এক ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল চণ্ডীতলার পাঁচঘরা গ্রামে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম এতিলাল রহমান খাঁ (৫০)। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের মাঠে একটি গাছে তাঁর গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত দেহ মেলে। জমি-দালালদের হুমকির মুখে তিনি আত্মঘাতী হতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, একটি ডায়েরিতে স্থানীয় দুই জমি দালালের নামে খুনের হুমকি, মারধরের অভিযোগ লিখে গিয়েছেন এতিলাল। সেটিকেই এফআইআর হিসাবে গন্য করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃতের পরিবারের তরফেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তের জন্য।
এ দিকে, এতিলালের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে গোলমাল ছড়ায় এলাকায়। অভিযুক্ত দুই দালাল শেখ সামসুদ্দিন ও শেখ সুকুর যে হোটেলে বসে গল্পগুজব করতেন, সেখানে চড়াও হন এলাকার মানুষজন। ভাঙচুর চালিয়ে হোটেলের একটি চালাঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় জনতা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তেরা পলাতক। তাঁদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
কিন্তু কেন আত্মহত্যা করলেন ওই প্রৌঢ়? |
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, এতিলালের পরিবারের কিছুটা জমি তাঁর বাবা বহু দিন আগে বিক্রি করেছিলেন এক ব্যক্তিকে। কিন্তু সেই জমির কাগজপত্রে নাম পরিবর্তন করা হয়নি। ফলে এতিলালদের পরিবারের লোকজনের নামই নথিপত্রে থেকে গিয়েছে। মৃতের পরিবারের দাবি, এই তথ্য না জেনেই ওই জমি বিক্রি করার জন্য ভেবেছিলেন এতিলাল। সেই মতো এলাকার দুই জমি-দালালের থেকে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম নেন। এতিলাল পরে জানতে পারেন, ওই জমি তাঁর বাবার আমলেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আইনত জমি বিক্রি সম্ভব নয়। এ কথা বুঝে সামসুদ্দিন ও সুকুর নামে ওই দুই দালালকে টাকা ফেরত দিতে চান এতিলাল। কিন্তু টাকা ফেরত নিতে চাননি ওই দুই ব্যক্তি। জমি দিতে হবে বলেই গোঁ ধরেন তাঁরা।
জমির জন্য এতিলালের উপরে দালালেরা ‘চাপ’ সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ। ভয় পেয়ে যান প্লাইউড কারখানার কর্মী এতিলাল। তাঁর স্ত্রী সেলিমার অভিযোগ, “আমরা টাকা ফেরত দিতে চাইছিলাম। তা না নিয়ে উল্টে আমার স্বামীকে সামসুদ্দিন ও সুকুর মারধর করে। ওরা জমি বিক্রির জন্য চাপ দিচ্ছিল। ওদের বোঝাতে পারছিলাম না, জমি আমাদের নয়। আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কাগজপত্রে গোলমাল থাকাতেই এই বিপত্তি।” |