|
|
|
|
ছট উৎসব শিল্পাঞ্চল জুড়ে, অশান্তি রুখতে নানা ব্যবস্থা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
ছট পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছেন আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের কয়েক হাজার বাসিন্দা। সন্তান ও পরিবারের কল্যাণ কামনায় হিন্দিভাষী সধবারা ছট পুজো করে থাকেন। আসলে ছট হল সূর্যদেবের পুজো। শুক্রবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসব। বাড়ির সধবা মহিলারা এ দিন শুধুমাত্র ‘লাউভাত’ খেয়ে ছিলেন। শনিবার ছিল ‘খারনা’। সারাদিন উপবাস করে রাতে মহিলারা দুধ-গুড় দিয়ে আতপ চালের ভাত খান। আজ, সোমবার মহিলাদের উপবাস। সূর্যাস্তের সময়ে মাথায় বিভিন্ন ফল ও অন্যান্য পুজোর সামগ্রী ভরা ডালি নিয়ে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করবেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালে সূর্যোদয়ের সময়ে আবার সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করে উপবাস ভঙ্গ করবেন তাঁরা।
আসানসোল মহকুমা জুড়ে নির্বিঘ্নে ছট পুজোর উৎসব পালনে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। আসানসোল পুরসভা এলাকায় একাধিক জলাশয়ে, দামোদর ও নুনিয়া নদীতে প্রায় ৬০টি ঘাট বানানো হচ্ছে। আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুরসভার উদ্যোগেই এই কাজগুলি হয়েছে। পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের রাস্তা সংস্কার, ছাউনি নির্মাণ ও অন্য পরিষেবা বাবদ দু’দিনের ছট উৎসবে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা খরচ করছে পুরসভা। অন্য দিকে, কুলটি পুরসভার উপপ্রধান বাচ্চু রায় জানান, বিভিন্ন এলাকায় জলাশয় নিকটবর্তী প্রায় ৪৫টি ঘাট সংস্কার করে দিচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বরাকর নদীতেও ছট পালন করতে আসা পুণ্যার্থীদের জন্য পরিষেবার ব্যবস্থা করছে পুরসভা। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে বারাবনি এবং সালানপুর ব্লক প্রশাসনও। সোমবার সূর্যাস্ত থেকে মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের মুহূর্ত পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল জুড়ে ছট উৎসব পালন করবেন কয়েক লক্ষ বাসিন্দা। সেই সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, সে দিকে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আসানসোলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার মিতেশ দাশগুপ্ত। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে যাতায়াতের পথে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
ছটপুজোয় দুর্গাপুরের মামরা এলাকার অর্জুনবাঁধ পুকুর ব্যবহার করেন অনেকেই। তাই পুকুরটি সাফাই করা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে পাড়ও। সোমবার বিকেলে সেখানে বেশ কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আলো দিয়ে পুরো চত্বর সাজানো হয়েছে। নৌকা, অ্যাম্বুল্যান্স, দমকল-সহ সব রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। ছটপুজোকে কেন্দ্র করে ছোট মেলাও বসে গিয়েছে। মামরা ছাড়াও দুর্গাপুরের মায়াবাজার এলাকার পুরসা ঘাটেও প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। এছাড়া বেনাচিতির ধর্মপুকুর, ইস্পাত কলোনির কুমারমঙ্গলম পার্ক, ডিভিসি ব্যারাজ, সগরভাঙা, মায়াবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় ধুমধাম করে ছট উৎসব পালিত হচ্ছে। দুর্গাপুরের মতো কাঁকসার পানাগড় এবং গলসি ১ ব্লকের ছট উৎসবের আয়োজন হয়েছে জাঁকজমক ভাবেই। আগে স্থায়ী পুকুর না থাকায় বুদবুদে ছট উৎসবে সমস্যা হত। বছর কয়েক আগে নতুন করে একটি পুকুর খনন করায় সমস্যা মেটে। সেখানেও ছট উৎসবের ঘাট বানিয়েছেন বাসিন্দারা।
আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, ছটপুজোকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা যাতে কোনও ভাবেই বিঘ্নিত না হয়, মানুষজন যাতে উৎসবে যোগ দিতে কোনও বাধার সম্মুখীন না হন, সেজন্য পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন ঘাটেও পুলিশ কর্মীরা থাকছেন। তাঁরা মানুষকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবেন। |
|
|
|
|
|