রবীন্দ্রনাথের সমগ্র সৃষ্টির সঙ্গে নতুন প্রজন্মের পরিচয়কে আরও নিবিড় করে তুলতে উদ্যোগী হল নিউটাউনের রবীন্দ্রতীর্থ। হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন জানান, এই প্রজন্মের কথা ভেবেই রবীন্দ্রনাথের গান এবং কবিতার ইংরেজি অনুবাদ রাখা হবে রবীন্দ্রতীর্থের
ডিজিটাল আর্কাইভে।
এই প্রজন্মের অনেকেই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেন। ফলে, রবীন্দ্র সাহিত্য বা রবীন্দ্র সৃষ্টির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের ভাষাগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। হিডকোর দাবি, ডিজিটাল আর্কাইভ এই ভাষা-সমস্যার অসুবিধা দূর করবে। হিডকোর তরফে জানানো হয়েছে, রবীন্দ্রনাথের জীবন ও কাজের একটি পূর্ণ ডিজিটাল আর্কাইভ তৈরির দায়িত্ব নিয়েছে একটি সফট্ওয়ার সংস্থা। কয়েক জন রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী তৈরি হচ্ছে এই আর্কাইভ। শুধু রবীন্দ্র অনুরাগীরাই নন, রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর সৃষ্টি নিয়ে যারা গবেষণা করতে চান তাঁদের জন্যও কার্যকর হবে এই আর্কাইভ। |
হিডকো সূত্রের খবর, শুধু রবীন্দ্র সাহিত্যই নয় এই ডিজিটাল আর্কাইভে থাকছে রবীন্দ্রনাথের হাতে আঁকা বেশ কিছু ছবি। থাকছে ছবির মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথের সংক্ষিপ্ত জীবনপঞ্জি। এক দিকে যেমন রবীন্দ্রনাথের অসংখ্য কবিতা ও গল্পের ইংরেজি অনুবাদ থাকছে, অন্য দিকে থাকছে গল্প ও কবিতার টুকরো ছবিও। বিশেষ জোর দেওয়া হবে রবীন্দ্র শিশু সাহিত্যর উপরে। রবীন্দ্রনাথের ছোটদের জন্য কবিতা, গল্প, নাটক, ছড়ার ইংরেজি অনুবাদ তুলে ধরে আজকের প্রজন্মের বাংলা না জানা ছেলেমেয়েদের রবীন্দ্র সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত করার একটা প্রচেষ্টা থাকবে
এই আর্কাইভে। থাকবে রবীন্দ্রনাথের কাহিনি নিয়ে তৈরি হওয়া চলচ্চিত্র বা তাঁর উপরে নির্মিত তথ্যচিত্র।
পাশাপাশি, রবীন্দ্রনাথের জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ‘টাইমলাইন’ বা সময়রেখা তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। যেখানে রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি থেকে নানা ঐতিহাসিক মুহূর্তের একটি বিস্তারিত বিবরণ মিলবে। হিডকোর আধিকারিকেরা জানান, শুধু বাঙালি বা এ দেশের মানুষেরাই নন, ডিজিটাল আর্কাইভের মাধ্যমে প্রবাসী বাঙালি, ভারতীয়, এমনকী বিদেশিরাও রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন।
রবীন্দ্রতীর্থের স্থাপত্য তৈরি হয়েছে শান্তিনিকেতনী শৈলিতে। গত বাইশে শ্রাবণ ভবন তৈরির কাজ শেষ হলে এই রবীন্দ্রতীর্থ উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সেন্টার ফর নলেজ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ অফ কবিগুরু’ এই আদর্শেই তৈরি হয় এই রবীন্দ্রতীর্থ। এখানে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও কবিতা শোনার জন্য মিউজিক রুম থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র দেখানোর জন্য সিনেমা হল তৈরি হয়েছে। দেবাশিসবাবু বলেন, “ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এই ডিজিটাল আর্কাইভ চালু হয়ে যাবে। বাড়িতে বসেও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই আর্কাইভ দর্শকেরা দেখতে পাবেন। এই ডিজিটাল আর্কাইভের মাধ্যমে আমরা গোটা পৃথিবীতেই রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকে পৌঁছে দিতে চাই।” |