নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সরকারের টানাপোড়েন চলছেই। শুরুতে রাজ্য চেয়েছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচন জানুয়ারি মাসে হোক। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাতে আপত্তি জানায়। মহাকরণের খবর, এখন নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ভোট করতে চাইছে। কিন্তু ওই সময়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলবে। মুর্শিদাবাদ জেলার ভোটার তালিকা তৈরির কাজও ওই সময়ের মধ্যে শেষ হবে না। সুতরাং ফেব্রুয়ারিতে কী করে ভোট হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী মে মাসে। কিন্তু গত জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ইচ্ছা’ প্রকাশ করে বলেন, পুজোর পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক। মুখ্যমন্ত্রীর কথা রাখতে এর পর আদাজল খেয়ে মাঠে নামে পঞ্চায়েত দফতর। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তারা চিঠি দিয়ে জানুয়ারির শেষে ভোট করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু কমিশন আপত্তি তুলে জানায়, ওই সময়ের আগে এলাকা পুনর্বিন্যাস-সহ বিভিন্ন কাজ শেষ হবে না। এর সঙ্গে নির্বাচন কমিশন জানায়, নতুন ভোটার তালিকার ভিত্তিতেই নির্বাচন করতে হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৫ জানুয়ারি।
এই টানাপোড়েনের মধ্যেই সম্প্রতি কমিশনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ফের বৈঠক হয়। জানানো হয়, আসন সংরক্ষণ ও এলাকা পুনর্বিন্যাসের কাজ প্রায় শেষের পথে। কমিশন জানায়, প্রতিটি বুথে সশস্ত্র পুলিশ দিয়ে ভোট করা হবে। এ জন্য ৫০০ কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনী লাগবে। কমিশন এ-ও জানায়, দু’দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে ১৭ এবং ২০ ফেব্রুয়ারি।
কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠেছে। মহাকরণের এক কর্তা জানান, জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের কারণে মুর্শিদাবাদ জেলায় ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ কয়েক দিন বন্ধ রাখতে হয়। সেই কারণে গোটা রাজ্যে নতুন ভোটার তালিকা ৫ জানুয়ারি প্রকাশিত হলেও মুর্শিদাবাদ জেলার ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ জানুয়ারি। তা ছাড়া ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের প্রায় শেষ পর্যন্ত চলবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। ফলে মুর্শিদাবাদ জেলার ভোট মে মাসের আগে করা যাবে না। আবার, ওই জেলার ভোট শেষ না হলে বাকি রাজ্যের গণনাই শুরু করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে প্রায় তিন মাস ধরে ভোটযন্ত্র পাহারা দেওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে, নিরাপত্তার কারণে যা কার্যত অসম্ভব।
এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর ‘ইচ্ছা’ কার্যত থমকে দাঁড়িয়েছে। মহাকরণের ওই কর্তার কথায়, “পরিস্থিতি যা, তাতে মুর্শিদাবাদের কারণে গোটা রাজ্যের ভোটই এপ্রিলের আগে করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। নিয়ম-মতো তার দেড় মাস পরে নির্বাচন শুরু করা যাবে। তবে কোনওটাই এখনও চূড়ান্ত নয়।”
|