শীতলখুচির গ্রামে বিএসএফের গুলিতে দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নেমে বুধবার অভিযুক্ত জওয়ানের রাইফেল আটক করল পুলিশ। ওই ঘটনা নিয়ে বুধবার মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্টও দিয়েছেন এলাকার বিধায়ক বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। বনমন্ত্রী বলেন, “গুলি চালানোর পক্ষে বিএসএফের কোনও যুক্তি মেনে নেওয়া যায় না। সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখার পরে ওই বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সে সব নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। মৃতদের অর্থসাহায্য দেওয়ার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।” এ দিকে ঘটনার ৪ দিন পরেও বাসিন্দাদের আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ১২ নভেম্বর সোমবার শীতলখুচির পাগলিমারী ক্যাম্প লাগোয়া এলাকায় বিএসএফ, পুলিশ ও গ্রামবাসীদের নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। শীতলখুচির বিডিও সুধাংশু পাইক বলেন, “গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আতঙ্ক কাটানোর পাশাপাশি গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিএসএফের সম্পর্কের উন্নতির কথা মাথায় রেখে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে।” রবিবার কোচবিহারের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া শীতলখুচির পুটিয়া বারমাসিয়া এলাকায় বিএসএফের গুলিতে দুই খুড়তুতো ভাই আলি আহমেদ (৩৫) ও ইমতিয়াজ মিঁয়া (২৫) মৃত্যু হয়। মৃতদের পরিবারের তরফে শীতলখুচি থানায় এ নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বিএসএফের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ওই তদন্তে প্রাথমিক ভাবে এক রাউন্ড গুলি চালনার কথা উঠে এসেছে। বিএসএফের তরফেও পুলিশের কাছে দাবি করা হয়েছে, একজনকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি চালান হয়। একটি গুলিই এক জনের (ইমতিয়াজ) মাথা এ-ফোঁড় ও-ফোঁড় করে কাছে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য জনের (আলি আহমেদ) শরীরে লাগে। পুলিশ জানিয়েছে, যে জওয়ানের রাইফেল থেকে ওই গুলি চালানো হয়েছে সেই রাইফেল ‘সিজ’ করা হয়েছে। গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে জওয়ানদের অস্ত্র ছিনতাইয়ের চেষ্টা, হামলার অভিযোগের বিষয়টি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “যে জওয়ান গুলি চালান, তার রাইফেল সিজ করা হয়েছে। ঠিক কত রাউন্ড গুলি চালান হয় তা দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও কিছু বিষয় স্পষ্ট হবে। সব মিলিয়ে তদন্তে কিছুটা সময় লাগবে।” |