রীয় সরকারের পতন নিশ্চিত হয়। অর্থাৎ অনাস্থা আনার এবং তার জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করা উচিত। না হলে সরকার পড়বে না এবং নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী ছ’মাস আর অনাস্থা আনাও যাবে না। তাতে সরকারেরই লাভ হবে। সুতরাং, খুব সতর্ক ভাবে পা ফেলতে হবে।”
মমতার অনাস্থার হুমকিকে কটাক্ষ করে এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেন, “উনি কি জানেন না ১৯ জন সাংসদ নিয়ে অনাস্থা আনা যায় না? অন্ধ কংগ্রেস বিরোধিতার নামে নীতিজ্ঞানহীন রাজনীতি করে দ্বিচারিতা করছেন মমতা।” সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই কেন্দ্রীয় সরকারের উপর অনাস্থা আনতে চায় তৃণমূল। আর সেই দিন রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ, ধিক্কার দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস।
অনাস্থা প্রস্তাবে বিজেপিকেও পাশে পেলে ক্ষতি নেই বলে শনিবার মহাকরণে জানিয়েছিলেন মমতা। কারণ তাঁর মতে, অনাস্থা প্রস্তাব কোনও ধর্মীয় বিষয় নয়। এ দিন প্রায় মমতার সুরে গুরুদাসবাবু জানিয়েছেন, সংসদে সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরতে সমস্ত দলের সক্রিয় সমর্থন তাঁরা চান। তিনি বলেন, “সংসদে কোনও সদস্যই অচ্ছুৎ নন।” কিন্তু মমতার এই উদারতার তত্ত্বে পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছে না বিজেপি। জোশী বলেন, “মমতাজি কখনও অস্পৃশ্যতায় বিশ্বাস করেন। কখনও করেন না। ফলে উনি কী করবেন জানি না। যদি এফডিআই নিয়ে আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে আসেন, আপত্তি নেই।”
শেষ পর্যন্ত তৃণমূল অনাস্থা আনতে সফল হবে না বলেই কংগ্রেস ও অনেক বাম নেতার অনেকেরই ধারণা। ইতিমধ্যেই এফডিআই নিয়ে ভোটাভুটির জন্য প্রস্তাব দিয়েছে সিপিএম। কিন্তু অপর বাম দল সিপিআই অন্যরকম ভাবে বিষয়টি দেখছে। দলের নেতারা মনে করেন ভোটাভুটি করে সরকার ফেলে দেওয়া যাবে না। বরং বর্তমানে যে আর্থিক সঙ্কট চলছে তা নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে আলোচনা অনেক বেশি জরুরি বলে জানিয়েছেন গুরুদাসবাবু। গত অধিবেশনে অধিকাংশ দিনই সভার কাজ বন্ধ থাকায় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটেছে। আসন্ন অধিবেশনে তার পুনরাবৃত্তি চান না তিনি। কারণ
ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য ইউপিএ সরকার দায়ী। সংসদের মতো একটা জাতীয় মঞ্চে এই সরকারের মুখোশটা খুলে দেওয়া দরকার।” দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়ে সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন গুরুদাসবাবু।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.