দু’বছর বন্ধ গ্রন্থাগার, ক্ষোভ বারিকুলে
বরের কাগজ কিংবা পত্রিকা, গল্পের বই কেনার সামর্থ নেই অনেকেরই। ভরসা ছিল সরকারি গ্রন্থাগার। তাও বন্ধ দু’বছর।
এই অবস্থা বারিকুল শহিদ গ্রন্থাগারের। ফলে জঙ্গলমহলের এই প্রত্যন্ত এলাকার পুস্তক প্রেমীরা সমস্যায় পড়েছেন। প্রশাসন কেন ওই গ্রন্থাগার খোলার ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে অনেকের মনে। আর বাসিন্দাদের সেই ক্ষোভ আঁচ করে সম্প্রতি জেলা গ্রন্থাগার দফতরের আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করে যান।
জেলা গ্রন্থাগার সূত্রের খবর, বারিকুল থানা এলাকার মধ্যে বারিকুল সদর, ঝিলিমিলি এবং মৌলাশোলে তিনটি সরকারি গ্রন্থাগার রয়েছে। বারিকুল থেকে ওই দু’টি গ্রন্থাগারের দূরত্ব প্রায় ১৫-১৮ কিলোমিটার। বারিকুল, ছেন্দাপাথর, সিঙ্গুরডি, বাগডুবি, খেজুরখেন্না, বুচিবুড়ি-সহ আশেপাশের ৩০টি গ্রামের বাসিন্দাদের ভরসা একটি মাত্র সরকারি পাঠাগার ‘শহীদ পাঠাগার এএসএসকে গাঁওতা’। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই গ্রন্থাগারটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। গ্রন্থাগার নির্মাণের জন্য বারিকুলের বাসিন্দা নবীনচন্দ্র হাঁসদা পাঁচ কাঠা জমি দান করেছিলেন। সেই জমিতেই গড়ে ওঠে গ্রন্থাগারটি। ২০০০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রন্থাগারটির উদ্বোধন করেন রাইপুরের বিধায়ক উপেন কিস্কু। দীর্ঘদিন ধরে গ্রন্থাগারটি চালু থাকলেও ২০১০ সালের অক্টোবর মাস থেকে তা বন্ধ।
ছবি: দেবব্রত দাস।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রন্থাগারিক অনিয়মিত আসতেন। সব দিন গ্রন্থাগার খোলা থাকত না। দূর থেকে গ্রন্থাগারের সদস্যেরা এসে ফিরে যেতেন। এ ছাড়া জমিদাতার ছেলেকে চাকরি দেওয়ার কথা থাকলেও তাঁকে কাজ দেওয়া হয়নি বলে কিছু বাসিন্দার ক্ষোভ ছিল। এর মধ্যেই কারা এসে গ্রন্থাগারের বন্ধ দরজায় নতুন করে চালা ঝুলিয়ে দিয়ে চলে যায়। তারপর আর কেউ তালা খুলে গ্রন্থাগার চালু করার উদ্যোগ নেয়নি। গ্রামবাসী লক্ষীকান্ত হাঁসদা, বিশ্বজিৎ হেমব্রম, দুর্গাচরণ হাঁসদারা বলেন, “আগে এক গ্রন্থাগারিক নিয়মিত এখানে আসতেন। তিনি অন্যত্র চলে যাওয়ার পর যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তিনি অনিয়মিত আসতেন। তাই ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। এরপর কারা গ্রন্থাগারের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে যায়। সেই থেকে গ্রন্থাগারের দরজা বন্ধই রয়েছে।” বারিকুলের পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের ললিতমোহন কিস্কু বলেন, “অনেকদিন ধরে গ্রন্থাগারটি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। তাতে সবারই ক্ষতি হচ্ছে। আমরা গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে গ্রন্থাগারটি খোলানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি।” গ্রন্থাগার পরিচালন সমিতির সম্পাদক দশরথ হেমব্রমের দাবি, ‘‘গ্রন্থাগারটি খোলার জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। এখন হাল ছেড়ে দিয়েছি।”
জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক তপনকুমার বর্মন বলেন, “এক গ্রন্থাগারিক রানিবাঁধ থেকে বারিকুলের ওই গ্রন্থাগারে নিয়মিত যেতেন। কিন্তু গ্রন্থাগারের দরজায় স্থানীয় কিছু বাসিন্দা তালা ঝুলিয়ে দেয়। তারপর নানা সমস্যায় আর তালা খোলা হয়নি।” তাঁর আশ্বাস, গ্রন্থাগারটি পুনরায় চালু করার চেষ্টা হচ্ছে। সম্প্রতি তিনি ও রাজ্য গ্রন্থাগার পর্ষদের সদস্য প্রণব হাজরা এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেন। কেন এত দিন এই উদ্যোগ নেওয়া হয়নি? তপনবাবুর কাছে এর জবাব মেলেনি। তবে প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, কয়েক বছর আগের অশান্ত পরিবেশের জন্য প্রশাসন ওই ঝুঁকি নিতে চায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.