ছোট মাঠে রক্ষণে পায়ের জঙ্গল তৈরি করো আর বড় ক্লাবকে আটকে দাও। ময়দানি ফুটবলের চিরাচরিত এই ঘটনারই সাক্ষী থাকলেন মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গল মাঠের হাজার দুয়েক দর্শক।
নিজেদের ক্লাবের অমসৃণ মাঠে খেলা নিয়ে ট্রেভর মর্গ্যানের যে আশঙ্কা ছিল এ দিন কলকাতা লিগে ৯৫ মিনিটের ম্যাচের পর সেটাই সত্যি হয়ে দেখা দিল। ব্রিটিশ কোচ বললেন, “মাঠ আমাদের ততটা সাহায্য করেনি। তবে বিপক্ষ সুবিধা পেয়েছে।”
কিন্তু বক্সের ভিতর থেকে এত গোলের সুযোগ নষ্ট করলে কি ‘বাঁকা মাঠ’কে খুব দোষ দেওয়া যায়? ফাঁকা গোল ‘মিস’ করার দলে আছেন সৈকত-বলজিৎ-লেনরা। মর্গ্যানের একটা মন্তব্যে ম্যাচের অনেকটাই বর্ণনা করা যায়, “প্রথমার্ধে জঘন্য। দ্বিতীয়ার্ধে দলের খেলায় আমি খুশি।” মর্গ্যান যা বলেননি তা হল, জর্জের ডিফেন্সে নাইজেরীয় স্টপার বাবাতুন্ডের অসাধারণ পারফরম্যান্স আটকে দিল রবিনদের। দ্বিতীয়ার্ধে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দু’বার ইস্টবেঙ্গলকে নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত করেন তিনি। একবার লালরিন্ডিকার শট হেড দিয়ে বার করেন। পরের মুহূর্তে সামলান বলজিতের শট। এ ছাড়াও কখনও রবিন, কখনও বলজিতের সামনে ‘পাঁচিল’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। |
বাবাতুন্ডের কাছে রবিনদের আটকে যাওয়ার এই দৃশ্য
বারবার দেখা গেল মঙ্গলবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
|
প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের রিজার্ভ বেঞ্চ শুরু করেছিল গা-ছাড়া ভাবে। প্রয়াত কৃশানু দে-র অমর জুটি বিকাশ পাঁজি এসেছিলেন খেলা দেখতে। ম্যাচ শেষে বলে গেলেন, “যে ধরনের চাপ ইস্টবেঙ্গল শেষ দিকে দিল সেটা প্রথম থেকেই দিলে ভাল হত। শুরুতে বড্ড ক্যাজুয়াল খেলল।” লাল-হলুদে এ দিন কোনও বিদেশি ছিলেন না। মেহতাব-সঞ্জুও নন। তবে ছিলেন জাতীয় দলের লালরিন্ডিকা। মরসুমে দারুণ শুরু করা কেভিন লোবো। যাঁরা মাঝমাঠের দখল নিতে ব্যর্থ। কোনও ডিফেন্স চেরা পাস, কোনও ভাল মুভ ৬১ মিনিটে মর্গ্যান একসঙ্গে তিনটে বদল করার আগে দেখা যায়নি। তিনের মধ্যে সুশান্ত ম্যাথু শেষ খেলেছিলেন গত মার্চে আইএফএ শিল্ড ফাইনালে। অ্যালভিটোর পা থেকে বেরলো কয়েকটা নজরকাড়া থ্রু। সুযোগ পেলেন লেনও। কিন্তু জমা করলেন গোলকিপারের হাতে।
ততক্ষণে সম্ভবত লাল-হলুদ ফুটবলারদের মনে ঢুকে পড়েছে পয়েন্ট খোয়ানোর ভয়। মেজাজ হারিয়ে হলুদ কার্ড দেখলেন পাঁচ জন। জর্জের কোন ফুটবলারের খেলা ভাল লেগেছে? মর্গ্যানকে জিজ্ঞাসা করায় বললেন, “অন্য দলের খেলা সে ভাবে দেখি না।” কিন্তু ৯৫ মিনিটে নিজের দলের কোনও ফুটবলারকেও কি বাছতে পারলেন মর্গ্যান?
|
ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, সৈকত, গুরবিন্দর, রাজু, রবার্ট, ভাসুম, লালরিন্ডিকা, লোবো (সুশান্ত), সুবোধ (অ্যালভিটো), বলজিৎ, রবিন (লেন)।
|
বুধবারে
কলকাতা লিগ
প্রয়াগ ইউনাইটেড : কালীঘাট এমএস (যুবভারতী, ২-০০)। |