সিঙ্গুরে লোহার তারের জাল তৈরির একটি কারখানা পাকাপাকি ভাবে বন্ধ (ক্লোজার) করার নোটিস দিলেন কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার থেকে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তে অসুবিধায় পড়েছেন কারখানার প্রায় ৭০ জন শ্রমিক। সিদ্ধান্ত বদলের দাবিতে তাঁরা মঙ্গলবার কারখানার গেটের সামনে অবস্থানে বসেন।
চন্দননগরের মহকুমাশাসক ডক্টর বিশ্বনাথ বলেন, “বিষয়টি জেনেছি। ডেপুটি লেবার কমিশনার আগামীকাল আমাকে রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থা নেব।”
সিঙ্গুরের ঘনশ্যামপুর-বারুইপাড়া পঞ্চায়েতের আজবনগর গ্রামে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে রতন ওয়্যারনেটিং ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই কারখানাটি তৈরি হয় ২০০১ সালে। স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে জনা ৭০ শ্রমিক সেখানে কাজ করতেন। কাজ হত দু’টি শিফ্টে। সোমবার সকালের শিফ্টে কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকেরা কারখানার গেটে ‘ক্লোজার’-এর নোটিস দেখতে পান। নোটিসে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়েছে। কারখানা চালাতে গিয়ে তাঁরা অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েছেন। তা ছাড়াও, বিদেশি সামগ্রী বাজারে ছেয়ে যাওয়ায় তাদের তৈরি জিনিসের চাহিদা কমে গিয়েছে। এই সমস্ত কারণে কর্তৃপক্ষের পক্ষে আর কারখানা চালানো সম্ভব নয়। একাধিকবার কারখানায় চুরি এবং ডাকাতির কারণেও তাঁরা অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। |
শ্রমিকদের দাবি, কোনও কিছু না জানিয়ে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিকপক্ষ। এ দিন সকাল থেকেই অবস্থানে বসেন সদ্য কাজ হারানো শ্রমিকেরা। পিন্টু রায় নামে এক কর্মী বলেন, “কারখানায় তো কোনও সমস্যাই ছিল না। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে আমরা কাজ করতাম। কোনও সমস্যা থাকলে আলোচনা করে তার মোকাবিলা তো করাই যায়। কোনও দোষ না করে আমরা কাজ হারাতে চাই না।” গোটা বিষয়টি সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে জানিয়েছেন শ্রমিকেরা। বেচারামবাবু বলেন, “কোনও কারখানা বন্ধ হোক, এটা কাম্য নয়। আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।”
আজ, বুধবার কারখানা থেকে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা নিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শ্রমিকদের অনেকেই জানালেন, তাঁরা ওই টাকা নেবেন না। |