পাটাতন উঠে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। নড়বড় করছে নীচে কাঠের স্তম্ভ। কোনও সংস্কার ছাড়া এই ভাবেই দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার গোপালপুর পঞ্চায়েতের রুখিয়া গ্রামের কাঁটাখালি খালের উপরে কাঠের সেতু।
মাঝেমধ্যেই সেতু থেকে খালে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে। নড়বড়ে সেতুটি যে কোনও মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা এলাকর লোকের। তবু হুঁশ নেই প্রশাসনের। এলাকার মানুষের অভিযোগ, প্রতিবারই ভোটের আগে রাজনৈতিক নেতারা সেতু সংস্কার এমনকী পাকা সেতু তৈরির আশ্বাস দেন। কিন্তু কাজের কাজ হয় না। ভোট মিটলে গ্রামের ধারেকাছে ঘেঁষেন না ওই নেতারা। বিভিন্ন দফতরে আবেদন-নিবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই খালের উপর প্রায় ৭৫ ফুট লম্বা কাঠের সেতুটি বহু বছর আগে তৈরি হয়েছিল। তারপর আর সেতুর সংস্কার হয়নি। বাধ্য হয়ে গ্রামের লোক চাঁদা তুলে নিজেরাই সংস্কারের কাজে হাত লাগান। তাঁরাই কোনওরকমে সেতুটিকে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। কেননা, স্থানীয় বাদেগহরা, নারায়ণতলা, গোপালপুর, জয়সিং, জামিরা, পিরপুরাপুর, দোনাবাগানি-সহ প্রায় ১৫টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা ওই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। ওই সেতু দিয়েই যেতে হয় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে। এ ছাড়া দু’টি প্রাথমিক ও হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করে। |
স্থানীয় বাসিন্দা গোপালপুর পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সভাপতি আবুল সালাম শেখ বলেন, “বহুবার সব দফতরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এমনকী বিধায়ককে বলা হলেও কেউই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ফলে অবহেলায় সেতুটির অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। যে কোনওদিন বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।” রুখিয়া গ্রামের জোহর আলি শেখ, মেসিলউদ্দিন মোল্লাদের কথায়, “প্রতি শুক্র ও সোমবার সেতুর পাশে হাট বসে। প্রচুর মানুষ জড়ো হন সেখানে। সেতুর যা অবস্থা, তাতে সেটি যে কোনওদিন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
ফলতা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মঞ্জু নল্করের কথায়, “খালের উপর একসঙ্গে সেতু এবং স্লুইস গেট তৈরির জন্য জেলা পরিষদে জানানো হয়েছে।” ফলতার তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ বলেন, “সেতুটি তৈরি করলে নিকাশি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই স্লুইস গেট এবং সেতু একসঙ্গে তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। নিকাশির বিষয়টি নিয়েও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। তবে সেতুটি দ্রুত তৈরি করা দরকার।” |