সূচক ৫০০ পয়েন্ট উঠলেই সুযোগ নিন
বার সংবতের শুরুটা ভাল হয়নি। দেওয়ালির সন্ধ্যায় বাজারের পিঠ ছিল দেওয়ালে। তা নেমেছে পরের ৩ দিনেও। প্রথম দিকে অন্যান্য কারণে পড়লেও সপ্তাহের শেষ দিকে বাজার নেমেছে মূলত ‘ইউরোপীয় সন্ত্রাসের’ হাত ধরে। ইউরোজোন-এ নতুন করে মন্দা ঘোষিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে বাজার সবুজে খুললেও, এই খবরে বিকেলে সেনসেক্স ১৬২ পয়েন্ট খুইয়ে নামে ১৮,৩০৯ অঙ্কে। বেশ কিছু দিন ধরেই বাজারকে ভোগাচ্ছিল ইউরোপের অর্থনৈতিক সঙ্কট। শুক্রবারের ঘোষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে সমস্যা মিটতে ঢের দেরি। বাজারকে চলতে হবে এই সঙ্কটকে সঙ্গে নিয়েই।
দেশের ভিতরের খবরও ভাল নয়। রাজনীতিতে নতুন করে দেখা দিয়েছে সঙ্কট। বাজার আগ্রহের সঙ্গে তাকিয়ে রাজনৈতিক শক্তিপরীক্ষার দিকে। পাশাপাশি, আগের পাঁচ মাসের মতো রফতানি কমেছে অক্টোবরেও। কিন্তু আমদানি বেড়েছে ৭.৩৭%। ফলে বেড়েছে বাণিজ্য-ঘাটতি। বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি পৌঁছেছে গত ১২ মাসের মধ্যে সব থেকে খারাপ জায়গায়। ইউরোপীয় সঙ্কট না-মিটলে রফতানি বাড়ার সম্ভাবনা কম। ন্যাসকম ইঙ্গিত দিয়েছে, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বৃদ্ধির হার এ বছর নামতে পারে ১১ শতাংশে। আগে বলা হয়েছিল, তা হবে ১১-১৪%। আমদানি বৃদ্ধি ও রফতানি হ্রাসের দরুন আবার বেশ খানিকটা বেড়েছে ডলারের দাম। আর এত সব সমস্যাই বার বার বন্ধ করে দিচ্ছে সূচকের উপরে ওঠার পথ।
তবে এত সঙ্কটের মধ্যে থেকেও আশার কথা শোনাতে হচ্ছে অর্থমন্ত্রী চিদম্বরমকে। যদিও বাজার তাতে ভুলছে না। গত ক’দিনে বড় শেয়ারগুলির তুলনায় খানিকটা ভাল জায়গায় ছিল একগুচ্ছ মিডক্যাপ শেয়ার। ১৯ হাজার থেকে সেনসেক্স ৭০০ পয়েন্ট নেমে আসায় ন্যাভ কমেছে বহু মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের। ১৯ হাজার পেরলে শেয়ার ও মিউচুয়াল ইউনিট বেচে যাঁরা মুনাফা কামাবেন ভাবছিলেন, তাঁরা হতাশ।
গত ১৫ অক্টোবর শেষ হয়েছে সংস্থার আর্থিক ফলাফল প্রকাশের পালা। কয়েক দিনের মধ্যেই জানা যাবে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে কোন শিল্প কেমন ফল করল। প্রকাশিত ফলাফলের ভিত্তিতে বলা যায়, তা মোটের উপর মন্দ নয়। অনেক মহলের আশা, উৎসবের মরসুমে বিক্রি বাড়ায় তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ফল ভাল হবে। এটাই শেয়ার বাজারকে আশার আলো দেখাচ্ছে। অন্য দিকে, সুদ কমার ইঙ্গিত না পাওয়ায় ঝিমিয়ে বাজার। চিদম্বরমের কথায় সুব্বারাও যে ঋণনীতি নির্ধারণ করবেন না, তা স্পষ্ট।
‘স্পেকট্রাম পর্বত’ অবশেষে মুষিক প্রসব করেছে। সরকার যা আশা করেছিল তার ধারেকাছেও পৌঁছায়নি টু জি-র নিলাম থেকে আয়। বাজার তেজি না হলে বিলগ্নীকরণের পথেও যেতে পারছে না সরকার। এ দিকে, শেষের দিকে এগোচ্ছে অর্থবর্ষ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ ছন্নছাড়া। এই অবস্থায় সূচক যদি ৫০০ পয়েন্টও ওঠে, তবে তার সদ্ব্যবহার করতে হবে। না হলে আফশোস করা ছাড়া উপায় থাকবে না। কারণ, বাজারের পাকাপাকি ভাবে ওঠার সম্ভাবনা এখন কম, ইউরোপ যত দিন না শোধরাচ্ছে।
বিনিয়োগের দৃষ্টিকোণ থেকে সোনা যেন কিছুটা থমকে দাঁড়িয়েছে। ৩২,০০০ ছুঁয়ে আর তেমন বাড়ছে না। ধনতেরাসে দেশে সোনার চাহিদা যথেষ্টই ছিল। তবে তা দামকে বিশেষ উস্কে দিতে পারেনি। এতটা ওঠার পর সোনার ঊর্ধ্বগতি এখন কিছুটা মন্থরই হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট না কমালেও, ব্যাঙ্ক সুদ কিন্তু কমছে। সুদ কমেছে বাড়ি ও গাড়ি ঋণেও। তা সম্ভব হয়েছে নগদ জমার অনুপাত কমায়। কিছু বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের দুশ্চিন্তা বেড়েছে অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ) বাড়ায়। ফলে কমেছে এই সব ব্যাঙ্ক শেয়ার দর।
প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শেষ ২০১২-১৩ অর্থবর্ষের। আগে না-করে থাকলে, এ বার নামতেই হবে ৮০ সি ধারার অধীনে কর সাশ্রয়ের পথে। এই ধারায় সর্বাধিক কর ছাড়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্রকল্পে জমাতে হবে ১ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে অবশ্য ধরা থাকবে বেতন থেকে পিএফ বাবদ কাটা টাকা। এই খাতে টাকা জমানো যায় জাতীয় সঞ্চয়পত্র (এনএসসি), পিপিএফ, ব্যাঙ্ক জমা, বিমার প্রিমিয়াম, ইএলএসএস ইত্যাদি প্রকল্পে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.