আট মাস পরে অবশেষে রোগীদের খাবার দেওয়া চালু হল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। আনন্দবাজারে হাসপাতালের ‘হাঁড়ির হাল’ এবং রোগীদের দীর্ঘ আট মাসের দুদর্শার খবর প্রকাশিত হওয়ার দু’দিনের মধ্যেই নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাত থেকেই রোগী কল্যাণ সমিতির বরাদ্দ টাকায় চালু হয় খাবার দেওয়া। বিএমওএইচ সুদীপ ঘোড়ুই বলেন, “আপাতত হোটেল থেকে খাবার কিনে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে।” কিন্তু যে ব্যবস্থা প্রায় রাতারাতি করে ফেললেন কর্তৃপক্ষ গত আট মাসে তা করা যায়নি কেন? কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন, রোগী কল্যাণ সমিতি কারও অজানা ছিল না বিষয়টি। আঙুল উঠছে প্রশাসনির ঢিলেমির দিকেও।
সরকারি নিয়মানুযায়ী, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীকে খাবার সরবরাহ করার কথা হাসপাতালের। কিন্তু এখানে রোগী ও রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্যদের বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনও প্রতিকার মেলেনি। এলাকার বিডিও থেকে বিধায়ক সকলেই বৈঠকের আশ্বাস দিয়েই কাজ সারছিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র জানিয়েছিলেন, খাবার সরবরাহের জন্য একটি ঠিকাদার সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কাজ করেননি। রোগী কল্যাণ সমিতিও স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে কাজের বরাত দিয়ে দায়িত্বমুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু সেই গোষ্ঠী যোগাযোগ না করায় খাদ্য সরবরাহের বিষয়টি পড়ে ছিল সেই তিমিরেই। অথচ এই হাসপাতালের উপর দাসপুর ১ ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের লক্ষাধিক মানুষ এবং দাসপুর ২ ব্লকের একাধিক গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। প্রতিদিনই প্রসূতি ও অন্যান্য রোগী মিলে গড়ে ১৫-২০ জন ভর্তি হন। হাসপাতালের খাবার না থাকায় স্থানীয় হোটেল আর বাড়ির খাবারের উপর ভরসা করেই দিন কাটছিল তাঁদের।
তবে বুধবার খাবার চালু হওয়ায় খুশি রোগী ও তাঁর পরিজনেরা। রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা দাসপুর ১ ব্লকের বিডিও রোশনি সরকার বলেন, “দু’একদিনের মধ্যেই জরুরি মিটিং ডাকতে বলা হয়েছে বিএমওএইচকে। স্থায়ী ভাবে হাসপাতালেই যাতে রান্না চালু করা যায় তা নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হবে।” একই বক্তব্য এলাকার বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ারও। |