পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ হওয়ার দু’মাস পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে ‘সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট’ (এসএনসিইউ) চালু করতে পারছেন না রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে লিখিতভাবে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করার আর্জি জানিয়ে এসএনসিইউ চালু করার অনুমতি চাওয়া হয়। হাসপাতাল সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “এসএনসিইউ ইউনিট তৈরির কাজ দুই মাস আগে শেষ হয়ে গিয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ইউনিটের জন্য চিকিৎসার একাধিক যন্ত্রসামগ্রীও বরাদ্দ করেছে। কিন্তু চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে আমরা ওই ইউনিটটি চালু করতে পারছি না। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করার আর্জি জানিয়ে ওই ইউনিটটি চালু করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে।” বর্তমানে হাসপাতালে ৩০ শয্যার শিশু বিভাগ রয়েছে। সেখানে গড়ে দ্বিগুণ শিশু ভর্তি রাখতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নারায়ণচন্দ্র পাল বলেন, “চিকিৎসক ও উন্নত চিকিৎসার সামগ্রীর অভাবে শিশু বিভাগে সদ্যোজাতদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সমস্যা হয়।” সেই কারণে প্রায় দু’বছর আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এসএনসিইউ ইউনিট তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়। দেড় বছর আগে ওই ইউনিটের কাজ শুরু হয়। গত সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ হয়েছে। জানুয়ারির মধ্যেই স্বাস্থ্য দফতর চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এসএনসিইউ ইউনিটটি চালু করার অনুমতি দেবে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচে দু’মাস আগে হাসপাতালে দোতলায় পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের পাশে এসএনসিইউ ইউনিট গড়ার কাজ শেষ হয়েছে। বাতানুকুল ওই ইউনিটে সদ্যোজাতদের জন্য ১২ শয্যা রয়েছে। ওই ইউনিটে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য পৃথকভাবে বিশেষগ্য ৯ জন চিকিৎসক ও ১২ জন নার্সকে নিয়োগ করার সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও এখনও পর্যন্ত কাউকেই নিয়োগ করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে অনুমতি মিললে প্রয়োজনে হাসপাতালের সাধারণ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়েই ওই ইউনিটে দায়িত্ব দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছে, সদ্যোজাত থেকে ২৮ দিন বয়সী অসুস্থদের ইউনিটে ভর্তি রেখে নিখরচায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হবে। সেপ্টিসিমিয়া, লো বার্থ-ওয়েট, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া সহ অন্তত ৩০ জটিল রোগের পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ওই ইউনিটে পরিষেবা দেওয়ার জন্য ৩০টি আধুনিক চিকিৎসার যন্ত্র বরাদ্দ করেছে। হাসপাতালের চিকিৎসক সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মতো আধুনিক মানের এসএনসিইউ গড়ে তোলা হয়েছে। পূর্ত দফতর ভবন তৈরি সহ বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ করে ইউনিটটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে। ইউনিটে শয্যা ও চিকিৎসার যন্ত্রসামগ্রী ঢোকানোর কাজও শেষ করে ফেলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।” কিন্তু তা এখনও চালুই হয়নি। |