|
|
|
|
যুবই ভরসা, আলোচনা সিপিএমে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে বেশি সংখ্যক ছাত্র-যুবকে যুক্ত করতে চাইছে সিপিএম। পশ্চিম মেদিনীপুরে দলের একাংশ মনে করছে, ‘নতুন মুখ’ সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচার হলে তা মানুষের মধ্যে ভাল প্রভাব ফেলবে। এ নিয়ে দলের অন্দরে শুরু হয়েছে আলোচনা। সে কথা মেনে জেলা সিপিএমের এক নেতা বলেন, “এটা ঠিক, আমাদের দলের একাংশ নেতা-কর্মীর আচার-আচরণ জনগণ ভাল ভাবে নেননি। আবার এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁরা শারীরিক ভাবে অসুস্থ, তবু পদ আঁকড়ে রয়েছেন। এ বার ‘নতুন মুখ’ তুলে আনার সময় এসেছে।” শুধু তাই নয়, ছাত্র-যুব সংগঠনের একাংশ কর্মীকে এ বার নির্বাচনে প্রার্থী করা হবে বলেও দলীয় সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে কয়েকটি নাম নিয়ে দলীয় স্তরে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রস্তুতি শুরু হয়েছে সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠনেও। আগামী ১০ নভেম্বর ডিওয়াইএফের আলোচনা সভা রয়েছে মেদিনীপুরে। সভায় উপস্থিত থাকবেন যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক জামির মোল্লা। সংগঠনের জেলা সম্পাদক দিলীপ সাউ বলেন, “সংগঠনের কয়েকটি বিষয় নিয়েই সভায় আলোচনা হবে।” দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, রাজনৈতিক প্রস্তাবের পাশাপাশি মূলত যুব সংগঠনের রাজ্য সম্মেলন ও সর্বভারতীয় সম্মেলনের সাংগঠনিক রিপোর্ট নিয়ে এই সভায় আলোচনা হওয়ার কথা। উঠতে পারে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গও। আরও বেশি সংখ্যক যুব-কর্মীকে যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে যুক্ত করার প্রস্তুতি শুরু যে হয়েছে, তা মানছেন সংগঠনের জেলা সম্পাদকও। তবে তাঁর কথায়, “যুব-কর্মীরা নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকেই। এ বারও থাকবে।” প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ছাত্র-সংগঠনেও। ১১ নভেম্বর এসএফআইয়ের রাজনৈতিক কর্মশালা রয়েছে কলকাতায়। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে যাবেন ২০ জন। ইতিমধ্যে তাঁদের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। যাঁরা যাঁরা নিজেদের এলাকায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে যুক্ত হতে পারবে, এ ক্ষেত্রে তাঁদেরই নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পন্ডা’র বক্তব্য, “গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থনে আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা জেলা জুড়ে প্রচার চালাবে।” এই ধরনের কর্মশালা কি জেলাতেও হতে পারে? জেলা সম্পাদক বলেন, “এ নিয়ে এখনই কিছু বলছি না।”
পশ্চিম মেদিনীপুর ছিল সিপিএমের ‘লালদুর্গ’। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সেই ‘দুর্গ’ অটুট ছিল। জেলা পরিষদের দখল নিয়েছিল বামফ্রন্ট। এখনও জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত তাদের দখলে। তবে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘লাল দুর্গে’ ফাটল ধরে। পালাবদলের পরে জেলা জুড়েই প্রভাব বেড়েছে তৃণমূলের। এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ক্ষমতা ধরে রাখতে তৎপর সিপিএম, তেমনই পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিততে মরিয়া তৃণমূল। সে ক্ষেত্রে সিপিএম জোর দিচ্ছে ‘নতুন মুখে’। যে কারণে সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠনে এখন ‘নতুন’দের ভিড়। এসএফআইয়ের নতুন জেলা কমিটিতে ৭৩ জনের মধ্যে ৫৬ জনই নতুন। সম্পাদকমণ্ডলীর ২০ জনের মধ্যে নতুন ১৫ জন। একই ছবি যুব সংগঠনে। ডিওয়াইএফের নতুন জেলা কমিটিতে যে ৮৯ জন রয়েছেন, তাঁদের ৫৭ জনই নতুন। সম্পাদকমণ্ডলীর ১৮ জনের মধ্যে নতুন ১৪ জন। সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্য বলেন, “যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের প্রচারে সামনের সারিতে থেকেছেন, তাঁদের একাংশের বিরুদ্ধেই তো নানা অভিযোগ রয়েছে। জনগণের মন পেতে তাই এঁদের সরিয়ে নতুনদের জায়গা দেওয়াটা জরুরি।” |
|
|
|
|
|