|
|
|
|
সরকারের লক্ষ্য এ বার বেঁধে দেবেন রাহুল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের সাংগঠনিক বিষয়ে এত দিন সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি-নির্ধারণ নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে সক্রিয় হননি কখনও। আগামিকাল এই প্রথম কংগ্রেসের প্রস্তাবিত ‘সংবাদ বৈঠক’-এ সরকারের কাজ নিয়ে আলোচনা করে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেবেন রাহুল গাঁধী।
রাহুলই যে ভবিষ্যতের কাণ্ডারী ও দলের অঘোষিত দু’নম্বর, গত রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানের সভা থেকে সেই বার্তা গোটা দেশের কংগ্রেস নেতা-কর্মীকে দিয়েছে হাইকম্যান্ড। আগামিকালের বৈঠকের মধ্য দিয়ে রাহুলের গুরুত্ব আরও বাড়াতে চাইছেন তাঁরা। ধারাবাহিক ভাবে এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে কংগ্রেস কার্যত এ-ও তুলে ধরতে চাইছে যে, দলে রাহুলকে কী পদ দেওয়া হল তা অপ্রাসঙ্গিক। দল এবং সরকারে সনিয়া গাঁধীর পরেই তাঁর গুরুত্ব।
দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, কংগ্রেসের ২০০৯ সালের ভোট ইস্তেহারে ঘোষিত প্রতিশ্রুতির কতটা বাস্তবায়ন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার করতে পেরেছে, মূলত তা নিয়েই আলোচনা করবেন রাহুল। একশো দিনের কাজের মতো খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও তার রূপায়ণের লক্ষ্যও বেঁধে দেবেন। কৌশল হল, রাহুল লক্ষ্য বেঁধে দেওয়ার পর সেই অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা, যাতে লোকসভা ভোটের আগে এ সবের জন্য তাঁকেই কৃতিত্ব দিয়ে প্রচারে নামতে পারে দল।
যদিও প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে ভোট ইস্তেহারের প্রতিশ্রুতি পালনে কংগ্রেস যতটা সাফল্য দেখাতে পেরেছিল, দ্বিতীয় ইনিংসে তা হয়নি। ইস্তেহারের প্রতিশ্রুতি মাফিক বহু সামাজিক প্রকল্প ও আইন এখনও দিনের আলো দেখেনি। এই অবস্থায় অন্তত খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নকে পাখির চোখ দেখছেন রাহুল। আবার ২০০৯-এর ইস্তেহার অনুযায়ী যা কিছু করা গেল না, বা করতে দেরি হল, তার যুক্তিও এখন থেকে সাজিয়ে রাখছে কংগ্রেস। দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য জনার্দন দ্বিবেদীর বক্তব্য, কেন্দ্রে জোট-বাধ্যবাধকতার জন্যই বহু কাজ করা যায়নি। তবে গত ৯ বছরে ইউপিএ সরকার যে সাফল্য দেখিয়েছে তা-ও প্রশংসাযোগ্য।
তৃণমূল সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর এই মুহূর্তে খাতায়-কলমে সরকার সংখ্যালঘু। ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতারাও ভোট এগিয়ে আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। সেই সম্ভাবনা দেখেই সনিয়া-রাহুল সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাই রামলীলা ময়দানে গত রবিবারের সভার পরেই কাল দিল্লির উপকন্ঠে হরিয়ানার সুরজকুণ্ডে সংবাদ বৈঠক ডেকেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সব পূর্ণমন্ত্রী ও স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী কালকের বৈঠকে যোগ দেবেন।
কিন্তু প্রশ্ন হল, সংবাদ বৈঠকে আর কী হবে? কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতে দলের রাজনৈতিক কৌশলও কালকের বৈঠকে নির্ধারণ করা হবে। সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে বিজেপি নিঃসন্দেহে ফের গোল পাকাবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতির প্রশ্নে বিজেপি-কে কীভাবে আক্রমণ করা হবে তা নিয়েও কাল সবিস্তার আলোচনা হবে। বিশেষত, বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এখন তা হাতিয়ার করতে চাইছে কংগ্রেস।
লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এর পর জানুয়ারিতে দলের চিন্তন বৈঠক ডাকতে চাইছেন সনিয়া। ওই বৈঠকে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী ও সব প্রদেশ কংগ্রেস নেতাকে ডাকা হবে। অতীতে পাঁচমারি বা শিমলা অধিবেশনে আলোচনার মাধ্যমে কংগ্রেস যে ভাবে লোকসভা ভোটের রাজনৈতিক লাইন চূড়ান্ত করেছে, প্রস্তাবিত চিন্তন বৈঠকের মধ্যে দিয়ে সে ভাবেই দিশা স্থির করতে চাইছেন সনিয়া-রাহুল। |
|
|
|
|
|