বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে
উৎসব শেষ হতেই ফের নামল আঁধার
ছরের পর বছর অন্ধকারে ডুবে থাকার পরে পুজোয় মাত্র দিন কয়েকের জন্য আলো জ্বলেছিল। পুজো মিটতেই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের অধিকাংশ অংশ ফের ডুবেছে অন্ধকারে। কয়েকটি আলো টিমটিম করে জ্বললেও এলাকাবাসীদের আশঙ্কা, সেগুলিও আচমকা এক দিন নিভে যাবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের মতো রাস্তায় আলো না জ্বলায় রাতে যেমন দুর্ঘটনা ঘটত, তেমনই অন্ধকারের সুযোগে বাড়ছিল অপরাধমূলক কাজ। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই রাস্তায় খুন হন হুগলির একটি বেসরকারি কলেজের অধিকর্তা সুপ্তেন্দু দত্ত ও তাঁর গাড়ির চালক। ঘটেছে গাড়ি থামিয়ে টাকা-গয়না ছিনতাইয়ের ঘটনাও। বেশ কিছু গাড়ি ছিনতাইয়ের বিষয়ে দমদম ও এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আলো না থাকায় দুষ্কৃতীরা সহজেই বিমানবন্দর বা দক্ষিণেশ্বরের দিকে পালাতে পারে।
স্থানীয়দের বক্তব্য, অন্ধকার রাস্তায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। একটি চায়ের দোকানের মালিক বিজয় বণিক বলেন, “অন্ধকারে পথচারীরা বোঝেন না গাড়ির অবস্থান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পথচারী ও গাড়িচালকের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।” রাস্তা পারাপারের জন্য অনেকেই ডিভাইডার কেটে জায়গা বানিয়েছেন। অন্ধকারে সেই ডিভাইডার পারাপার করেন পথচারী, সাইকেল ও মোটরবাইক আরোহীরা।
নিষ্প্রদীপ পথে ভরসা শুধু গাড়ির হেডলাইট। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
দীর্ঘ সাত বছর এটাই ছিল রাতের বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ছবি। কারণ, রাস্তা তৈরির পরে আলো জ্বললেও কিছু দিন যেতেই তা নিভে যায়। তার পর থেকে এই রাস্তায় আর কখনও আলো জ্বলেনি বলে দাবি বাসিন্দাদের। রাস্তাটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। সংস্থার কর্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আলোর দায়িত্ব তাঁদের নয়। সেই দায়িত্ব কার, তা নিয়ে বছরখানেক টালবাহানা চলে। শেষে রাজ্য পূর্ত দফতর ওই দায়িত্ব নিতে রাজি হয়। কিন্তু আলোর বিল কে মেটাবে, তা নিয়ে দেখা দেয় সমস্যা। কেননা, এই রাস্তাটি কামারহাটি, বরাহনগর, পানিহাটি, দমদম, উত্তর দমদম পুরসভা এলাকার অর্ন্তভুক্ত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আলোর বিল সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকেই মেটাতে হবে। তবে আলো জ্বালানোর আগে বাতিস্তম্ভ, আলো মেরামতির কাজ করে দেবে পূর্ত দফতরের বিদ্যুৎ বিভাগ। সেই মতো ভেঙে পড়া ২৫টি বাতিস্তম্ভ পাল্টানো হয়। নতুন করে আলো লাগানো হয়। বিদ্যুতের সংযোগ দেয় সিইএসসি। দুর্গাপুজোর মুখেই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিকল থাকা বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলে ওঠে। কিন্তু দিন কয়েক কাটতেই ফের অন্ধকার।
রাস্তার অধিকাংশ অংশে আলো নিভে যাওয়ার দায় নিতে চাইছে না সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলি। দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান সঞ্জীব চন্দ বলেন, “আলোর দেখভাল বা বিল মেটানোর বিষয়ে পূর্ত দফতর আমাদের কোনও দায়িত্ব হস্তান্তর করেনি। তাই কিছু বলতে পারব না।” উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল চক্রবর্তীর বক্তব্য, “আমাদের পুর-এলাকায় ওই রাস্তার যেটুকু অংশ, তার বেশিরভাগ আলোই জ্বলছে না। আমরা এই বাতিস্তম্ভ দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নই। তবে সিইএসসি-র আধিকারিকদের বিষয়টি জানিয়েছি।” রাজ্য পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, “কেব্ল ফল্টের জন্যই বিপত্তি ঘটেছে। জরুরি ভিত্তিতে মেরামত হচ্ছে। তবে আরও কিছু কাজ বাকি। সেগুলি হলেই আলোর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে হস্তান্তর করা হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.