সিএজি বাছাইয়ে রাশ ছাড়তে নারাজ কেন্দ্র
তাঁর একের পর এক হামলায় মনমোহন সরকারের নাজেহাল অবস্থা। তাই তিনি বিনোদ রাইয়ের পরে সিএজি পদে কাকে বসানো হবে, তা নির্বাচনের ক্ষমতা কোনও মতেই হাতছাড়া করতে চাইছে না কেন্দ্র। দাবি উঠেছিল, প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে গঠিত একটি কমিটি সিএজি (কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল) পদের যোগ্য ব্যক্তিকে বাছাই করুক। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ সেই দাবি খারিজ করে দিলেন। এখন কেন্দ্রের সুপারিশের ভিত্তিতেই রাষ্ট্রপতি সিএজি নিয়োগ করেন। ফলে সরকারই কার্যত ঠিক করে, সরকারি হিসেবনিকেশ কে পরীক্ষা করবেন। মনমোহনের যুক্তি, আগের সরকারের আমলে এই রীতিই অনুসরণ করা হয়েছে।
টু-জি স্পেকট্রাম, কমনওয়েলথ গেমস থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক কয়লা খনি বণ্টন— দুর্নীতির একের পর এক রিপোর্টে ইউপিএ সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন সিএজি বিনোদ রাই। এ বার নতুন ঝড় উঠেছে সরকারের দুর্নীতি নিয়ে তাঁর নজিরবিহীন প্রকাশ্য মন্তব্যে। গত কাল গুড়গাঁওয়ে বিনোদ বলেন, “যে ভাবে নির্লজ্জের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা সত্যিই আতঙ্কের।” সেখানেই না থেমে লোকপাল, সিবিআই ও ভিজিল্যান্স কমিশনকে
সিএজি বিনোদ রাই
সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার দাবিও তুলেছেন বিনোদ। তাঁর যুক্তি, যদি আশা করা হয় যে এই সব সংস্থা স্বাধীন ভাবে কাজ করবে, তা হলে ঝুঁকি নিতে হবে। এদের সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার সাহস দেখাতে হবে। না হলে সকলে সিবিআই-কে ক্ষমতাসীন সরকারের পরিচারিকা বলবে বলে কটাক্ষ করেছেন বিনোদ।
এমনিতেই কংগ্রেস নেতৃত্বের চক্ষুশূল ছিলেন তিনি। গত কালের পর নতুন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শুরু করে কংগ্রেস নেতারা বিনোদ রাইয়ের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। দিগ্বিজয় সিংহ বলছেন, “সিএজি তো আমাদের জ্ঞান দিতে থাকেন। তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু উনি কেন নিজের অফিস থেকে রিপোর্ট ফাঁস হওয়া বন্ধ করেন না?” পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, বিনোদের অনেক আগেই রাহুল গাঁধী সর্বপ্রথম লোকপালকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি আবার বিনোদ রাইকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, তিনি নিজেও মনমোহন সরকারের উচ্চপদস্থ আমলা। বিজেপি অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই সিএজি-র পাশে দাঁড়িয়ে সরকারকে বিঁধেছে।
গত মে মাসে সিপিআই সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত সিএজি বাছাইয়ের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গড়ার দাবি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রস্তাব ছিল, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হোক, ঠিক যেমন মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেত্রীকে নিয়ে তৈরি কমিটি রয়েছে। লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজও এই দাবিকে সমর্থন করেন। কিন্তু দু’ক্ষেত্রেই সেই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন মনমোহন। তিন দিন আগে গুরুদাসকে লেখা চিঠিতে মনমোহন জানিয়েছেন, সিএজি বাছাইয়ের প্রক্রিয়া ‘কালোত্তীর্ণ’। চিঠি পেয়ে গুরুদাস বলেন, “মনে হচ্ছে সরকার এমন কাউকে ভবিষ্যতে সিএজি পদে নিয়োগ করবে, যিনি হয়তো সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলবেন।” তাঁর বক্তব্য, “এই ধরনের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরোধী দলের মত নিলে সরকারই কিছুটা নিরপেক্ষতা দেখাতে পারত। কিন্তু তাতে সরকার রাজি নয়।”
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছেন, সিএজি-র রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি। বিরোধী দলের কোনও সদস্যই সেই কমিটির মাথায় থাকেন। সে কথা মাথায় রেখে সিএজি নিয়োগের জন্য কোনও কমিটি তৈরির আশু প্রয়োজন নেই। একই ভাবে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রস্তাব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, এর জন্য সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা প্রয়োজন। নির্বাচনী সংস্কারের অঙ্গ হিসেবে প্রয়োজন হলে এই বিষয়টি ভাবা যেতে পারে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.