|
|
|
|
এক বছর পার, অসমে স্মরণ ভূপেন হাজরিকাকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
কোথাও সাতটি ভাষায় ‘মানুষ মানুষের জন্য’ গেয়ে হেঁটে চলেছে মিছিল। কোথাও দশ হাজার মানুষের কণ্ঠে বেঁচে উঠছেন ভূপেন হাজরিকা। সকালে সমাধিস্থল ও নিজের বাড়িতে তর্পণের মাধ্যমে আচারের শুরু। এরপর, দিনভর রাজ্য জুড়ে হাজারো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভূপেন হাজরিকার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠান ছড়িয়ে পড়ল রাজ্য জুড়ে।
যোরহাটের মানুষ হাতে হাত মিলিয়ে মিছিল বের করেন। সে মিছিলে স্লোগান নয়। ছিল কেবল গান। ‘মানুহে মানুহর বাবে, যদি হে অকনো নে ভাবে’ শুধু অসমীয় ভাষায় নয়, সাতটি ভাষায় গাওয়া হল এই গান। অসম সংস্কৃতি মহাসভার উদ্যোগে এই শোভাযাত্রায়, সব জাতি গোষ্ঠীর মানুষ নিজ-নিজ সংস্কৃতির পোশাকে যোগ দেন। আজকের দিনে গাইবার জন্য, অসমীয় ভাষার পাশাপাশি দেউড়ি, বাংলা, নেপালি, হিন্দি, চা-জনগোষ্ঠী এবং মিসিং ভাষায় ‘মানুষ মানুষের জন্য’ গানটি অনুবাদ করা হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, সাধারণ নাগরিক, শহরের গানের দল-সহ সকলে কোর্ট ফিল্ড থেকে গান গাইতে গাইতে প্রভাত ফেরী শুরু করেন। অন্য দিকে, গোলাঘাট পুরসভার পাশে জ্যোতিপ্রসাদ অগ্রবাল, বিষ্ণু রাভা ও ভূপেন হাজরিকার প্রমাণ আকারের মূর্তির আবারণ উন্মোচন করেন পূর্তমন্ত্রী অজন্তা নেওগ। হাজার দশেক
মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভূপেনের গান গেয়ে ওঠেন।
মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আজ দিল্লি থেকে ফিরে সোজা যান ভূপেনবাবুর সমাধিস্থলে। সেখানে শ্রদ্ধা জানিয়ে সর্বধর্ম প্রার্থনাসভায় অংশ নেন তিনি। ভূপেনবাবুর নিজরাপারের বাড়ি ও লতাশিলে ভূপেন স্মরণ অনুষ্ঠানেও গগৈ যোগ দেন। নিজরাপারে ছিলেন ভূপেনসঙ্গীনী, কল্পনা লাজমি। লতাশিলের অনুষ্ঠানে ভাগ নেন স্ত্রী প্রিয়ম্বদা পটেল, ছেলে তেজ হাজরিকা, সংস্কৃতিমন্ত্রী প্রণতি ফুকন।
এ দিকে, ভুপেন হাজরিকার রচনা ও সৃষ্টিকে সুরক্ষিত ও সহজ লভ্য করতে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগ একটি ডিজিট্যাল আর্কাইভ তৈরি করেছে। সেখানে ভূপেনবাবুর গান, কবিতা মিলবে। লেখাগুলি থাকছে ‘ইউনিকোড’-এ। আর্কাইভে থাকছে ১৭৩টি অসমিয়া গান ও গানের কথা। বাংলা, ইংরাজি, কার্বি, মণিপুরি ও নাগা ভাষার ১৫২টি গান ও ৩৫৬টি লেখা। বিশ্ববিদ্যালয় ভূপেনবাবুর চলচ্চিত্র ও ভিডিওগুলিও ডিজিট্যাল আর্কাইভে সঞ্চয় করার কথা ভাবছে। এর মধ্যেই ঘটেছে ছন্দপতনও। ভূপেন হাজরিকার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কলেজের প্রেক্ষাগৃহে ভূপেনের গান গাইছিলেন বঙাইগাঁও জেলার বীরঝোরা কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান ঘনকান্ত মেধি (৪৭)। আচমকাই মঞ্চে বসে পড়েন তিনি। উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করেও ফের পড়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। |
|
|
|
|
|