জবরদখলে এমনিতেই মৃত প্রায় ফুটপাথ। তার উপরে খাঁড়ার ঘা অবৈধ পার্কিং। দুইয়ের ফাঁসে নাকাল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের বাসিন্দারা। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক শহরের যোগাযোগের মূল রাস্তা। সেই রাস্তার দুই পাশেই চলছে ব্যবসায়ীদের অবাধ ফুটপাত দখল। দখল হঠাতে অভিযান হয় মাস দুই আগে। ফের ফুটপাত ফিরেছে আগের চেহারায়। ইসলামপুর থানা সংলগ্ন এলাকার এক দিকে ব্যবসায়ীরা রাস্তায় তাদের সরঞ্জাম রেখে ও কিছু ব্যবসায়ী ফুটপাত দখল করে দোকান সাজিয়ে বসেছেন। ইসলামপুর শহরের পুরাতন পল্লি ও চৌরঙ্গি মোড় এলাকাতেও চলছে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চলছে। পাশাপাশি রয়েছে অবৈধ পার্কিং। যার জেরে শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম জাতীয় সড়কে বাসিন্দাদের পথ চলা দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি ছোট গাড়ির চালকদের একাংশ স্ট্যান্ডও বানিয়ে ফেলেছেন। এলাকার পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাত দখল করে গ্যারেজ ব্যবসায়ীরা গাড়ি মেরামতির কাজ করছেন। শহরের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, শহরে যে ফুটপাতের জবরদখল ও অবৈধ পার্কিং রুখতে ইসলামপুরের পুরসভা ও পুলিশ প্রশাসন কতটা ব্যর্থ ইসলামপুরের জাতীয় সড়কের পাশেই তার প্রমাণ মেলে। ইসলামপুর কলেজের ছাত্রী পুজা ঘোষ বলেন, “এলাকাতে যানজটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। প্রশাসনের উচিত তা কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করা। অস্থায়ী পরিকল্পনাতে এ সমস্যা মিটবে না। ট্রাফিক আলোর ব্যবস্থাও চালু করতে পারেনি প্রশাসন।” বাসিন্দাদের দাবি, পুরসভার পাশাপাশি পুলিশের উচিত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। ইসলামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুবিমল পাল বলেন, “যানজট কাটাতে স্থায়ী সমাধানের দরকার রয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। শীঘ্রই শহরের ট্রাফিক সিগন্যাল চালু করার কথা রয়েছে।” শহরে যানজট কাটাতে যে প্রশাসন ব্যর্থ তা স্বীকার করেছেন পুরসভার কর্তারাও। শহরের পুরসভার নজরদারির অভাবের কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন ইসলামপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন অর্পিতা দত্ত। তিনি বলেন, “পুরসভার লোক কম থাকায় শহরের ফুটপাত জবরদখলের বিষয়টি একা পুরসভার পক্ষে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। ফের অভিযানে নামার কথা ভাবা হচ্ছে।” ইসলামপুর পথ পার্শ্বীয় ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুভাষ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা সব সময় প্রশাসনের সঙ্গে রয়েছি। এর আগে একটি অভিযানে নামা হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের সব সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সংগঠনের তরফে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি পুরসভা অভিযান চালালে ব্যবসায়ীদের ফুটপাত দখল ও অবৈধ পার্কিং বন্ধ হয়ে যাবে।” ইসলামপুর ব্যবসায়ী সমিতির মুখপাত্র দামোদর অগ্রবাল বলেন, “প্রশাসনের নজরদারির অভাবই এর জন্য দায়ী। নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটলেও শহরের পুরসভা-পুলিশ-প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বুঝে উঠতে পারছি না।” |