বুধবার দুপুরেই এলাকায় ঢোকে সে। দোকানে, বাড়িতে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছিল। বাসিন্দারাও ওর কাণ্ডকারখানায় মজা পেয়েছিলেন। কিন্তু পরের সকাল থেকে সেই ‘অতিথি’র তাণ্ডবেই জখম হলেন একাধিক এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার, বিধাননগরের সংযুক্ত এলাকা পোলেনাইটের ঘটনা।
এ দিন সকালে বাজার সেরে ফেরার পথে বাঁদরের তাণ্ডব দেখে ভয়ে ব্যাগ ফেলেই পালান এক মহিলা। বাঁদর সেই ব্যাগ থেকে দশ টাকার নোট বার করে আরামে চিবোতে শুরু করে। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি। ততক্ষণে এলাকাবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কেউ পালাতে থাকেন, কেউ বা আবার বাঁদরটিকে তাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেন। দু’ঘণ্টা ধরে এলাকার বিভিন্ন বাসিন্দার বাড়ি ঢুকে পড়ে জিনিসপত্র নষ্ট করার সঙ্গে একাধিক মানুষকে জখমও করে বাঁদরটি। |
খবর পেয়ে বনদফতর ও পুলিশের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। দু’ঘণ্টা ধরে তাঁদেরও নাকাল করে সেই বাঁদর। জাল পেতেও তাকে ধরা যায়নি। এক গাছ থেকে আর এক গাছ, এর বাড়ি, ওর বাগানে ঘুরে অবশেষে বনদফতরের অফিসারের ছোড়া ঘুমপাড়ানি গুলির ঘায়ে তার তাণ্ডব থামে। বাঁদরটিকে বিধাননগরের বন্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
বিধাননগর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পোলেনাইটের রথতলা এলাকায় এই ঘটনায় দুই মহিলা, এক শিশু-সহ ন’জনেরও বেশি জখম হয়েছেন বলে দাবি সেই ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক স্মরজিৎ মণ্ডল। তিনি জানান, আহতদের সরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। |
স্থানীয় সূত্রে খবর, এর মধ্যে আঘাত বেশি সত্তরোর্ধ্ব মহিলা তারামণি প্রামাণিকের। তিনি বাড়িতে বসে সব্জি কাটছিলেন। আচমকাই বাঁদরটি এসে তাঁর কোলে বসে পড়ে। কিছু ক্ষণ চুপচাপ থাকার পরে তারামণিদেবী অন্যমনস্ক হতেই তাঁর কব্জি থেকে কামড়ে মাংস খুবলে নেয় বাঁদরটি। এ ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ মণ্ডল, ভোলা মণ্ডল, অমিত প্রামাণিক, ময়না মণ্ডল-সহ অনেকেই বাঁদরের হামলায় আহত হন।
বিধাননগর বন্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রের কর্মীদের অনুমান, বাঁদরটিকে কোনও ভাবে উত্যক্ত করা হয়েছিল। তার তাণ্ডবে যেমন বাসিন্দারা ভয় পেয়েছেন, তেমন সে-ও ভয় পেয়েছিল। যদিও বাঁদরটির গায়ে তেমন আঘাত লাগেনি। তবে আহত হওয়ার ভয়েই সে হামলা করছিল বলে অনুমান বনদফতরের কর্মীদের।
|