‘জোর কা ঝটকা’ কি ধীরেই লাগল মোহনবাগানের গায়ে? না হলে স্পোর্টিং ক্লুবকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট পকেটে পোরার পর সোমবার সকালের অনুশীলনে যে হাসিখুশি পরিবেশ ছিল, চব্বিশ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই তা হঠাৎ বদলে যাবে কেন? তিন পয়েন্ট ঝুলিতে পুরে জয়ের জন্য আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার বদলে টোলগে না থাকায় আশঙ্কার চোরাস্রোত ফুটবলার থেকে কোচ, সকলের মধ্যেই।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের ঘর থেকে বের করে আনা দু’কোটি টাকার অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার টোলগে ওজবে হাঁটুর চোটের চিকিৎসা করাতে নিঃশব্দে শনিবার রাতেই অস্ট্রেলিয়া ফিরে গিয়েছেন। আনন্দবাজারে মঙ্গলবার এ খবর প্রকাশের সকালে একদম চুপচাপ গঙ্গাপারের তাঁবু। টোলগে কলকাতা ছাড়ার পাক্কা ৭২ ঘণ্টা পরেও তাই গুমোট পরিবেশ নবি-জুয়েলদের অনুশীলনে। এরই মাঝে অনুশীলনে গরহাজির ওডাফা। যা নিয়ে নতুন জল্পনা শুরু হতে যাচ্ছিল। কিন্তু পরে জানা গিয়েছে, বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর ছেলে ভর্তি থাকায় অনুশীলনে আসতে পারেননি স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে দলকে জেতানোর কারিগর। বুধবার সকালে আসতে পারেন অনুশীলনে।
টোলগে নেই। ওডাফা গরহাজির। অনুশীলনে তাই মানসিক ভাবে ছত্রভঙ্গ পরিবেশ। ‘রীতিবিরুদ্ধ’ ভাবে দরজা বন্ধ তাঁবুর। পরিস্থিতি এতটাই কাঁপুনির যে, ডেঙ্গি প্রতিরোধে স্প্রে করতে আসা পুরসভার কর্মীদেরও তার জেরে আটকে থাকতে হয়েছে দীর্ঘক্ষণ। ডামাডোলের এই বাজারে বিকেলেও তাঁবুতে হাজির সমর্থকদের সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় বেশি। মুখে চিন্তার ছাপ।
সহকারী কোচ হিসাবে যিনি আপাতত পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে টিম চালাচ্ছেন, সেই মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে ফুটবলাররা টোলগের হঠাৎ দেশে ফিরে যাওয়ার প্রসঙ্গ উঠলেই এড়িয়ে যেতে পারলে বাঁচেন। তবে এরই মাঝে মৃদুল বলছেন, “টোলগের মতো নিয়মিত ফুটবলারকে না পাওয়াটা সত্যিই বড় ক্ষতি।”
নবিও বলছেন, “টোলগে গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। ও না থাকায় সমস্যা তো হবেই। তবে যে নেই তার কথা ভেবে তো কোনও লাভ হবে না। যারা রয়েছে তাদের নিয়েই এগোতে হবে।” এড়িয়ে যাওয়ার ফাঁকে মোহনবাগান মাঝমাঠে নবির সতীর্থ জুয়েল রাজা বললেন, “কথা না বলে এখন আমাদের ওএনজিসি ম্যাচ জিততে হবে।”
টোলগে না থাকায় দলের এ রকম সর্বনাশের পরিস্থিতিতে যার সামনে পৌষমাসে পাতে পিঠে-পুলি পড়ার মতো প্রথম দলে সুযোগের দরজা খুলে গিয়েছে, সেই নাইজিরীয় স্ট্রাইকার স্ট্যানলি কিন্তু কম কথার বাজারেও জোশের সুরেই বললেন, “টোলগে অপরিহার্য। কিন্তু ও না থাকায় গত দুই ম্যাচ খেলার সুবাদে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। মাঝমাঠ কিংবা স্ট্রাইকার, যেখানেই খোলানো হোক না কেন, দলের কাজে লাগার জন্য তৈরি রয়েছি।” সবুজ-মেরুন শিবিরে টোলগে নিয়ে হা-হুতাশের বাজারে স্ট্যানলির মন্তব্যটাই এই মুহূর্তে একমাত্র আশাবাদ। |