বুলেটিনহীন মুম্বই যেন গুজব-নগরী
তাল কাটা ছন্দে ভজন।
তার মধ্যে মাঝে মাঝে দু’হাত তুলে সমস্বরে,
‘এক দো তিন চার
বালাসাহেবের জয়জয়কার
দর্শন দাও, দর্শন দাও...’

পুলিশের ব্যারিকেডের ও পার থেকে আওয়াজ। গোটা মাতশ্রী জুড়ে গমগম করছে। সে আওয়াজ কি পৌঁছচ্ছে তাঁর কানে?
গত তিন দিন ধরে ভিড় ঘন হচ্ছে মাতশ্রীর বাইরে। প্রত্যশা একটাই।
‘ভগবান’ আবার সেই পথটি ধরে বেরোবেন। দর্শন দেবেন। হাত নাড়বেন। আশীর্বাদ দেবেন।
অন্য দিনের মতো আজও নামী-দামি-অনামীদের লাইন। হেমামালিনী, জিতেন্দ্র, জুহি চাওলা, সঞ্জয় খান, বেঙ্কাইয়া নায়ডুরা আজ এলেন। বাবা রামদেব, দ্বারকার নরেন্দ্রচারী মহারাজ এসে বাল ঠাকরের দীর্ঘায়ু কামনা করে গেলেন। কারও মুখ ভার। কারও হাসিমুখ। ক্যামেরায় হাত নাড়িয়ে মাতশ্রীতে যাচ্ছেন। দেখা হচ্ছে শুধু উদ্ধবের সঙ্গে। অন্য দিনের মতোই বাইরে এসে বলছেন, “বাল ঠাকরে স্থিতিশীল।” সন্ধ্যায় মনোহর জোশী বললেন, “কালকের থেকে আজ স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসকরাই অবাক হয়ে যাচ্ছেন।” শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত তো বলে ফেললেন, “কিছু দিন অপেক্ষা করুন। বালাসাহেব বাইরে এসে ‘দর্শন’ দেবেন।”
কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল বোঝার উপায় নেই। তিন দিন হয়ে গেল। চিকিৎসকরা টুঁ শব্দ করেননি। তাঁরা মাতশ্রীতে ঢুকছেন। গোমড়া মুখে বেরোচ্ছেন। জিজ্ঞেস করলেই বলছেন, “আমাদের কিছু বলার নেই।” আসলে অনুমতি নেই। পাছে বিতর্ক বাড়ে। এমন এক জন হাই প্রোফাইল নেতা, অথচ কোনও মেডিক্যাল বুলেটিন নেই! রাহুল বাজাজ খালি বললেন, “বালাসাহেব মারা গিয়েছেন বলে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তাতে কান দেবেন না। তাঁকে কৃত্রিম ভাবে বাঁচিয়ে রাখাও হয়নি। উনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।” তা হলে ডাক্তাররা চুপ কেন? প্রতি মুহূর্তে এত রকম গুজব ছড়াচ্ছেই বা কেন? যেমন এক বার শোনা গেল বাড়িতে আর নয়, বালাসাহেবের চিকিৎসা হবে লীলাবতী হাসপাতালেই। কোন সূত্রে জানা গেল এ কথা? উত্তর নেই। পুজো-পার্বণ চুকেছে। অথচ এখন আবার নতুন করে শিবাজি পার্কে মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। কেন? কীসের মঞ্চ? কার নির্দেশে? কোনও জবাব নেই। শিবসেনা বলছে, সরকার সব জানে। সরকারের মুখে কুলুপ। এর মধ্যেই আগামিকাল মুম্বইয়ের শ’খানেক কর্পোরেটরের বৈঠক ডাকা হয়েছে মাতশ্রীতে। বালাসাহেবের অসুস্থতার মধ্যে মাতশ্রীতে এই বৈঠক কেন? উত্তর নেই তারও। কেন গোপনীয়তা? শুধু দলের নেতারাই বা কেন আশ্বস্ত করছেন?
উত্তর হয়তো আছে পুলিশের কাছে। তিন দিন ধরে ভিড় জমছে। দীপাবলির ছুটির পর আজ অফিস খুলেছে। উদ্ধবের আশ্বাসেদোকানপাটও খুলেছে। কিন্তু বালাসাহেবের সম্পর্কে কোনও কটু কথা শিবসৈনিকরা শুনতে নারাজ। ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের উপর বার কয়েক হামলা হয়েছে। কাল কেউ স্বেচ্ছায়, কেউ তো স্রেফ ভয়েই দোকান বন্ধ রেখেছিল। পুলিশও ভুলে যায়নি বছর দশেক আগে শিবসেনা নেতা আনন্দ দিঘের মৃত্যুর ঘটনা। শিবসৈনিকরা হাসপাতালই জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এ বার কোনও রকম গা আলগা দেওয়ার জায়গা নেই। সন্ধ্যায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নজরদারি করতে ছুটে এলেন মুম্বই পুলিশের অ্যাডিশনাল সিপি বিশ্বাস নাঙ্গরে পাটিল। ২৬/১১-র সময় তাজ হোটেলের ভিতরে প্রথম যান তিনি। সাংবাদিকদের এসে বলে গেলেন, “আপনারাও সংযত থাকুন। আমরা প্রস্তুত। কিন্তু ভিড় বাড়লে নিজেদের সামলানোর দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.