দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের অভাবে ক্ষয়ে যাচ্ছে সেচখালের পাড়ের অংশ। প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও নজর দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
ডিভিসির এই সেচখালটি খনন করা হয় ১৯৫৫ সালে। দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে বেরিয়ে আসা মূল সেচখাল থেকে এই শাখা সেচখালটি পানাগড় হয়ে মানকরের দিকে গিয়েছে। গলসি ১ ও আউশগ্রাম ২ ব্লকের প্রায় কুড়িটি গ্রামের চাষজমিতে সেচের জল সরবরাহ হয় এই সেচখালটি থেকেই। প্রথম থেকেই ভৌগলিক কারণে এই সেচখালটি ভূমিক্ষয়ের শিকার। বাসিন্দারা দাবি করেন, ওই এলাকার মাটির চরিত্র ভঙ্গুর। ফলে বৃষ্টি হলেই ভূমিক্ষয় দেখা দেয়। সমস্যা মেটাতে সেচখালটির ক্ষয়ে যাওয়া কিছু কিছু জায়গায় গাছ লাগিয়ে, বেশি ক্ষয়ে যাওয়া জায়গায় কংক্রিটের ঢালাই করার ব্যবস্থা করেন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোটা, চণ্ডীপুর গ্রাম থেকে মানকর পর্যন্ত সেচখালটির দু’পাশে লাগানো হয়নি কোনও বড় গাছ। নেই কংক্রিটের ঢালাইও। ফলে সেচখালটির প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার অংশ জুড়ে ব্যাপক ভূমিক্ষয় হয়ে চলেছে। ক্ষয়ে যাওয়া মাটি জমছে সেচখালের ভিতরে। এর ফলে কমছে সেচখালের জলধারণ ক্ষমতাও। |
পাড় ক্ষয়ে যাওয়ায় সেচখালের পাশে থাকা চাষিদের জমিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ। চাষিদের দাবি, প্রশাসন দ্রুত এই সেচখালের পাড় বাঁধানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক। কোটা গ্রামের এক বাসিন্দা ভোলানাথ গুঁই বলেন, “আমাদের এলাকা কৃষি নির্ভর। কাজেই যদি সেচখালটি যদি মজে যায় তাহলে এই এলাকার বহু চাষির ক্ষতি হবে। যে ভাবে হোক এই ক্ষয় রোধ করতে হবে।” মানকরের বাসিন্দা কাজল চন্দ, প্রবীর দত্তদের আশঙ্কা, “স্থানীয় প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি ক্ষয় রোধে দ্রুত এগিয়ে না আসেন তাহলে ভবিষ্যতে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের।”
গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়শ্রী বিষ্ণু জানান, সেচখালের পাড় ক্ষয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনিও উদ্বিগ্ন। তাঁর আশ্বাস, “সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সেচখালের ওই নির্দিষ্ট অংশের সংস্কারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। যাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা যায়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলে আর্জি জানানো হবে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসা ও আউশগ্রাম ব্লকের সেচের প্রসারে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের তরফে প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় সেচের জল পৌঁছতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই জন্য ওই টাকায় সেচখাল সংস্কার, সেচখালের পাড় বাঁধাইয়ের কাজ করা হবে। |