|
|
|
|
বিঁধলেন ক্যাগের রিপোর্টকেও |
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-কেন্দ্র বিরোধ নেই, দাবি চিদম্বরমের |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
কয়লা ব্লকের অনিয়ম থেকে শুরু করে কেন্দ্র-রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) মতবিরোধ, বিভিন্ন বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুললেন পি চিদম্বরম। এক দিকে, দলীয় ‘লাইনে’ হেঁটেই সরাসরি তোপ দাগলেন কয়লা ব্লক নিয়ে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটরস জেনারেলের (সিএজি) রিপোর্টের বিরুদ্ধে। আর অন্য দিকে, শীর্ষ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর তিক্ত হয়ে ওঠা সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কে জল ঢেলে তাঁর দাবি, কোনও দ্বন্দ্বই নেই! দেশের আর্থিক স্বার্থরক্ষায় দু’পক্ষই নিজের নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে যুক্তি দিচ্ছে মাত্র।
সুদের হার ও বেসরকারি সংস্থাকে ব্যাঙ্কের লাইসেন্স দেওয়া-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সাম্প্রতিককালে কেন্দ্র এবং আরবিআই-এর অবস্থান ভিন্ন মেরুতে। চিদম্বরম চাইছেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়াতে সুদ কমিয়ে শিল্পের জন্য ঋণ সহজলভ্য করুক শীর্ষ ব্যাঙ্ক। কিন্তু আরবিআই গভর্নর ডি সুব্বারাওয়ের মতে, এখনও সেই সময় আসেনি। কারণ মূল্যবৃদ্ধির হার যথেষ্ট বেশি। সুদ কমালে তা আরও বেড়ে যেতে পারে।
এই নিয়ে যখন দু’পক্ষের সম্পর্ক তেতো হওয়ার বিতর্ক ক্রমশ দানা বাঁধছে, তখনই মুখ খুললেন অর্থমন্ত্রী। উড়িয়ে দিলেন যাবতীয় জল্পনা। বরং তাঁর দাবি, এ সবে কান দেওয়া অর্থহীন। দু’পক্ষই আসলে তাদের নিজের কাজের স্বপক্ষে যুক্তি দিচ্ছে। যা খুব স্বাভাবিক। যেমন তাঁর মতে, সরকারের লক্ষ্য দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়ানো। আরবিআই-এর কাছে মূল বিষয় হল মূল্যবৃদ্ধি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা। এবং বিশ্বের যে কোনও দেশে এটাই দস্তুর। অন্য দেশে সরকার ও শীর্ষ ব্যাঙ্কের মধ্যে যে সম্পর্ক, ভারতেও সেটাই রয়েছে বলে দাবি তাঁর। আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়াতে সরকার যদি শীর্ষ ব্যাঙ্কের সাহায্য চায়, তাতেও বিতর্কের কিছু দেখছেন না তিনি। তাঁর বক্তব্য, সুুদের হার কমানোর পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকেও লগ্নি করতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
তবে বেসরকারি সংস্থাকে নতুন ব্যাঙ্ক খোলার লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে তিনি যে নিজের পুরনো অবস্থানেই অনড়, তা-ও এ দিন ফের পরিষ্কার করে দিয়েছেন চিদম্বরম। কিন্তু আইন সংশোধন না হলে ও সংস্থাগুলির উপর নজরদারির ক্ষমতা না পেলে এখনই বেসরকারি সংস্থার আবেদন নিতে নারাজ সুব্বারাও।
চিদম্বরমের দাবি, আরবিআই আবেদন পাওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন হয়ে যাবে। এবং আইনে এখনই নজরদারির যথেষ্ট ক্ষমতাও রয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্কের। শুধু শীর্ষ ব্যাঙ্কের সঙ্গে মতবিরোধ নয়, দুর্নীতির নানা অভিযোগেও সাম্প্রতিককালে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছে কেন্দ্র। চিদম্বরম এ বার সরব হয়েছেন সে সব নিয়েও। যেমন সিএজি-র দাবি ছিল, ২০০৮-এ টুজি স্পেকট্রাম নিলাম না হওয়ায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছিল ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সম্প্রতি সেই স্পেকট্রামের একাংশ নিলাম করে মাত্র ৯৪০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে কেন্দ্রের। আর তারপরেই সিএজি-র বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে কংগ্রেস। কয়লা ব্লক নিয়ে রাজস্ব ক্ষতির বিতর্কের জবাব দিতে এ বার টুজি স্পেকট্রামের ঘটনাকেই হাতিয়ার করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তাঁর দাবি, টুজি-র মতোই কয়লা ব্লক নিয়েও সিএজি-র ১ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির অভিযোগ অলীক বলেই প্রমাণিত হবে।
তবে একইসঙ্গে কিছুটা সতর্কও তিনি। তাঁর বক্তব্য, টুজি নিলাম নিয়ে সরকার যেমন আনন্দোৎসবে মাততে চায় না, তেমনই কিছু প্রমাণও করতে চায় না। চিদম্বরম বলেন, “শুধু বলতে চাই, ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকার অঙ্কটা আসলে একটা অলীক সংখ্যা এবং সেটা অন্যরাই আমদানি করেছিল। আমরা নই।” |
|
|
|
|
|