প্রতিবাদে পিছু হঠল পুরসভা। নাগরিক কমিটির আপত্তির পর সোমবারই মহকুমাশাসক ও পুরপ্রধানকে স্মারকলিপি দিয়েছিল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা কমিটি। এরপরে মঙ্গলবারই তৃণমূল পরিচালিত বোলপুর পুরসভা রবীন্দ্র স্মৃতিসৌধ থেকে খুলে নিল বিজ্ঞাপন। বোলপুরের মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতি বলেন, “ঐতিহ্যপূর্ণ সৌধটির সৌন্দর্য যাতে কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তার জন্য পুরসভাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম।” মহকুমাশাসকের কাছ থেকে ওই নির্দেশ পেয়েই কার্যত পিছু হটে পুরসভা। খুলে নেওয়া হয় স্মৃতিসৌধ ঘিরে থাকা বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন। যদিও পুরপ্রধান সুশান্ত ভকতের দাবি, “রবীন্দ্র স্মৃতিসৌধ এলাকা দৃষ্টিনন্দন করতেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সৌন্দর্যায়ন ও উন্নয়নের ওই পরিকল্পনায় একাংশ মানুষ বাধা দিতে চান। ওই এলাকায় তাঁরা আলো লাগাতেও তাঁদের আপত্তি। তাঁরাই আসলে পরিকল্পিত ভাবে কুৎসা রটাচ্ছেন।” |
সৌন্দর্যায়নের নামে বোলপুরের ওই ঐতিহ্যবাহী সৌধকে বিজ্ঞাপনে মুড়ে দেওয়ায় ক’দিন আগেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল এলাকায়। এ বিষয়ে বোলপুরের নাগরিক কমিটি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন পুরকর্তৃপক্ষ এবং এলাকার জনপ্রতিনিধি তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের। অনেকেই বলেছিলেন, সৌন্দর্যায়ন বা সংরক্ষণ ভাল জিনিস। কিন্তু বিজ্ঞাপন দিয়ে সৌধ ঢেকে তা করা ঠিক নয়। প্রসঙ্গত, ১৯৬১ সালে তৎকালীন শতবর্ষ উদযাপন কমিটির নিশাপতি মাঝির উদ্যোগে বোলপুর শহরে ঢোকার মুখে চৌরাস্তায় ওই রবীন্দ্র স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়েছিল। প্রখ্যাত শিল্পী সুরেন করের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় তৈরি ওই সৌধ ক্রমে রবীন্দ্রানুরাগীদের কাছে একটি দর্শনীয় বিষয় হয়ে উঠেছিল। এর আগেও আশির দশকের গোড়ার দিকে যান চলাচলে অসুবিধার অজুহাতে ওই সৌধটির কিছু অংশ ভাঙা হয়েছিল। তখন প্রতিবাদে গলা মিলিয়েছিলেন রবিজীবনীকার প্রভাত মুখোপাধ্যায়, শান্তিদেব ঘোষ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তি। |