জখম দুই সঙ্গীকে সাহসিকতার পুরস্কার
মালালার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন আততায়ীর বোন
ভাইয়ের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে ব্রিটেনের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মালালা ইউসুফজাই। তাই মালালার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন লজ্জিত রেহানা হালিম। ২৩ বছরের আতাউল্লাহ খান-সহ মোট তিন জন বন্দুকবাজকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পাক পুলিশ। ভাইয়ের অপরাধকে আড়াল করার কোনও চেষ্টাই করলেন না রেহানা। পরিবর্তে বললেন, “আমি নিশ্চিত মালালার উপর গুলি আতাউল্লাই চালিয়েছে। নয়তো সে বাড়ি ফিরত। এ ভাবে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াত না। ওকে আর নিজের ভাই হিসেবে পরিচয় দিতে চাই না।
গোটা পরিবারের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে।”
বেশ আকুল ভাবেই বললেন রেহানা, “দয়া করে এক বার মালালাকে বলবেন যে ভাইয়ের কাজের জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।” কিছু ক্ষণ চুপ করে থাকার পর যেন নিজের মনেই বলে উঠলেন, “আচ্ছা, আমাকে কিংবা আমার পরিবারের লোকেদেরও কি মালালা নিজের শত্রু বলে মনে করবে? ও তো আমার ছোট বোনের মতোই। প্রার্থনা করি, যেন তাড়াতাড়ি সেরে ওঠে ও।”
মালালাকে যে দিন গুলি করে তিন বন্দুকবাজ, তার পর দিনই রেহানাদের বাড়িতে হানা দেয় পাক পুলিশ। রেহানা ও তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। অন্তঃসত্ত্বা রেহানা সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁদের। এর কিছু দিনের মধ্যেই এক শিশুকন্যার জন্ম দেন রেহানা। পাঁচ দিন পর আরও এক বার তাঁদের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। ফের ধরে নিয়ে যায় রেহানার স্বামীকে। এখনও পুলিশের হেফাজতেই আছেন তাঁর বৃদ্ধা মা, কাকা এবং অন্য এক ভাই, জানালেন রেহানা।
মাত্র ১৫ বছর বয়সেই তালিবানের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করার দুঃসাহস দেখিয়েছিল মালালা। মেয়েদের স্কুলে না যাওয়ার তালিবানি নির্দেশ উপেক্ষা করেই সে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল। তাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্কুলের পথ বেছে নিয়েছিল আরও অনেকে। এই বেয়াদপি সহ্য করতে পারেনি তালিবান। তাই বাসে উঠে গুলি করে মারার চেষ্টা করা হয় মালালাকে। এই ঘটনায় জখম হয় তার আরও দুই বন্ধু। মাথায় গুলি নিয়ে রক্তাক্ত মালালার ব্রিটেনে গিয়ে চিকিৎসা এবং ক্রমশ সেরে ওঠার কথা তো এখন ইতিহাস।
পরে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান স্বীকার করে নেয় মালালার উপর গুলি চালিয়েছে তারাই। সুস্থ হয়ে দেশে ফিরলে ফের মারার চেষ্টা করা হবে তাকে, এই হুমকিও দিয়েছে তারা।
মালালার যে দুই বন্ধু ওই দিনের হামলায় আহত হয়েছিল তাদেরও সাহসিকতার জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে বলে আজ ঘোষণা করেছে পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রেহমান মালিক। পাকিস্তানে এই বিশেষ পুরস্কারটির নাম ‘সিতারা-এ-জুররত’। সাধারণ নাগরিকদের নয়, সেনাকর্মীদেরই এই পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছে খোদ পাক-প্রশাসনই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.